ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সাব কমিশন গঠনের প্রস্তাব বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার ফি নির্ধারণ কতদূর? : বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেন ৮৬ শতাংশ মানুষ, স্বাস্থ্য খাতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে

পরের সংবাদ

বিড়ালছানার লোভ দেখিয়ে অপহরণ : মামলার পরদিন ডোবায় মিলল শিশুর মরদেহ

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে বিড়ালছানা দেয়ার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করা ১০ বছর বয়সি সেই শিশুকন্যা আবিদা সুলতানা আয়নীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। অপহরণের ৮দিন পর আদালতে মামলা দায়েরের পরদিন গতকাল বুধবার নগরীর পাহাড়তলী থানার মুরগিফার্ম এলাকার একটি ডোবা থেকে আয়নীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঘটনায় জড়িত স্থানীয় সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ রুবেলকে (৩৫) গ্রেপ্তারের পর তার দেখানো স্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পিবিআই জানিয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর খুন করে মরদেহ বস্তায় ভরে ফেলে দেয়া হয়। শিশু আয়নীকে ধর্ষণের পরে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার মো. রুবেল। গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে রুবেল এ স্বীকারোক্তি দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার রুবেল ধর্ষণের পরে শিশু আয়নীকে গলাটিপে হত্যার পর মরদেহ ডোবাতে ফেলে দেন বলে দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শিশু অপহরণের অভিযোগে গত ২৮ মার্চ চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২’র বিচারক শরমিন জাহানের আদালতে শিশুটির মা বিবি ফাতেমা বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত

কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মামলায় মোহাম্মদ রুবেলকে (৩৫) আসামি করা হয়েছে। আদালতে মামলা দায়েরের আগে শিশুটির মা থানায় অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতিকার না পেয়ে আদালতে গিয়ে অপহরণের মামলা করেন। নিহত আয়নী পাহাড়তলি থানাধীন আবদুল হাদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
ঘটনায় জড়িত মো. রুবেলকে গ্রেপ্তারের পর পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, শিশু আয়নী নিখোঁজের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর থেকে রুবেলকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। কিছু তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের পর মঙ্গলবার রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়। একপর্যায়ে রুবেল স্বীকার করে, মেয়েটিকে ২১ মার্চ নিখোঁজের দিনই সে কাজিরদীঘি এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ভবনের চারতলায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর শ্বাসরোধে হত্যা করে তার লাশ বস্তায় ভরে ময়লা-আবর্জনায় ভরা ডোবায় ফেলে দেয়। রুবেলের তথ্য অনুযায়ী বুধবার ভোরে ডোবা থেকে বস্তাবন্দি প্রায় গলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার রুবেলকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে দাখিল করা মামলার আরজিতে বলা হয়, আয়নীর মা একটি পোশাক কারখানার কর্মী। তার বাবাও ঢাকার একটি গার্মেন্টসে কর্মরত। কয়েকদিন আগে শিশুটি তাকে একটি বিড়ালছানা কিনে দেয়ার জন্য তার মাকে অনুরোধ করে। মা তাকে বেতন পেলে কিনে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। সে তখন মাকে বলে রাস্তার সবজি বিক্রেতা তাকে বিড়ালছানা এনে দেবে। কিন্তু মা তাকে অপরিচিত লোকের কাছ থেকে বিড়ালছানা নিতে নিষেধ করেন। এ ঘটনার কয়েকদিন পর গত ২১ মার্চ ভুক্তভোগী শিশুটি স্কুলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার দিন এবং তার আগের দিন ভুক্তভোগীকে মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। মামলার আরজিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দু’জনের কথোপকথনের সময় রুবেলের হাতে বাজারের থলে এবং সেখানে একটি বিড়ালছানা দেখা যায়। রুবেলের কাছ থেকে আয়নীকে সেই থলে নিতেও দেখা যায়। এরপর তাদের আর দেখা যায়নি। পাহাড়তলী থানায় অভিযোগ করার পর পুলিশ রুবেলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়