মুহাম্মাদ আবু মুসা, গাবতলী (বগুড়া) থেকে : গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। দলীয় কোনো প্রতীক না থাকা এবং দল থেকে প্রার্থী উন্মুক্ত করে দেয়ায় একাধিক প্রার্থী হচ্ছেন। অপরদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির কোনো সাড়া নেই।
গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিলটন ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক নতুন জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ডামি নির্বাচনের সরকারের অধীনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নেব না। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিন পদেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, বন্দর ও জনবহুল এলাকায় গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়, দোয়া প্রার্থনা ও লিফলেট বিতরণ করে গণসংযোগ করছেন। এরই মধ্যে ২১ মার্চ নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। যা প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলায় আগামী ৮ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রথম ধাপেই রয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা ছাড়াও গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ফলে তিন পদের প্রার্থীরা আরো নড়েচড়ে বসেছেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে প্রার্থীরা নানা কৌশলে কাজ করছেন।
গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং মোহাম্মাদ হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ অরুন কান্তি রায় সিটন, বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল্লাহেল বাকী পাইকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাহানুর ইসলাম সাকিল, সেনাবাহিনীর নন-কমিশন অফিসার (অব.) আতাউর রহমান রানু। এছাড়া গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম ভূলনও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম মুক্তা, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব মিঠু পাইকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সোন্দাবাড়ী আজাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মিলটন হোসাইন।
এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেকসেনা আকতার, সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক পাপিয়া রাজ্জাক, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামীমা আকতার সুমি এবং মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেরদৌসী বেগম আলোচনায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিন আগামী ১৫ এপ্রিলের আগে সাংবাদিকদের কাছে কোনো বক্তব্য দেবেন না বলে জানান। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃষিবিদ অরুন কান্তি রায় সিটন জানান, আমি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের বেশ সাড়া পেয়েছি। ফলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আরেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহেল বাকী পাইকার জানান, আমি মাঠের মানুষ, গত সংসদ নির্বাচনসহ আগে আরো অন্যান্য নির্বাচনে মাঠে থেকে কাজ করেছি এবং বর্তমানেও মাঠে থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জানতে পেরেছি, মানুষ এবার পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনে আমাকে জনগণ বেছে নেবে ইনশাআল্লাহ।
বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মুক্তা বলেন, আমি ৫ বছর দায়িত্ব পালনকালে মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আগামীতেও ভালো ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকতে চাই। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা মিলটন হোসাইন জানান, উপজেলাবাসীর জন্য কাজ করতে প্রার্থী হতে চাই।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী রেকসেনা আকতার এবং প্রার্থী নাজমা বেগম পৃথকভাবে জানান, আমরা মানুষের পাশে থেকে কাজ করে আসছি। যে কারণে রেকসেনা ও নাজমা উভয়ই বিজয়ের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাবতলী উপজেলা। গাবতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে এ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ২লাখ ৮০ হাজার ৯২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪১ হাজার ৩২৩ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৫ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন।