মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় উচ্ছ¡সিত ফুটবলাররা

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল এবং অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দল এবং ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দিয়েছেন। ৬৬ জন ক্রীড়াবিদ ও ২২ জন কোচ-কর্মকর্তাকে এ সময় সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ফুটবলার, ২৩ জন নারী ফুটবলার এবং ১৮ জন প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার রয়েছেন। ২০২০ সালে নেপালের বিপক্ষে মুজিববর্ষ সিরিজে জয় পায় জাতীয় পুরুষ ফুটবল দল। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল নারী ফুটবল দল। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশ শিরোপা ঘরে তুলে। এছাড়া গত নভেম্বরে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দল। দেশের খেলাধুলা অঙ্গনে এসব অভাবনীয় সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনা প্রদানকৃত প্রত্যেক খেলোয়াড় উপহার হিসেবে পেয়েছেন ৫ লাখ টাকা করে। অন্যদিকে পুরুষ ফুটবল দলের কোচ-কর্মকর্তা আটজন, নারী ফুটবল দলের কোচ কর্মকর্তা ১০ জন এবং ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের চারজন কর্মকর্তাকে ২ লাখ টাকা করে উপহার প্রদান করা হয়। মোট ৮৮ জনের মধ্যে পাঁচজনকে ডেকে প্রধানমন্ত্রী তাদের হাতে উপহার তুলে দেন। তারা হলেন- পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, নারী দলের অন্যতম খেলোয়াড় মনিকা চাকমা এবং ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান। বাকি ৮৩ জনের উপহার তাদের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা পেয়ে উচ্ছ¡সিত খেলোয়াড়রা। জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার তপু বর্মণ বলেন, ‘ইনজুরির পর খেলোয়াড়দের খুব কঠিন সময় যায়। আজ প্রধানমন্ত্রীকে কাছ থেকে দেখলাম এবং ফুটবলের জন্য সংবর্ধনা পেলাম এটা আমাকে মানসিকভাবে দারুণ উদ্দীপ্ত করছে।’ নারী ফুটবল দলের দলনেতা জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খেলাধুলা অত্যন্ত ভালোবাসেন এবং বিশেষ করে নারী ফুটবলের প্রতি তার অত্যন্ত সুনজর রয়েছে। নারী ফুটবলাররা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সংবর্ধনায় অত্যন্ত অনুপ্রাণিত এবং সামনের টুর্নামেন্টে তারা আবারো চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আবারো সংবর্ধনা নিতে চায়।’
তিনটি দলকে সংবর্ধনা দিয়ে খেলোয়াড়দের উদ্দেশে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরো ভালো খেলতে হবে। যখন খেলতে নামবে তখন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মানসিকতা নিয়ে নামবে। আমি সব সময় তোমাদের পাশে আছি। তোমাদের যখন যা লাগে আমি দেব।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলও ভালো করছে। ওরা ওয়ানডে স্ট্যাটাস অর্জন করেছে। এটা অনেক বড় অর্জন বলে আমি মনে করি। তবে ফুটবল খেলাটা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এ জন্য আমরা আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা নিয়েছি। ছেলেদের জন্য বঙ্গবন্ধু আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা ও মেয়েদের জন্য বঙ্গমাতা আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ব্যবসায়ীদের খেলাধুলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা দেশের জন্য খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চা করবে তারা শুধু খেলাধুলাই করবে। তাদের জীবনযাপনের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। আমাদের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানা আছে, তাদের বলব প্রত্যেকের উচিত আমাদের খেলাধুলার সঙ্গে যারা জড়িত অন্তত তাদের একটা সুযোগ করে দেয়া। তাদের যদি একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে রাখে, তাহলে খেলাধুলার দিকে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ দেয়াই উচিত। পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও এ ধরনের সুযোগ দেয়া প্রয়োজন বলে আমি বিশ্বাস করি। তাদের আর কোনো কাজ নেই তারা শুধু খেলাধুলাই করবে। এখন যত বেশি ক্লাব হবে যত বেশি প্রতিযোগিতা হবে, খেলাধুলায় তত বেশি উৎকর্ষতা বাড়বে, এটাই বড় কথা। সেই ধরনের পরিবেশ আমাদের দেশে করতে হবে। খালি ব্যবসা করবেন আর ইন্ডাস্ট্রিজ করবেন আর পয়সা বানাবেন সেটা তো হয় না, কিছু দেশের জন্য করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যেন উদ্যোগ নেন। আমি যতক্ষণ আছি ততক্ষণ এ সহযোগিতাটা থাকবে। কিন্তু আমি না থাকলেও যেন অসুবিধা না হয় সেজন্য ফাউন্ডেশন করে দিয়েছি। ফাউন্ডেশনে আমি যেটা সিড মানি দিয়েছি কিন্তু আমাদের ব্যবসায়ী মহল আছে যারা আছেন তাদের উচিত এখানে কিছু অনুদান দেয়া। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা বিভাগীয় শহরে ক্রীড়া কমপ্লেক্স হবে। আমাদের ৮টি বিভাগ, হয়তো ভবিষ্যতে আরো দুইটা বাড়বে। সব বিভাগে ক্রীড়া কমপ্লেক্স করে দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন শ্রেণির ক্রীড়া দলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী মো. সালাউদ্দিন, নারী অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা এবং বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। জাহিদ আহসান রাসেল তার বক্তৃতায় ক্রীড়াঙ্গনে সাম্প্রতিক সময়ে সাফল্য ও গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাফুফের মহিলা কমিটির চেয়ারপারসন মাহফুজা আক্তার কিরণ ও বাফুফের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়