আজকের খেলা

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

পরের সংবাদ

মধ্যনগরে শিক্ষার্থীদের জড়ানো হচ্ছে চোরাকারবারে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাসেল আহমদ, মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) থেকে : মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে চোরাচালান কাজে পড়ছে। কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীকের টাকার প্রলোভনে ফেলে চোরাচালানের পণ্য পাচার কাজে ব্যবহার করছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। অল্প বয়সে আয়ের পথ উন্মোচিত হওয়ায় এসব শিশু-কিশোর স্কুল-মাদ্রাসা বিমুখ হয়ে পড়ছে। ফলে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে। চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা অভিভাবক ও শিক্ষকদের শাসন মানছে না। রাস্তা-ঘাটেও এদের বেপরোয়া চলাফেরা লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, সীমান্তবর্তী বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ঝরেপড়ার হার প্রায় ২০ শতাংশ। আবার ঝরেপড়াদের মধ্যে ৮০ শতাংশই ছাত্র। ঝরেপড়া এসব ছাত্রের বেশিরভাগই চিনি ও সুপারিসহ চোরাচালান পণ্য পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়েছে। আবার অনেকেই বেশি টাকার লোভে সর্বনাশা মাদক সরবরাহ কাজেও জড়িত হয়ে পড়েছে।
ওই ইউনিয়নের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টজনেরা শিক্ষার্থীদের চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমার বিদ্যালয়ের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী চোরাচালান কাজে জড়িত রয়েছে বলে জেনেছি। তবে মাদ্রাসা ও হাইস্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অনেকেই চোরাচালানের পণ্য সরবরাহ কাজে জড়িত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সীমান্তে চোরাচালানের কাজে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে ভাগ করে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রথম দফায় এরা নোম্যানস ল্যান্ড থেকে স্কুলব্যাগে মাদক অথবা বাইসাইকেলে বেঁধে চিনির বস্তা এনে চোরাকারবারি মাফিয়াদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়। দ্বিতীয় দফায় একই কায়দায় বাংলাদেশ থেকে সুপারি ও নানা জাতের পণ্য সীমান্তের ওইপাড়ে ভারতীয় এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে। চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের প্রথম টার্গেট হলো স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। কারণ এদের স্কুলব্যাগ কেউ সহজে তল্লাশি করে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লে অপ্রাপ্ত বয়সি ও শিক্ষার্থী হিসেবে ছাড়া পেয়ে থাকে। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, চোরাকারবারে নিয়োজিত শিশু-কিশোরের অনেকেই গত দুই-তিন বছরে নিজেরাও হয়ে উঠেছে একেক জন চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্য। কমবয়সি এসব সিন্ডিকেট সদস্য স্কুল-মাদ্রাসায় পড়ুয়া সমবয়সি শিক্ষার্থীদের নগদ টাকার প্রলোভন দিয়ে চোরাচালান পণ্য সরবরাহ কাজে জড়িত করে থাকে। স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চোরাচালান কাজে জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ভয়ঙ্কর ও আপত্তিজনক উল্লেখ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুল কবীর বলেন, এঅবস্থা চলতে দেয়া যায় না। আমি ঈদের পরেই ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকার সুশীল ব্যক্তিদের নিয়ে সভা করব। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চোরাকারবারিদের হাত থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের রক্ষার জন্য যা করা দরকার তা করব। মধ্যনগর থানার ওসি মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, কম বয়সী স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চোরাকারবারে জড়িত করার বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে। আমি অচিরেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেব। পুলিশ সীমান্তের চোরাচালান বন্ধের জন্য বদ্ধপরিকর। চোরাচালান, মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যনগর থানা পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়