প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
শরীফা বুলবুল : অবরুদ্ধ জীবনে আমি সারাদিন লেখালেখি, পড়াশোনা এবং পুরনো পত্র-পত্রিকা পড়েই সময় কাটাচ্ছি। আমার কাছে ভারতের পুরনো পত্রিকা চতুরঙ্গ, দেশ, অক্ষয়, কৃত্তিবাসসহ নানা ধরনের পত্রিকা রয়েছেÑ সেসব পড়ে সময়টা কাটাই। এছাড়া টেলিফোনে বন্ধুদের খবরাখবর নিই। মাঝে মাঝে হতাশা গ্রাস করছে কাছের মানুষদের হারিয়ে। আনিস স্যার, শামসুজ্জামান ভাই, সিরাজী ভাইসহ কত কাছের মানুষকে এই করোনা কেড়ে নিয়েছে যা বিষণœ করে তোলে মনকে। এক ধরনের চাপ অনুভব করছি। লেখার মধ্যে ঢুকলে ভালোও লাগছে। তাই এসব ভোলার জন্য লেখা আর পড়ার ভেতর ডুবে থাকি। এসবই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে কেমন কাটছে জীবন, ভোরের কাগজের এমন প্রশ্নের উত্তরে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক ও মুক্তিযোদ্ধা খালেক বিন জয়েন উদদীন এভাবেই বললেন তার যাপিত জীবনের কথা। করোনায় চেনা পৃথিবীর কতটা বদল ঘটেছে জানতে চাইলে এই শিশু সাহিত্যিক বলেন, প্রচণ্ডভাবে চেনা পৃথিবীটা বদলে গেছে। যা আগের মতো নেই। মনে হচ্ছে করোনা আমাদের অনেক কিছুই শিখিয়ে দিয়ে গেল। এখন মানুষের অনেক কিছু বদলাতে হবে। মানুষ একেবারে অন্তর্মুখী হয়ে গেছে। হয়তো একসময় এই অন্তর্মুখিতা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারব। খুব মিস করি পল্টনে কমিউনিস্ট পার্টির সিঁড়ির সেই আড্ডাটা। ভীষণ আনন্দ আর হই-
হুল্লোড়ের মধ্যে কেটে যেত আড্ডার সময়গুলো। তারপরও আমাদের বাঁচতে হবে। পৃথিবীটা তো এখনই শেষ হয়ে যাবে না।
সমাজ জীবনে করোনার প্রভাব বাড়ছে, প্রতিদিনই বদলাতে হচ্ছে নিজেদের, নতুন পরিস্থিতিতে কীভাবে খাপ খাওয়াতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতার মর্ম একেবারেই বুঝি না। এই করোনাকালই তার প্রমাণ। প্রতিদিন টিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এত করে বলাবলি হচ্ছে মাস্ক পরতে হবে, সাবান দিয়ে নিয়মিত হাত ধুতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি সতর্কতা। কিন্তু কারো মধ্যেই সচেতনতা নেই। এ ব্যাপারে সরকারের অবশ্যই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি কঠোর না হয় তাহলে বাংলাদেশকে চরম মূল্য দিতে হবে।
শিক্ষার কী হবে জানতে চাইলে এই ছড়াশিল্পী বলেন, আগে বাঁচতে হবে। তারপরই তো শিক্ষা। বেঁচে না থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে কী হবে? কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন, প্রয়োজনে অফিস-আদালত বন্ধ রাখা উচিত। অনলাইনে তো অফিস চলছে, এমনতো নয়, অনলাইনে অফিস চলছে না। করোনার প্রথম ধাক্কায় অফিস পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই খাপখাইয়েও নিয়েছেন। অফিসের বাইরে থেকে অনলাইনে অফিস করছেন। কর্মক্ষেত্র বা অফিস ব্যবস্থাপনায় ভার্চুয়াল পদ্ধতি তো খারাপ নয়, ভালোই চলছে। একটা বছর ঘরেই থাকতে সমস্যা কোথায়? একাত্তরে কী ছিলেন না? এটা তো একটা যুদ্ধ। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জিতেছিলাম। এই যুদ্ধ ভাইরাসের বিরুদ্ধে। একাত্তরের মতো এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও জিততে চাই।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।