গজারিয়ায় পুকুর থেকে অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

আগের সংবাদ

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে অস্বস্তি

পরের সংবাদ

নির্মলেন্দু গুণের কবিতা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুভদ্রার বৃত্তপুষ্পস্তন

একদা আমার পৃথিবীকে
প্রদক্ষিণ করতো চাঁদ।
মানুষ যাকে পূর্ণচন্দ্র বলে।
এখন পূর্ণচন্দ্রের বদলে
পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে
তোমার বৃত্তপুষ্পস্তন।
তোমার স্তনের কেন্দ্রস্থিত
বোঁটাটিকে ‘আমি’ ভেবে
আমি কী যে আনন্দ পাই,
সে আমার ঈশ্বর জানেন।
সুভদ্রা, তোমার স্তনের চেয়ে
মনুষ্যকল্পিত স্বর্গ কি সুন্দর?
আমার তা বিশ্বাসই হয় না।
অবশ্য সন্দেহ থাকা ভালো।
এরই নাম নাকি শিল্প।
হা ঈশ্বর, মূর্খরা যে কী বলে!

১২ জানুয়ারি ২০২৪

ক্ষমা করো প্রভু

আমার অনেকগুলো চুম্বন আমার অধরৌষ্ঠ এবং জিহ্বায় আত্মগোপন করে থেকে গেলো।
আমার অনেকগুলো আলিঙ্গন অবাস্তবায়িত থেকে গেলো আমার অধরা স্বপ্ন ও অস্ফুট কল্পনার ভিতরে।
আমার জন্য বরাদ্দকৃত আদরগুলো আমি পৌঁছে দিতে পারিনি যথাস্থানে।
অথচ এমন তো নয় যে, আমার জীবৎকালে এই পৃথিবীতে পুরুষের চেয়ে সংখ্যায় কম ছিলো নারী।
তোমার পতাকা আমি বইতে পারিনি,
ক্ষমা করো প্রভু।

৯ ডিসেম্বর ২০২৩
আমার কবিতা, মুক্ত প্যালেস্টাইন
[কবি মঈন বেঁসিসুকে]

হয়তো আমার কবিতা
তোমাদের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রত্যাশিত
মুহূর্তকে ছুঁতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সে আসেনি।
হয়তো আমার কবিতা
তোমাদের ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ জীবনের অন্তর্হিত
আনন্দকে ছুঁতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সে আসেনি।
হয়তো আমাদের কবিতা
তোমাদের ঘরে ফেরা উৎফুল্ল রাত্রির
আবেগের সাথী হতে চেয়েছিল;
এতদিন তাই সে আসেনি।
এতদিন সে ছিলো অন্তহীন যাযাবর-যাতনার
একজন আহত দর্শক।
হয়তো আমার কবিতা
বৃন্তচ্যুত পুষ্পের অব্যক্ত চাহনির সাথে
তোমাদের শরণার্থী মুখশ্রীকে চায়নি মেলাতে।
হয়তো সে ভেবেছিল তোমাদের ঘরে ফেরা
হাসি মুখগুলোকে স্বগৃহে স্বাগত জানাবে;
এতদিন তাই সে আসেনি।
হয়তো সে দেখতে চেয়েছিল
যুদ্ধশেষে ফিরে পাওয়া তোমাদের মুক্ত প্যালেস্টাইন।
হয়তো সে উৎকর্ণ ছিলো
নবজাতকের সাহসী কান্নার জন্য,
পূর্ব-পুরুষের মতো যে ভূমিষ্ঠ হবে তার জন্মভূমির
নিজস্ব মাটিতে।
হয়তো আমার কবিতা
যুদ্ধ, মৃত্যু আর অন্তহীন রক্তপাত শেষে
চেয়েছিল অনন্ত শান্তির সরোবরে
প্রেমিক পদ্মের মতো সুগন্ধ ছড়িয়ে ফুটতে।
হায়, যারা তা হতে দেয়নি,
যারা ভূলুণ্ঠিত করেছে আমার কবিতার
এই নিষ্পাপ স্বপ্নকে,
যারা আমার কোমল হৃদয়ের বৃন্ত থেকে
ছিনিয়ে এনেছে
এই পাথরকঠিন পঙ্ক্তিমালা,
আমার ঘৃণায় যেন লেখা হয় তাদের বিনাশ,
যেন সাঙ্গ হয় অসুরের পালা …।

(দূর হ দুঃশাসন)
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩।
কবিতাটি ভিয়েতনামের হোচিমিন সিটিতে রচিত।
মহানন্দে যৌবন ফুরালো

তোমার যা-কিছু তোমার,
আমার যা-কিছু আমার।
জন্ম হওয়ার পর থেকে
সব এরকমই তো ছিলো।
তারপর পরস্পরের ধন
আপনার করে নিতে
সঙ্গমে সম্মতি দিতে
কখন যে আসিল যৌবন!
যৌবন এসে আমাদের সব
উলোট-পালোট করে দিলো।
তোমার যা-কিছু আমার,
আর আমার যা-কিছু-
কখন তোমার হয়ে গেলো!
বুঝতে না বুঝতেই, মহানন্দে
আমাদের যৌবন ফুরালো।

২৮ নভেম্বর ২০২৩

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়