প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
গৌতম সরকার, কাউনিয়া (রংপুর) থেকে : কাউনিয়ায় বর্ষা মৌসুম এলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ মূল্যবান সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় নদী তীরের মানুষকে। ১১ গ্রামের মানুষ তাদের জানমাল রক্ষায় ২ কিমি গার্ডব্যাংক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। ইতোমধ্যে অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলে দুই দফা চরাঞ্চলের কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ভাঙনে ইতোমধ্যে অনেক বাড়িঘর, ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। একটি ইউনিয়নে গত এক সপ্তাহে ১৭টি পরিবারের বাড়ি এবং ১০ হেক্টর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে।
সরজমিন তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কাউনিয়ায় প্রতি বছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙনের শিকার হয়। এতে বসতভিটা, জায়গা-জমি সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে হাজার হাজার পরিবার। রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। তিস্তার ভাঙনে দিশাহারা নদী পাড়ের মানুষ। তীব্র ভাঙনে দিশাহারা হয়ে ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কায় কাউনিয়ার ২ ইউনিয়নের ১১ গ্রামের মানুষ। গত এক সপ্তাহে তিস্তার ভাঙনে টেপামধুপুর ইউনিয়নের চরগনাই গ্রামের আয়শা, ছলিম উদ্দিন, সিরাজুলসহ ১৭টি পরিবারের বাড়ি এবং ১০ হেক্টর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে এই এলাকার নানা স্থাপনা। নদী ভাঙনের পদধ্বনিতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে তীরবর্তী এলাকার মানুষ।
চরগনাই গ্রামের দুদু মিয়া বলেন, আমার আবাদি যে জমি ছিল তার সব গিলে খেয়েছে নদী। বাড়িটি যে কোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে- সেই আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছি।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নের চরগনাই ও বিশ্বনাথ গ্রাম ২টি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৭টি বাড়ি, ১০ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। নির্বাহী অফিসার ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ৩ টন চাউল বরাদ্দ দিয়েছেন।
বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, কয়েকদিন আগে তার ইউনিয়নে অনেকের ফসল ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই দুর্ভোগ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।
কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন বলেন, তিস্তার ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা তারিন বলেন, তিস্তার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০ টন চাল বিতরণ অব্যাহত আছে। তাছাড়া ভাঙন ঠেকাতে আড়াই হাজার জিও ব্যাগ পাওয়া গেছে। ভাঙনের বিষয়টি আমরা নজরদারিতে রেখেছি।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।