প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : করোনা চলাকালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয়েছে। অবশেষে বিশ্বের সেরা ১৬ দল নিয়ে বাছাই পর্ব দিয়ে ১৭ অক্টোবর ওমানের রাজধানী মাস্কাটে শুরু হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে মূল আসর। ১৪ নভেম্বর ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শেষ হবে টুর্নামেন্টটি। বিশ্বকাপ উত্তেজনায় কাঁপছে গোটা বিশ্ব। এবার সপ্তম আসরে ব্যাটে-বলে কোন ক্রিকেটার গর্জে উঠবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনায় ডুবে আছেন ভক্তরা। কোন দেশ এবার বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলবে এ বিষয় নেয়ে তুমুল আলোচনা ও বাকবিতণ্ডা চলছে। সেই সঙ্গে পছন্দের দল নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশের পাশাপশি ঘাঁটা হচ্ছে রেকর্ড বই। এক কথায় বলা যায়, বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এর আগে ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসর। সবশেষ আসর হয়েছিল ২০১৬ সালে ভারতে। মজার বিষয় হলো, খুব কম সংখ্যক ক্রিকেটারই আছেন ছয় আসরের সবকটি খেলেছেন এবং সপ্তমবারও খেলতে যাচ্ছেন। তাই এক নজরে জেনে নেই, বিশ্বকাপের সব আসরে খেলেছেন যারা। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইলের দাপট নতুন কিছু নয়। ক্যারিবীয় এ ব্যাটিং দানবকে সর্বকালের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান বললেও ভুল হবে না। চার-ছক্কার হাঁকানো ছয় মারা যেন তার কাছে ছেলেখেলা। বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যান বোলারদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠতে পারেন এবারের আসরেও। তাছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান গেইলের। ৪৪২ ম্যাচ খেলেছেন এবং রান ১৪১৭৯, তার ধারে কাছে কেউ নেই। তার গড় ৩৭.১১ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৫.৮২। এই ফরম্যাটে ১২০ বলে অপরাজিত ১৭৫ রান তার সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে ২২টি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি দুটি বিশ্বকাপ জেতা এই ওপেনারের। ৪২ বছর বয়সি গেইল ৬টি বিশ্বকাপে ২৮ ম্যাচ খেলেছেন। ৪০ গড় ও ১৪৬.৭৩ স্ট্রাইক রেটে ৯২০ রান তার। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকায় তার উপরে কেবল মাহেলা জয়াবর্ধনে (১০১৬)। এই ইভেন্টে দুটি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফ সেঞ্চুরি তার। সেরা স্কোর ১১৭। সবচেয়ে বেশি ৬০টি ছক্কার মালিক গেইল।
বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের এ তারকা ক্রিকেটার ২০০৭ থেকে প্রতিটি বিশ্বকাপে খেলেছেন। ২৫ ম্যাচ খেলে প্রতি ম্যাচে ছিলেন দলের আস্থার প্রতীক। ২৮.৩৫ গড় ও ১২৮.৮৬ স্ট্রাইক রেটে ৫৬৭ রান তার, সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন। সেই সঙ্গে ৩টি হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব। আর বল হাতে বিশ্বকাপে ১৯.৫৩ গড় ও ৬.৬৪ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৩০ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ১৫ রানে ৪ উইকেট। বাংলাদেশ কোয়ালিফায়ার পর্ব জিতে সুপার টুয়েলভে উঠতে হলে নিশ্চিতভাবে সাকিবকে বড় অবদান রাখতে হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভো এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। তিনি ব্যাট হাতে ক্রিজে থাকলে প্রতিপক্ষে হৃদস্পন্দন বেড়ে যার। এমনকি বল হাতে উইন্ডিজ দলে তার বিকল্প খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এমনকি ব্যাট-বল হাতে ব্রাভো এক ওভারেই পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের চিত্র। তার দুর্দান্ত দাপটে উইন্ডিজ জিতেছেন দুটি বিশ্বকাপ। মিডিয়াম পেসে টি-টোয়েন্টিতে সব মিলিয়ে ৬০০র বেশি উইকেট ব্রাভোর। ব্যাটিংয়ে সাড়ে সাত হাজার রান। বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলে ব্রাভো ২৪ গড়ে ৩টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৫০৪ রান করেছেন, স্ট্রাইক রেট ১২৯.২৩। বল হাতে ২৫.৮০ গড় ও ৮.৮৭ ইকোনমিতে নিয়েছেন ২৫ উইকেট। সেরা বোলিং ফিগার ৩৮ রানে ৪ উইকেট।
সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ভারতের রোহিত শর্মা। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবগুলোতে অংশ নিয়েছেন ‘হিটম্যান’ খ্যাত এই ব্যাটসম্যান। তিনি ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপেই হাজির হন বোলারদের সামনে। ২০০৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বকাপে মোট ২৮ ম্যাচ খেলেছেন রোহিত এবং ব্যাট করেছেন ২৫ ইনিংস। ৩৯.৫৮ গড়ে ৬৭৩ রান তার। স্ট্রাইক রেট ১২৭.২২, সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ৭৯ রানের। ৩৪ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান টুর্নামেন্টে ৬টি ফিফটি হাঁকান। এবার বিশ্বকাপেও তিনি ব্যাট হাতে মাঠ মাতাবেন এমন প্রত্যাশা ভক্তদের।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিং স্তম্ভ মাহমুদউল্লাহ সব বিশ্বকাপে খেলেছেন। এবার সপ্তম আসরে তার নেতৃত্বে মাঠে নামছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ৩৫ বছর বয়সি তারকা বল হাতে অফ স্পিন আর ব্যাটিংয়ে মিডল অর্ডার সামলান দক্ষতার সঙ্গে। ঠাণ্ডা মাথায় খেলে ম্যাচ জেতাতে তার জুড়ি মেলা ভার।
সম্প্রতি জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্য এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। আগের ছয় বিশ্বকাপে ২২ ম্যাচ খেলে ১৩.৮৫ গড়ে করেছেন ১৯৪ রান। বল হাতে ৩৭ ওভার করে নেন ৮ উইকেট।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব আসরে খেলা তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। ৩৪ বছর বয়সি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞদের একজন। এখন পর্যন্ত মুশফিক ৩৯২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে দেশের জন্য করেছেন ১২৫৯৫ রান, গড় ৩৪.০৪। ২০০৭ সাল থেকে খেলছেন বিশ্বকাপ, ২৫ ম্যাচ খেলে ২০ ইনিংসে ব্যাট করে রান ২৫৮, গড় ১৬.১২ ও স্ট্রাইকার রেট ১০৪.৪৫। হাফ সেঞ্চুরি নেই একটিও। উইকেটের পেছনে কট বিহাইন্ড ১০টি আর স্টাম্পিং ৯টি। তবে এবারের আসরে উইকেটকিপিং করবেন না তিনি।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।