আজকের খেলা

আগের সংবাদ

পাহাড়ে সন্ত্রাস নির্মূল হোক

পরের সংবাদ

চিরিরবন্দরে একটি সেতুর অভাবে অর্ধলাখ মানুষের দুর্ভোগ : জরাজীর্ণ রেলসেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুস সালাম, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) থেকে : চিরিরবন্দরের কাউগাঁওয়ে আত্রাই নদীর ওপর সেতু না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অর্ধলাখ মানুষ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জরাজীর্ণ রেলসেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। এই রেলসেতু থেকে পড়ে গিয়ে কয়েকজন নিহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে এখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আত্রাই নদীর ওপর জরাজীর্ণ একটি রেলসেতু রয়েছে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮০ মিটার। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ইতোমধ্যে এর পাশেই নতুন একটি রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। তবে নদীর দুই পারের মানুষ পুরনো পরিত্যক্ত সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছেন। শহরের কাছাকাছি হওয়ায় সময় বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে রেলসেতু পারাপার হচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে এই রেলসেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন তারা। রেলসেতুর লাগোয়া একটি সাধারণ সেতু করার জন্য একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন তারা। পেয়েছেন আশ্বাসও। কিন্তু সেতু নির্মাণ হয়নি। কাউগাঁ মালার মোড় থেকে দিনাজপুর শহর মাত্র সাত কিলোমিটার। অথচ ওই এলাকার মানুষকে চিকিৎসা কিংবা জরুরি প্রয়োজনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে শহরে আসতে হয়। ফলে সময় বাঁচাতে ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতুটিই এক মাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।
কাউগাঁ এলাকায় দিনাজপুর সদর উপজেলা ও চিরিরবন্দর উপজেলাকে বিভক্ত করেছে আত্রাই নদী। নদীর ওপর দিয়ে গেছে দিনাজপুর-ঢাকা রেলপথ। নদীর উভয় পারে বড়গ্রাম, বড়বাউল, গলাহার, ভাদরা, মুন্সীপাড়া, বাবুর বাজার, নানিয়াটিকর, রামদেবপুর, গালতর, আরজি গলাহার, ঢাকাইয়াপাড়া গ্রামে ৫০ থেকে ৬০ হাজার লোকের বসবাস। এসব এলাকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত। ফলে শুধু মানুষ চলাচলই নয়, উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে এনে বিক্রি করতেও ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। গত ২৪ মার্চ সংশ্লিষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ১৮০ মিটার রেলসেতু। সদর উপজেলার মোহনপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতারা এলাকায় রাবার ড্যাম নির্মাণের কারণে আত্রাইয়ে পানিও কম নয়। পানি থেকে সেতুর উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। রেললাইনের মাঝে সিøপারের জায়গায় সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল ও সাইকেলের চাকা রেললাইনের ওপর রেখে ঢালাইয়ের ওপর দিয়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছে মানুষ।
অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক বলেন, অনেক বছর ধরে একটি সেতুর জন্য অপেক্ষা করছে এই এলাকার মানুষ। রেলসেতুর ওপর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কয়েকজনের মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। সর্বশেষ প্রায় চার মাস আগে মোটরসাইকেল রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে নিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এখানে সেতু না থাকায় জরুরি কোনো রোগীকে হাসপাতালে নেয়া যায় না। হাসপাতালে নিতে হলে পাঁচবাড়ি কিংবা খুনিয়াদীঘি হয়ে কমপক্ষে ১৫ কিলোমিটার বেশি রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। অথচ মালার মোড় থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মাত্র ৬ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ রেলওয়ে দিনাজপুরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার বলেন, কাউগাঁও রেলসেতুসংলগ্ন সাধারণ সেতু নির্মাণে রেল কর্তৃপক্ষের কোনো পরিকল্পনা নেই। এ ধরনের সেতু নির্মাণে সরকারের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করে।
চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান বলেন, কাউগাঁ এলাকায় রেলসেতুর সঙ্গে লাগোয়া একটি সাধারণ সেতু নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়