আলফাডাঙ্গায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্ধিত সভা

আগের সংবাদ

নতুন মাথাব্যথা ‘হিজরত’! : আফগানিস্তানে তালেবান সাফল্যে উজ্জীবিত আইএস অনুসারী আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশে সক্রিয়

পরের সংবাদ

করতোয়া ট্র্যাজেডি : আরো এক মরদেহ উদ্ধার এখনো নিখোঁজ ৩ > তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় বাড়ল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এন এ রবিউল হাসান লিটন, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় চতুর্থ দিনে হিমালয় চন্দ্র হিমেল (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ জনে। তবে এখনো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ ৩ জনের উদ্ধারে কাজ চলছে। 
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল আউলিয়া ঘাটের কাছ থেকেই হিমেলের (২২) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেল উপজেলার ময়দানদিঘী খালপাড়া গ্রামের বীরেন্দ্রনাথের ছেলে। দেড় মাস আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার দিন হিমেল তার নববধূ বন্যা, দুই মামাতো বোন কবিতা রানী (৯) ও পুতুল রানীকে (১৫) নিয়ে নৌকায় উঠেছিলেন। বন্যা সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও দুই মামাতো বোনসহ নিখোঁজ ছিলেন হিমেল। মঙ্গলবার কবিতা ও পুতুলের মরদেহে উদ্ধার হয়।
গত রবিবার দুপুরে বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর ওপারে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় আউলিয়া ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩০ জন নারী, ১৮ জন পুরুষ এবং ২১ জন শিশু। এদের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বাসিন্দা ৪৬ জন, দেবীগঞ্জের ১৭ জন, আটোয়ারীর ৩ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ২ জন এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার বাসিন্দা একজন। তাদের সৎকারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাথাপিছু ২০ হাজার এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায়

পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক দিবস পালন করা হচ্ছে। 
এদিকে নৌকাডুবির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় আরো তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটির সবাই উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় তাদের তদন্তের কাজ ব্যাহত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করার জন্য তারা আরো তিন দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করায় তা মঞ্জুর করা হয়েছে।
মানবতার ফেরিওয়ালা সারোয়ার : আউলিয়ার ঘাটে নৌকাডুবির ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি মরদেহ উদ্ধারে স্থানীয়রাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তেমনই একজন ব্যবসায়ী সারোয়ার হোসেন। উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের পাইকপাড়ার এই বাসিন্দা গত চার দিন ধরে নিজের ব্যবসা ফেলে রাত-দিন নদীতে মরদেহ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
সারোয়ার হোসেন বলেন, নৌকাডুবির ঘটনাটি খুবই ভয়াবহ। নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান নিয়ে আমি খুব হতাশ ছিলাম।  স্বজনদের আহাজারি আমাকে খুব বেদনা দিচ্ছিল। নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারিনি। সে জন্য নিজে থেকে উদ্যোগ নিয়ে আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা শুরু করি। আমি নিজ হাতে ১১টি মরদেহ উদ্ধার করেছি। এখানে ধর্ম-বর্ণ না দেখে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমার কর্তব্য মনে করেছি। মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মানুষের বাহবা পাওয়ার আশায় কিছু করিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়