সোনারগাঁওয়ে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি

আগের সংবাদ

স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশনা নিয়ে বিভ্রান্তি

পরের সংবাদ

ওমিক্রন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সতর্কতা : বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন যে নতুন বিপদের ঝুঁকি নিয়ে এসেছে, সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যেহেতু ওমিক্রন নতুনভাবে আবার সারা বিশ্বে দেখা দিচ্ছে, এখানে আমাদের দেশের মানুষকে একটু স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা মেনে চলতে হবে। আর শীতকালে প্রাদুর্ভাবটা বাড়ে। এমনকি সাধারণত আমাদের দেশে শীতকালে একটু সর্দি-কাশিও হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাই মাস্কটা ব্যবহার করবেন। খুব বড় সমাগমে যাবেন না। সেখান থেকে একটু নিজেদের সুরক্ষিত রাখবেন। আর কোনো বড় সমাবেশ যেন না হয়, সেটার দিকেও লক্ষ্য রাখবেন। সবাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলবেন। গতকাল রবিবার দেশের আট বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে প্রণোদনা দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দ হিসেবে বাজেটে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা রেখেছি। এর বাইরেও যদি প্রয়োজন হয় আমরা খরচ করতে পারব। সেভাবে আমাদের উদ্যোগ নেয়া আছে। তাছাড়া আমরা আলাদা একটা ফান্ডও তৈরি করেছি। সেভাবেই আমরা মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ সময় টিকা মজুতের পরিসংখ্যান তুলে ধরার পাশপাশি টিকা নিয়ে নানা অপপ্রচারের প্রসঙ্গেও কথা বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ৩১ কোটির বেশি ডোজের ব্যবস্থা আমরা করে রেখেছি। ইতোমধ্যে আমরা টিকা দিয়ে যাচ্ছি। একটি মানুষও যেন টিকা ছাড়া না থাকে। সেক্ষেত্রে আমি দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাব, অনেকেই ভয় পান, গায়ে সুই ফোটাবে সেই ভয়ও আছে। নানা ধরনের অপপ্রচারও ছিল।
ওমিক্রনে শিশুরা বেশি আক্রান্ত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেজন্য আমরা বাংলাদেশে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা ভয় না পেয়ে টিকা নিন। টিকা নিলে অন্তত আপনার জীবনটা রক্ষা পাবে। হয়তো কিছু দিন ভোগাবে কিন্তু জীবনটা রক্ষা পাবে। সবার কাছে আমার অনুরোধ আপনারা ভয় না পেয়ে টিকাটা যাতে ঠিকমতো নিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশে সরকারি খরচে টিকা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু ভ্যাকসিন কেনাটাই না, ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য যেসব পণ্য প্রয়োজন হয়, যে লোকবল প্রয়োজন হয়, টেকনিশিয়ান প্রয়োজন হয়, সেগুলো পরীক্ষা করার জন্য এসব আমরা একেবারে বিনা পয়সায় করে দিয়েছি। পৃথিবীর অনেক ধনী দেশও বিনা পয়সায় দেয় না। বাংলাদেশ দিচ্ছে, কারণ মানুষের সেবাই আমাদের বড় কাজ। এজন্য বাজেটে আলাদাভাবে আমরা টাকাও বরাদ্দ রেখে দিয়েছি এবং যত টাকাই প্রয়োজন হোক আমাদের এই কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখব। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের

কথা তুলে ধরার পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সের অভাব পূরণ করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথাও বলেন তিনি।
ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ থেকে বাঁচতে সতর্ক থাকুন : ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশপাশি বিশেষভাবে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব একটু বেশি দেখা যাচ্ছে। কিডনি ও হার্টের রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়েছে। জনগণকে বলব, যেসব স্বাস্থ্যবিধি মানলে সুস্থ থাকা যায়, সেগুলো মেনে চলুন। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ কারো কাছে হাত পেতে চলবে না। পরনির্ভরশীল না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের মধ্যে ক্যান্সার চিকিৎসা সহজলভ্য করতে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে হৃদরোগ, কিডনি ও ক্যান্সার রোগীদের সেবা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের দেশের মানুষ এগিয়ে যাবে। দেশের মানুষের কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসকদের গবেষণায় দৃষ্টি দেয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, নামিদামি চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দিতেই ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু কিছু সময় গবেষণার দিকে নজর দিলে দেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু, পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে এ দেশের মানুষের কী কী ধরনের রোগ-বালাই হয় এবং তার প্রতিরোধ শক্তি কীভাবে বাড়ানো যায় সেব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটি দেশ হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। দেশের প্রতিটি মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা পাবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য, যেটা জাতির পিতার একমাত্র স্বপ্ন ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়