হৃত মর্যাদা ফেরত! : কাশ্মিরের নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক নরেন্দ্র মোদির

আগের সংবাদ

বাদলা দিন আসছে!

পরের সংবাদ

মুখোমুখি পৌর মেয়র : রাজবাড়ী > সাক্ষাৎকার : মেয়র আলমগীর শেখ তিতু : ডিজিটাল ও মাদকমুক্ত পৌরসভা গড়তে চাই

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রথম শ্রেণির রাজবাড়ী পৌরসভার বর্তমান মেয়র আলমগীর শেখ তিতু। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারকেল প্রতীক নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। এর আগে তিনি ৪নং ওয়ার্ডে কমিশনার ছিলেন। কমিশনার থেকে মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কমিশনার হিসেবে আলমগীর শেখ তিতুর অনেক সামাজিক কাজ পৌরবাসীর নজর কাড়ে। এর মধ্যে তিনি পৌরসভার প্রতি বাড়িতে দুটি করে ফলের গাছ রোপণ করে দিয়েছিলেন। লকডাউনের সময় তিনি পৌরসভার দরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা করেছেন যা ছিল গোপনে। তার প্রতিদান পৌরবাসী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দিয়েছেন। পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের অভিযোগ, পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও নাগরিক সেবার মান একবারেই নি¤œ। পৌরসভায় রয়েছে নানা ধরনের সমস্যা।
মেয়র আলমগীর শেখ তিতু বলেন, পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগ আমি কাজে লাগাব। আমি সব মানুষের মেয়র। সবার জন্য কাজ করেতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌরসভার কোনো নাগরিক যেন সেবা নিতে এসে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সব সময় নজর রাখা হবে। মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছেন। সেই বাংলাদেশে পৌরসভার সেবা পেতে যদি ভোগান্তি পোহাতে হয় সেটি আমার জন্য কষ্টদায়ক। আমি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতাম। বিএনপির শাসনামলে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আমার আদর্শ আর জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার শক্তি। তাই রাজবাড়ী পৌরসভায় কোনো দুর্নীতি হবে না। অতীতের মতো পৌরসভায় কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। পৌরসভা হবে সব পৌরবাসীর।
মেয়র বলেন, তরুণ প্রজন্ম যেন মাদক থেকে দূরে থাকে সেজন্য পৌর এলাকায় নানা ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এ কাজে সবাই সহযোগিতা করলেই মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জয়ী হবো। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র জানান, পৌরসভা এলাকায় শিশুদের বিনোদনের জন্য ভালো কোনো ব্যবস্থা নেই। ছোট্ট একটি শিশুপার্ক আছে। জেলা প্রশাসক উদ্যোগ নিয়ে সেটির কিছুটা সংস্কার করেছেন। শিশুদের বিনোদনের জন্য যেতে হয় পাশের জেলা ফরিদপুরে। তাই আশা আছে রাজবাড়ী পৌর এলাকায় আধুনিক মানের একটা শিশুপার্ক করা হবে। পৌর এলাকার শিশুরা যেন আনন্দের মাঝে বেড়ে উঠতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।
মেয়র জানান, যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি তখন পৌরসভার ১৩ কোটি টাকা ঋণের বোঝা। এই ১৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আমাকে চলতে হচ্ছে।
মেয়র জানান, রাজবাড়ী পৌরসভার সবথেকে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। একটু বৃষ্টি হলেই কাঁচাবাজার, চালবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। সেই পানি বের হওয়ার পথ নেই। সব ড্রেনই ভরাট হয়ে গেছে। পানি বের হওয়ার মুখও বন্ধ। আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করব। পৌরসভার জলাবদ্ধতা যে করেই হোক নিরসন করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, পৌরসভার অধিকাংশ মানুষই গরিব। এখানে কোনো শিল্পকারখানা নেই। কর্মস্থানের বড় অভাব। আবার নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে ইউনিয়ন থেকে অনেক মানুষ পৌরসভার মধ্যে বসবাস করছে।

এসব কারণে অনেক বেকার রয়েছে পৌর এলাকায়। অনেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। আগে প্রতিদিন পৌরসভার মধ্যে একটা অটোরিকশাকে ৩৫ টাকা পৌরকর দিতে হতো। আমি জয়ী হওয়ার পর সেটি ২৫ টাকা করা হয়েছে। আরো কমানো হবে।
মেয়র আরো জানান, পৌর এলাকায় ১২০টির মতো হরিজন পরিবার আছে। তারা অমানবিক জীবনযাপন করে। প্রধান কারণ আবাসন সমস্যা। ৭০ বছর আগে ১০ ফুট বাই ১০ ফুট একটি কক্ষ থাকার জন্য দেয়া হয় একটি পরিবারকে। সেই একটি কক্ষে এখন তিন পরিবার বসবাস করে। ঘর না থাকায় অনেক পরিবারের ছেলেরা বিয়ে করতে পারছে না। হরিজন পল্লীতে মানসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থাও নেই। সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ। দ্রুত সময়ের মধ্যে হরিজনদের আবাসন সমস্যার সমাধান করা হবে। আর দ্রুতই তাদের স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করা হবে।
সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, সংস্কার না করায় অনেক রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১০ বছর রাজবাড়ী পৌরসভায় রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি। অনেক রাস্তা সংস্কারের অভাবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে এসব রাস্তার সংস্কার করব। বর্ষা শেষ হলেই পৌরসভার রাস্তাগুলো সংস্কার করা হবে। বর্তমানে পৌরসভার সব সড়কেই বাতি আছে। আগে ছিল না।
সব শেষে মেয়র বলেন, আমি পৌরসভার একজন সেবক হতে চাই। আমি সবার মেয়র। পৌর নাগরিকদের সেবার জন্য আমার দরজা ২৪ ঘণ্টাই খোলা। আর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাজবাড়ীকে একটি মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। উল্লেখ্য, রাজবাড়ী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৩ সালে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়