মাদকবিরোধী অভিযান : রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ২০

আগের সংবাদ

ভোগান্তি মেনেই ঘরে ফেরা : ঈদযাত্রা

পরের সংবাদ

জলিরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্প : দূর থেকে দেখে মনে হয় নতুন কোনো শহর

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাজী ওহিদ, মুকসুদপুর (গোপালগঞ্জ) থেকে : মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গড়ে ওঠা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলো দূর থেকে দেখে মনে হয় নতুন কোনো শহরের ঠিকানা। একের পর এক দাঁড়িয়ে থাকা প্রকল্পের রংবেরঙের ঘরগুলো ইতোমধ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে পথচারীদের। আর এগুলো সম্ভব হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও কঠোর নজরদারির কারণে।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ে প্রথম ধাপ পর্যন্ত নির্মাণ হয়েছে ৫২৫টি ঘর। যা ইতোমধ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের ২য় ধাপে ২৩৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন করা হলেও অবশিষ্ট ঘরগুলো গুণগত মান ঠিক রেখে নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এদিকে চতুর্থ পর্যায়ে পঞ্চম ধাপে আরো ১০২টি ঘরের নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীন ২ শতক জমি, টয়লেট ও রান্নাঘরসহ ২ রুমের ঘর পাবেন। এছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানি সরবরাহসহ পরিবারগুলোকে কর্মসংস্থানে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার পৃথক উদ্যোগ নিয়েছে মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানান, প্রকল্পের ঘরগুলো এখন মানসম্মতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘর তৈরিতে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তদারকির কারণে নির্মাণকাজ মানসম্মত হচ্ছে। জলিরপাড় ইউনিয়নে একসঙ্গে অনেকগুলো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করায় প্রকল্পটির সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে। ছোট ছোট ঘরগুলোতে উন্নত মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় দীর্ঘস্থায়ী হবে। অসহায় মানুষগুলো তাদের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে রঙিন এ ঘরে বসবাস করবেন।
জলিরপাড় ইউনিয়নের জলিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা বিলকিস বেগম জানান, স্বামী মারা গেছে, নিজের কোনো জমি ও ঘরবাড়ি নেই। তাই অসহায় হয়ে মেয়ের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। কোথাও কোনো ঠাঁই না পেয়ে আশ্রয়ণের ঘর পেতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। সরকারি পাকা ঘরের স্বপ্ন দেখি আর ভাবতে থাকি আমার কপালে কবে জুটবে ইটের বাড়ি। সরকারি অফিসে যোগাযোগের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে একটি ঘর আমি বরাদ্দ পেয়েছি। ঘর পেয়ে আমি খুব খুশি। আমার কিছু থাক বা না থাক, এখন আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। জলিরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়ে তৃতীয় লিঙ্গের সোনা মিয়া জানান, আগের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোর চেয়ে বর্তমানের ঘরগুলো নিখুঁতভাবে তৈরি করা হচ্ছে। ১শ বছরেও এ ঘরগুলোর কিছুই হবে না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উপহার পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ফাইজুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে মানসম্মত নির্মাণসামগ্রী দিয়ে। কাজের গুনগতমান ঠিক রাখতে আমিসহ অফিসের লোকজন সব কাজ তদারকি করছেন। নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ভূমিহীনও গৃহহীন পরিবারগুলোর কাছে দলিলমূলে হস্তান্তর করা হবে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের স্বপ্নপূরণ করতে উন্নতমানের গৃহ নির্মাণ করে তাদের উপহার দিতে চাই। প্রতিটি ঘরের জন্য ভালোমানের মালামাল সরবরাহ করা হয়। দক্ষ রাজমিস্ত্রি ও সরকারের গৃহীত নকশা অনুযায়ী ঘরগুলো নির্মাণের চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ঘরগুলো আগের ঘরের চেয়ে মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো সুন্দর করতে সবসময়ই তদারকি করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ যাতে স্বাচ্ছন্দে সুন্দরভাবে ওই ঘরে জীবনযাপন করতে পারেন সেই লক্ষ্য কাজ করছে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় আমরা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আবেদন সংগ্রহের পর যাচাই-বাছাই- এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ-২-এর ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করে আসছি। পর্যায়ক্রমে এ উপজেলার সব ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উপহারের পর এ উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘরপ্রাপ্তি শতভাগ ঘোষণা করার চেষ্টা করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়