সায়মা ওয়াজেদের কারণে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে : বাহাউদ্দিন নাছিম

আগের সংবাদ

পাহাড় জনপদে আতঙ্কের ঢেউ

পরের সংবাদ

বয়স্ক-বিধবা ভাতা ও বৃত্তির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ : র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার ৯ প্রতারক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, অসহায়, দুস্থ মানুষদের বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা দেয়ার নামে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সংস্থাটি বলছে, এ চক্র মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টদের সঙ্গেও প্রতারণা করতেন। তাদের কাছ থেকে পিন নম্বর কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কক্সবাজার এলাকার প্রতারণা চক্রের হোতা ইসমাইল মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই ইব্রাহীম মাতুব্বর, তাদের সহযোগী মানিক ওরফে মতিউর রহমান ও সিনবাদ হোসেন। আর কেরাণীগঞ্জ ও নারাণগঞ্জ এলাকার প্রতারণার চক্রের হোতা সুমন ইসলাম, মাহমুদুল হাসান পলক, সাব্বির খন্দকার, মো. সাকিব ও রাসেল তালুকদার। তাদের কাছ থেকে ৩৬টি মোবাইল ফোন, ১২৬টি সিম কার্ড, ১০৪ পিস ইয়াবা ও নগদ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গতকাল বুধবার রাজধানী কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, কক্সবাজার জেলার পেকুয়া থানার বাসিন্দা ভুক্তভোগী ইসতাহাদ উদ্দিন সোহানকে (১৯) গত ২২ মার্চ ফোন দিয়ে তার মোবাইল নম্বরে উপবৃত্তির টাকা পাঠানোর কথা বলে কৌশলে বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে নেয় কে বা কারা। পরে তার হিসাব নম্বর থেকে ৩৮ হাজার ২৫৮ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি পেকুয়া থানায় একটি জিডি করেন। তার দুদিন পর ২৪ মার্চ একই এলাকার আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসের একই কায়দায় ২০ হাজার ৪০০ টাকা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকার লোকমান হোসেনের কাছ থেকে তার ছেলের নামে উপবৃত্তির কথা বলে ১৬ হাজার ৩০০ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি আব্দুল মোমিন নামে একজন প্রতারণার মাধ্যমে ৪২ হাজার ৭৭৭ টাকা খোয়ান। পরে তিনি ঢাকার ডেমরা থানায় একটি জিডি করেন।
র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক ফরিদ বলেন, গ্রেপ্তার ইসমাইল মাতুব্বর সাধারণ মানুষকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও উপবৃত্তি দেয়ার নামে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারিত করে অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রটির মূল হোতা। তার নেতৃত্বে পরস্পর যোগসাজশে চক্রটি প্রায় দুই বছর ধরে প্রতারণা করে আসছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, তারা প্রথমে ওয়েবসাইট থেকে উপবৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকা সংগ্রহ করেন। পরে ক্লোন করা মোবাইল নম্বর তৈরি করে ভুক্তভোগীদের ফোন করেন ইসমাইল। এ সময় তিনি নিজেকে শিক্ষা অধিদপ্তর ও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও উপবৃত্তি দেয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করতেন। পরে কৌশলে তাদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওটিপি ও পিন নম্বর হাতিয়ে নিয়ে হিসাব নম্বর হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিতেন। এছাড়া তারা এসব হিসাব নম্বর নিজেদের মোবাইলে লগইন করে রাখতেন। এসব হিসাব নম্বরে টাকা আসা মাত্রই ইসমাইল তার সহযোগী ইব্রাহীম, মানিক ও সিনবাদের হিসাব নম্বরে সরিয়ে নিতেন। পরে সিনবাদ দূরবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে সেই টাকা উঠিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা করতেন। গত এক বছরে প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে তারা।
মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টদের হাজারে ৪ টাকার পরিবর্তে ৮-১০ টাকা লাভ করার বিভিন্ন অফার দিতেন। এক্ষেত্রে এজেন্টরা অফার সম্পর্কে অবগত নন বললে ইসমাইলের সহযোগী সুমন তাদের কাছ থেকে সার্ভিস রিপ্রেজেনটেটিভের (এসআর) ফোন নম্বর নিয়ে ক্লোন করতেন। পরে সেই নম্বর দিয়ে এজেন্টদেরই ফোন করে এসআর পরিচয় দিয়ে বলতেন তিনি আমাদের বস। যেভাবে বলে ওই সেভাবেই কাজ করেন। তারপর সুমন মোবাইলে ওটিপি পাঠিয়ে কৌশলে এজেন্টদের কাছ থেকে হিসাব নম্বরের পাসওয়ার্ডটি হাতিয়ে নিতেন। গ্রেপ্তার আসামিদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়