প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগে সিলেকশন পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ করছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সিলেকশন পদ্ধতির নিয়ম ভেঙে কিছু সুচতুর প্রার্থী ভুল তথ্য দিয়ে সিলেকশনে তাদের জায়গা করে নিচ্ছে। অপরদিকে আরেকজন যোগ্য প্রার্থী সঠিক তথ্য দেয়ার পরও সিলেকশন থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে। বিষয়টি ভালোভাবে জেনে দেখলাম যে, বর্তমান পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা নতুন একটি পদ্ধতি চালু করেছেন। প্রথমে চাকরি প্রার্থীরা আবেদন করবে, পরে অনলাইনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তাদের সিলেকশন নিয়ম অনুযায়ী আবেদনকারীদের মধ্যে কিছু প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন এবং কিছু প্রার্থীকে বাদ দেবেন। সিলেকশন নিয়ম অনুযায়ী কনস্টেবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে চাকরি আবেদনকারীর কাছে চেয়েছেন : বাংলাদেশি হিসেবে ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি/সমমান সার্টিফিকেট ও জিপিএ-২.৫০/সমমান, বুকের মাপ সাধারণ অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি, শারীরিক উচ্চতা সাধারণের জন্য ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ও সঙ্গে ওজন ঠিক থাকা অর্থাৎ বিএমআই (ইগও) ঠিক থাকা। যদি কোনো আবেদনকারীর উল্লেখিত তথ্যগুলো ঠিক না থাকে, তাহলে সে আবেদনকারীকে বাতিল হিসেবে গণ্য করা হয় এবং মেসেজের মাধ্যমে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়। আর যদি উল্লেখিত তথ্যগুলো কারো ঠিক থাকে তাহলে তাকে নির্বাচিত করা হয়, অ্যাডমিট কার্ড উঠিয়ে মাঠে যাওয়ার জন্য তাকে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। তার মানে এ থেকে বোঝা যায় যে সিলেকশন পদ্ধতিতে প্রার্থী বাছাই সম্পূর্ণ অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষায় বা অন্যান্য চাকরি পরীক্ষায় অনলাইনের মাধ্যমে নির্ভুলভাবে বাছাই করা গেলেও, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেকটা ত্রæটি থেকে যায়। যার জিপিএ ও উচ্চতা বেশি থাকবে তুলনামূলক সে কম জিপিএ ও উচ্চতা প্রার্থী থেকে এগিয়ে থাকবে। আর এভাবে সহজেই ওপর থেকে ছেঁকে ছেঁকে প্রার্থী বাছাই করা হয় এবং তলানিতে পড়ে থাকে কম জিপিএ ও উচ্চতা থাকা প্রার্থীকে বাতিল হিসেবে গণ্য করা হয়। যেহেতু এসব কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক, তাই সমস্যাটি এখানে এসে দাঁড়িয়েছে। অনেক আবেদনকারী বাতিল পড়ার ভয়ে জিপিএর তথ্য ঠিক রেখে শারীরিক যোগ্যতার মাপ বাড়িয়ে দিচ্ছি। ফলে দুজন একই জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থী একই শারীরিক যোগ্যতা নিয়ে কেউ বাদ পড়ছে, আবার কেউ নির্বাচিত হচ্ছে। ফলে যে প্রার্থী সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করছে সে বাতিল হিসেবে গণ্য হচ্ছে, অপরদিকে যে প্রার্থী মিথ্যা তথ্য দিয়ে শারীরিক যোগ্যতা বেশি দেখিয়ে আবেদন করছে সে প্রার্থী অ্যাডমিট কার্ড তোলার জন্য নির্বাচিত হচ্ছে।
এবার আসুক পরবর্তী বিষয়টি, যেসব প্রার্থী মাঠে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন কর্তৃপক্ষ এবার তাদের সশরীরে শারীরিক যোগ্যতা মেপে পরবর্তী ধাপের জন্য নির্বাচিত করছেন। এই সশরীরের মাপটাই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাহলে এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায়, যদি সশরীরের মাঠের মাপটাই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করা হয়, তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে ওই সব প্রার্থীকে বাতিল করা হলো কেন, যারা সমপরিমাণ শারীরিক যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অ্যাডমিট কার্ড তুলে মাঠে যেতে পারেনি? তাহলে কি তাদের দোষ ছিল আবেদনের সময় সঠিক তথ্য দেয়া? তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, কনস্টেবল নিয়োগে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করতে সিলেকশন পদ্ধতি সংস্কার করুন, অথবা কনস্টেবল নিয়োগে সিলেকশন পদ্ধতি বাতিল করুন।
শেখ আব্দুল্লাহ : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা। [email protected]
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।