বাম গণতান্ত্রিক জোটের হুঁশিয়ারি : দমন-পীড়ন করে গদি রক্ষা করা যাবে না

আগের সংবাদ

চার কারণে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয়

পরের সংবাদ

আপিল বিভাগের রায় : একই ব্যক্তিকে একাধিক নোটিস দেয়া যাবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১:০৪ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দুর্নীতির একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে একাধিক নোটিস দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। অনুসন্ধান বা তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তিকে একাধিক নোটিস দেয়া হলে তাতে দুদক আইন ও বিধির কোনো ব্যত্যয় হয় না। দুর্নীতির যথাযথ ও কার্যকর অনুসন্ধান বা তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তিকে একাধিক নোটিস দেয়ার এই বিধান অসৎ উদ্দেশে নয়, বরং কমিশনের স্বচ্ছতাই প্রতিষ্ঠিত হয়। ‘দুদক বনাম আশরাফুল হক’ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব মন্তব্য তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৩০ জুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ মামলার রিভিউ আবেদনটি পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
আদালত রায়ে বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নোটিস দেয়া সংক্রান্ত ২০০৪ সালের দুদক আইনের ১৯ ও ২০ ধারা এবং ২০০৭ সালের দুদক বিধিমালার ৬, ৮ ও ১১ বিধিতে এ বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। আইনের এসব ধারা ও বিধিমালা পর্যালোচনায় এটা কাচের মতো পরিষ্কার যে, দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্তের স্বার্থে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ইস্যুতে একাধিক নোটিস দেয়ার এই আইনি প্রক্রিয়া অত্যন্ত সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক। এই একাধিক নোটিস দেয়ার ফলে যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান বা তদন্ত চলমান তিনি তার পক্ষে তথ্যউপাত্ত দিয়ে সঠিকভাবে অভিযোগ খণ্ডানোর সুযোগ পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, আশরাফুল হক নামে এক ব্যক্তির সম্পদের হিসাব চেয়ে ২০১০ সালে নোটিস দেয় দুদক। পরে সম্পদের হিসাব বিবরণী সংক্রান্ত নথি চেয়ে ২০১১ সালে ওই ব্যক্তিকে আরেকটি নোটিস দেয়া হয়। এরপর একই বিষয়ে একাধিক নোটিস দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। ওই রিটের ওপর শুনানি করে রুল জারি করা হয়। পরবর্তীতে ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে সেটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন ওই ব্যক্তি। আপিল বিভাগ একই বিষয়ে একাধিক নোটিস দেয়ার বিষয়টি বেআইনি ঘোষণা করে ২০১৬ সালে রায় দেয়। রায়ে বলা হয়, দুর্নীতির একই বিষয়ে কোনো ব্যক্তিকে একাধিক নোটিস দেয়ার সুযোগ নেই। যদি কোনো দুদক কর্মকর্তা এ ধরনের নোটিস দেন তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে কমিশনকে।
আপিল বিভাগের এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২০ সালে আবেদন করে দুদক। শুনানি শেষে গত ৩০ জুন আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনটি পর্যবেক্ষণ সহকারে নিষ্পত্তি করে দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান ও রিটকারী আশরাফুলের পক্ষে এস এম শাহজানান শুনানি করেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগের এই রায়ের ফলে এখন থেকে একই দুর্নীতির অভিযোগে ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক নোটিস দিতে দুদকের সামনে আর কোনো আইনগত বাধা থাকল না। তবে এসব নোটিস দেয়ার ক্ষেত্রে দুদককে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে কোনো ব্যক্তির আত্মমর্যাদা নষ্ট না হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়