দুদকের মামলা : অব্যাহতি পেতে হাইকোর্টে ওসি প্রদীপের আবেদন

আগের সংবাদ

‘কাগুজে’ বিদেশি বিনিয়োগ : সাড়া মেলে নিবন্ধনের এক-তৃতীয়াংশের,হ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং সুশাসনের অভাব

পরের সংবাদ

পকেট-থুতনিতে মাস্ক : স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরে সরকারও উদাসীন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বর্তমানে দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২০ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত। ওমিক্রনের সংক্রমণ বিস্তার প্রতিরোধে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ আরোপ করার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই। গণপরিবহন, বাজার, শপিং মল, রেস্টুরেন্টে স্বাস্থ্যবিধি এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ উপেক্ষিত। স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কারো কোনো আগ্রহ নেই। বিভিন্ন বয়সি মানুষ মাস্ক ছাড়াই অফিস, বাজার, শপিংমলে যাচ্ছে। সবাই অবাধেই সব ধরনের পরিবহনে চলাফেরা করছে।
গণপরিবহনে আসনের অর্ধেক সংখ্যার যাত্রী পরিবহনে সরকারের বাধ্যবাধকতা থাকলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা একতরফাভাবে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ‘যত আসন তত যাত্রী’ নিয়েই গণপরিবহন চালাচ্ছে। অথচ বিআরটিএ এখন পর্যন্ত শতভাগ আসনে যাত্রী পরিবহনের ঘোষণা দিয়ে নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। প্রতিটি গণপরিবহনেই দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া হচ্ছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, পল্টন, চানখাঁরপুল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গণপরিবহনগুলোতে আসন পূর্ণ করার পরেও গেট পর্যন্ত দাঁড় করিয়ে যাত্রী নেয়া হচ্ছে। কোনো বাসেই হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। এমনকি গতকাল নতুন চালু হওয়া ‘নগর পরিবহনের’ কিছু বাসেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালেও স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে। গত কয়েক দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউ, মহাখালী এলাকায় যাত্রী ও বাসকে জরিমানা করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতা দেখার সঙ্গে সঙ্গে লোকজন দূরে সরে যাচ্ছে। অনেকে থুতনির মাস্ক মুখে তুলছে। পকেট থেকে বের করে হাতে নিচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্য কর্মকর্তারাও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করছে।
বিআরটিএ এর আদালতের পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা কার্যকর করতে ঢাকা জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও চলছে।
মোহাম্মদপুর-খিলগাঁও রুটের মিডলাইন পরিবহনের হেল্পার জাকির হোসেন জানান, আমরা আসন পূর্ণ হওয়ার পরে একজন যাত্রীও তুলতে চাই না। কিন্তু যাত্রীরা জোর করে উঠে পড়ছে। তখন আমাদের বাধ্য হয়েই যাত্রী দাঁড়ানো অবস্থায় বাস চালাতে হয়।
মাস্ক না পরার ব্যাপারে এই পরিবহনের যাত্রী মোবারক হোসেন জানান, বেশিক্ষণ মাস্ক পরে থাকা যায় না তাই খুলে ফেলেছি। একটু পরে আবার পরব।
হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোতেও টিকা সনদ দেখানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে সরকারের বিধিনিষেধে। কিন্তু এখানেও স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি উপেক্ষিত। হোটেল কর্তৃপক্ষ কোনো কাস্টমারের কাছে এই টিকা সনদ দেখতে চায় না।
রাজধানীর কাঁচাবাজার, মাছবাজার ও অন্যান্য দোকানপাটে ক্রেতা এবং বিক্রেতারা মাস্ক পরছেন না। শপিং মলগুলোর ভেতরেও একই অবস্থা দেখা গেছে। শপিংমলে প্রবেশের পরেই মাস্ক থুতনিতে অথবা হাতে চলে যাচ্ছে। টিসিবির পণ্য কেনার জন্য প্রেস ক্লাবের সামনে, সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মোহাম্মদপুরের টাউন হল, মৌচাক এলাকায় ট্রাকের সামনে শত শত মানুষকে গায়ে গা লাগিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এদের অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক থাকে না।
করোনা আক্রান্ত ৭৬৮টি নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে ওমিক্রনের সংক্রমণ বর্তমানে ২০ শতাংশ বলে দাবি করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। সার্বিক পরিস্থিতি এমন যে, কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে না পারলে সংক্রমণের হার হু হু করে বেড়ে যাবে। তখন করোনা পরিস্থিতি সামাল দেয়া আরো কঠিন হয়ে পড়বে। বিধিনিষেধ মানা না হলে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা অসম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়