সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীরীতি রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে সবাইকে

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০, এখনো নিখোঁজ অন্তত ২৭ : মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা

পরের সংবাদ

জমি নিয়ে বিরোধ : মামলা করায় একঘরে বাদী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাগুরা প্রতিনিধি : জমিজমাসংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে মামলা করায় মামলার বাদী মাগুরার শালিখা উপজেলার হাটবাড়িয়া গ্রামের মনিকুমার ও তার পরিবারের সব সদস্যদের গ্রাম থেকে একঘোরে করে রেখেছে মামলার বিবাদী প্রশান্ত বিশ্বাস গং, গ্রামের মাতুব্বর অসিত বৈরাগী ও তার দলবল। শুধু তাই নয় মামলা প্রত্যাহার করার জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রকারের চাপসহ জীবন নাশের হুমকি প্রদান করছে প্রশান্ত বিশ্বাস, অসিত বৈরাগী, রাজকুমার বিশ্বাসসহ তাদের লোকজন। ফলে মামলার বাদী পাগল চাঁদ, হরিশ চন্দ্র, মনিকুমার ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অন্যদিকে, বিবাদীরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ করছে পাকা ঘর, যা আইনের পরিপন্থি। মামলা সূত্রে জানা যায়, মাগুরার শালিখা উপজেলার হাট বাড়িয়া গ্রামের মনি কুমার বিশ্বাস, পাগল চাঁদ বিশ্বাস, হরিশ চন্দ্র বিশ্বাস ও সত্যবান বিশ্বাসের পৈতৃক সূত্রে প্রায় সাড়ে ছয় একর জমি বসতভিটাসহ জাল ছলের মাধ্যমে একই গ্রামের প্রশান্ত বিশ্বাস, খোকন গংসহ জোরপূর্বক দখল করে আসছে। ফলে বাদী পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেতে মাগুরা সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা করে। এতে প্রশান্ত গং গ্রামের লোকজন একত্রে হয়ে সালিশ বৈঠকের নাম করে পাগল চাঁদ ও হরিশ চন্দ্রসহ বাদী পক্ষকে মিটিংয়ে ডেকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে তার ভাইয়েরা মামলা তুলতে অস্বীকার করলে গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাস, অসিত বৈরাগীসহ একাধিক লোকজন বাদী ও তাদের পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন প্রকারের হুমকি প্রদান করে। এমনকি মামলা তুলে না নিলে বাদীর জীবননাশ করবে বলেও হুমকি দেয়। নিরূপায় হয়ে বাদী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শালিখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। অন্যদিকে বাদীর পরিবারকে শায়েস্তা করতে গ্রাম থেকে একঘোরে করে রেখেছে বিবাদীরা। মামলার বাদী হরিশ চন্দ্র, মনি কুমার ও সত্যবান বিশ্বাস জানান আমার পৈতৃক সম্পত্তি জাল ছলে করে প্রায় সাড়ে ছয় একর জমি জোরপূর্বক দখল করে ভোগ দখল করছে খোকন ও প্রশান্ত গং। ফলে আমরা সম্পত্তি ফিরে পেতে শালিখা জজ আদাদালতে একটা মামলা দায়ের করি। পরবর্তীতে মাগুরা সদর জজ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। মামলা করায় বিবাদীরা ষড়যন্ত্র করে গ্রাম্য সালিশ বৈঠক ডেকে মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। আমরা মামলা তুলতে অস্বীকার করায় গ্রামে আমাদের একঘরে করে রেখেছে। আমাদের বা আমাদের পরিবারের সদস্যদের কোনো প্রকার সামাজিক কাজে বা অনুষ্ঠানে ডাকা হয় না। শুধু তাই নয় তারা আমাদের মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রয়োগ করে চলছে। নিরুপায় হয়ে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শালিখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। এরপরও বিবাদীরা প্রতিনিয়ত হুমকি প্রর্দশন করছে। ফলে বর্তমানে আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। সেই সঙ্গে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করছি। এ ব্যাপারে সরজমিনে হাটবাড়িয়া গ্রামে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু ব্যক্তি জানান, জাল ছলের মাধ্যমে মনি কুমার গংদের সম্পত্তি দখল করে আবার তাদেরই কীভাবে একঘোরে করে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এছাড়া গ্রামের সব সামাজিকতায় বাদীদের ডাকা হয় না। এটা বর্তমান আইনের পরিপন্থি। আমরা এলাকায় শান্তি চায়। মামলার বিবাদী প্রশান্ত, খোকন বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলে তারা ভুবন বিশ্বাসের এক শরিক জয় গোপালের কাছ থেকে ১৯৭০ সালে আমার বাবা কৃষ্ণপদ বিশ্বাস ছলের মাধ্যমে আট আনা সম্পত্তি ক্রয় করে। আমরা ওয়ারেশ সূত্রে সম্পত্তির ভোগ দখল করে আসছি। খোকন গংদের সম্পত্তি কতটুকু এবং কয় দাগে কতো শতাংশ তা জানতে চাইলে খোকন এবং প্রশান্ত উভয়ই তার সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। তারা বলেন আমাদের কাগজপত্রেই আছে। আমরা সঠিকভাবে বলতে পারব না। গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা গ্রামে শান্তি রক্ষার জন্য সালিশ বৈঠকে বসেছিলাম। কিন্তু মামলার বাদী আমাদের অপমান করায় তাদের সমাজিক কাজ থেকে বয়কট করেছি। তবে একঘোরে করা হয়নি। তারা গ্রামের লোকজনদের কোনো সামাজিক কাজে ডাকে না। গ্রামের কোনো অনুষ্ঠানে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের ডাকা হয় না কেন? জানতে চাইলে গ্রাম্য মাতুব্বর রাজকুমার বিশ্বাস তার উত্তর দিতে পারেন না।

এ ব্যাপারে বুনাগাতী ইউপি চেয়ারম্যান মো. বখতিয়ার উদ্দিন লস্কর জানান যেহেতু বাদীর সমস্ত ডকুমেন্ট আছে। সেহেতু বাদী আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়