গ্রেপ্তার ৭ : ইশরাকসহ ১৩০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

আগের সংবাদ

শর্তগুলো কঠিন হলেও যৌক্তিক : আইএমএফের শর্ত মেনেই ঋণ নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের, ব্যাংক ঋণের সুদ বাড়ানোর প্রস্তাবে ব্যবসায়ীদের আপত্তি

পরের সংবাদ

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি : ৪৭২ কোটি টাকা অনিয়মের ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির (এসএওসিএল) ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও অনিয়মের ব্যাখ্যা এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে অডিটর জেনারেল ও বিপিসির চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে অনিয়মের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন, অডিটর জেনারেল ও বিপিসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে গতকাল রবিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ‘৪৭২.৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বিপিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির (এসএওসিএল) ২১ অনিয়মের কারণে সরকার ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) ২০১২-১৩ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত এসএওসিএলের নথি পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানতে পেরেছে। বিপিসি ও এশিয়াটিক ইন্ডাস্ট্রিজের মধ্যে ৫০-৫০ যৌথ উদ্যোগ এসএওসিএল। প্রতিষ্ঠানটি ইঞ্জিন তেল, যানবাহনের তেল, ডিজেল, বিটুমিন, তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস ও ফার্নেস তেল বিপণন ও বিতরণ এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানে জেট ফুয়েল সরবরাহ করে।
এসএওসিএলের নথি পর্যালোচনায় পাওয়া অসঙ্গতিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শীর্ষ কর্মকর্তাদের দ্বারা অর্থ আত্মসাৎ, উচ্চ হারে ওভারটাইম, অনুপস্থিত তহবিল, মামলা-মোকদ্দমা ফি প্রদানে অনিয়ম ও আয়কর অধ্যাদেশ এবং ভ্যাট বিধি লঙ্ঘন। প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ পরিচালকের একজন ও এর ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি মঈনুদ্দিন আহমেদ এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ- ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত মঈনুদ্দিন আহমেদের মালিকানাধীন এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির (এওসিএল) কাছে এসএওসিএলের বিক্রি করা লুব্রিকেটিং তেলের বকেয়া পরিশোধ না করার কারণে সংস্থাটির ১৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এসএওসিএলের নথিগুলোতে দেখা গেছে, এওসিএল চালানের বিপরীতে চেক সরবরাহ করেছিল। তবে, চেকে উল্লেখ করা অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেয়া হয়নি। এছাড়া কোম্পানি আইন অনুযায়ী, অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ ধরনের লেনদেন নিষিদ্ধ। বকেয়া পরিশোধ না করার কারণে এওসিএলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সিএজি বলছে, এটি গুরুতর অনিয়ম। ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ অর্থবছর পর্যন্ত কোম্পানির জন্য এসএওসিএলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অগ্রিমের জন্য কোনো ভাউচার বা চালান সরবরাহ না করেই ৮৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা নিয়েছিলেন মঈনুদ্দিন আহমেদ। তিনি ২০১১-১২ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত ২৩ কোটি ১১ লাখ টাকা অগ্রিম হিসেবে তুলে নিয়েছেন। কারণ টাকা তোলার কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। তিনি কখনো এই টাকা ফেরতও দেননি। সিএজি যখন কোম্পানির কাছ থেকে এই অনিয়মের ব্যাখ্যা চেয়েছিল, তখন তারা বলেছিল যে, এটি ছিল লুব-ভিত্তিক তেল, অ্যাডিটিভস ও অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির জন্য স্থানীয় ব্যয়। উত্তরটি সন্তোষজনক না হওয়ায় সিএজি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
অর্থ তছরুপের দুটি ঘটনায় মঈনুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং তার ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, এসএওসিএলের কাছ থেকে আত্মসাৎ করা অর্থ দিয়ে মঈনুদ্দিন আহমেদ গুলশানে ১২ কোটি ৩৭

লাখ টাকায় তার স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাট এবং ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা দিয়ে রাজধানীর লালমাটিয়া, উত্তর কমলাপুর, বারিধারা, বসুন্ধরা ও চট্টগ্রামের হালিশহরে ৬টি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে তাদের অঢেল সম্পত্তি রয়েছে বলে দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়