মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

বন্দরনগরীর ইফতারে নবাবিয়ানা : অলিগলি-ফুটপাত সবখানেই বাহারি খাবারের পসরা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : ভোজন রসিক হিসাবে খ্যাত চট্টগ্রামবাসীর রোজার প্রাত্যহিক ইফতারে থাকে নানা পদের ইফতারসামগ্রী। মেজবানী গোস্ত, জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজু, রোল, কাবাব, শর্মা, চিকেন সাসলিক, চিকেন মাসরুম, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, দইবড়া, বেলের জুস, হালিম, চুমকি হালুয়া, বিফ বিরিয়ানি, ফিরনি, মাটন হালিমসহ নানা পদের ইফতারসামগ্রীর আয়োজনে ইফতারের বাজার সরগরম। ইফতারের জগতে এমন নবাবীয়ানা যেন আর কোথাও নেই।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অলিগলি, ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত হোটেল- রেস্টুরেন্টে সর্বত্র বাহারি ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসছেন বিক্রেতারা। প্রতিদিন দুপুরের আগে থেকে দোকানগুলোয় বিভিন্ন মুখোরোচক খাবারের পদে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। বিকাল গড়াতেই শুরু হয় বেচাকেনা। দম ফেলানোর সময় নেই ইফতার সামগ্রীর দোকানিদের।
রমজান মাস ঘিরে বিশেষ বুফে ইফতার ও ডিনারের আয়োজন করেছে পাঁচ তারকা হোটেল র‌্যাডিসন ব্লæ। পরিবেশন করা হচ্ছে সুস্বাদু নানা রকম অ্যারাবিয়ান খাবার। বৈচিত্র্যময় খাবারের মধ্যে রয়েছে মাটন বুখারি, অ্যারাবিক মাটন/চিকেন কাবসা, পাস্তা আরাবিয়াটা, বিফ দাউদ বাশাসহ নানা রকমের আইটেম। এছাড়াও রয়েছে বিফ মেজবানি কারি, স্পেশাল জিলাপি, মাটন আখনি বিরিয়ানি, স্পেশাল স্যুপ, নানারকম সালাদ, খাসির হালিম, আফগানি কাবাবসহ আরো অনেক আয়োজন। নামকরা অ্যারাবিয়ান মিষ্টি যেমন কুনাফা, বাসবুসা, বালাশাম, বাকলাওয়া, মাহলাবিয়া এর মতো আরো নানাবিধ আয়োজন।
নগরের অভিজাত হোটেল দি পেনিনসুলা চিটাগাংয়ে রমজান মাসজুড়ে চলছে রাজকীয় ইফতার আয়োজন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শেফ কেএডিজে মিলরয় নানায়াক্কারার তত্ত্বাবধানে শতাধিক পদের বিশেষায়িত, ঐতিহ্যবাহী ও বৈচিত্র্যময় রন্ধনশৈলী উপস্থাপন করছে পেনিনসুলা। অথেনটিক স্বাদ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবেশন করা হচ্ছে ইফতার ও সাহরি। ১ হাজার ১০০ টাকায় টেকঅ্যাওয়ে ইফতার বক্সে মিলবে পেনিনসুলার মজাদার ইফতার আইটেম। এবার ৯০০ টাকায় ট্র্যাডিশনাল প্লেটার, ১ হাজার ৩০০ টাকায় কন্টিনেন্টাল প্লেটার, ১ হাজার ৬০০ টাকায় পেনিনসুলা প্লেটার পাবেন অতিথিরা। পেনিনসুলার সিরাস ফাইন ডাইনিংয়ে ১ হাজার ৯০০ টাকায় সিরাস প্লেটার এবং ওজন লাউঞ্জের দরবার হলে স্পেশাল ইন্ডিয়ান ওজোন ইফতার প্লেটার থাকছে প্রতিদিন। পেনিনসুলার করপোরেট ইফতার বক্স শুরু ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। ইফতার শুরু হয় ৯০০ টাকায়। টেকঅ্যাওয়ে, প্লেটারের পাশাপাশি পেনিনসুলার লেগুনা রেস্টুরেন্টে (লেবেল-৫) শতাধিক পদের দেশি, উপমহাদেশীয় ও আন্তর্জাতিক খাবারে সাজানো ব্যুফে ইফতার ও ডিনার থাকছে প্রতিদিন। ৩ হাজার ৯০০ টাকায় (অল ইনক্লুসিভ) লেগুনার এ ব্যুফে নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ডধারীরা বাই ওয়ান গেট থ্রি অফার পাবেন।
আগ্রাবাদ হোটেলে বাংলাদেশি খাবারের বাইরে দই জিরা পানি, হালিম আখরি, ল্যাম্বা শর্মা, চিকেন শর্মাসহ দেশি বিদেশি ৪৫ আইটেম ইফতারির আয়োজন করেছে। হোটেল অ্যামব্রোসিয়ায় পার্সিয়ান হালিম, অ্যারাবিয়ান কাবাব, গোল্ডেন ফ্রাইড প্রন, দই বড়া, রেশমি জিলাপি, পাটিসাপটা, ছানামঞ্জুরি, লালমোহন, টার্কিজ শর্মাসহ বাহারি নবাবী খাবার ইফতারে পরিবেশন করা হচ্ছে। দাম একটু বেশি হলেও স্বাদে-মানে অতুলনীয়। সিলভার স্পুনে ইফতারির আয়োজনে রয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানি গোস্ত। এছাড়া বিরিয়ানি, হালিম, ম্যাংগো লাচ্ছিসহ রকমারি ইফতারের মেন্যু রয়েছে। ইফতারের পসরায় পিছিয়ে নেই হোটেল পিটস্টপে। তাদের আয়োজনের রয়েছে চিকেন সালসিক, চিকেন টোস্ট, চিকেন মাসরুম, বিফ হাফ মুন, ফ্্রাইড চিকেনসহ নানা আইটেম। জিইসির মোড়ের ওয়েল ফুড-এ রয়েছে ৪০ আইটেমের ইফতারি। তার মধ্যে বিফ বিরিয়ানি, চিকেন শর্মা, চিকেন তন্দুরি, ছানার রোল, বিফ বিরিয়ানি, চিকেন পরাটা। চট্টগ্রামের অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলোর একটি উইন্ড অব চেঞ্জ। সেখানে বিফ তেহারি, তুর্কি বিরিয়ানি, স্টিম রাইস, লাচ্ছা পরোটা, চিকেন মাসালা, বিফ আলুগোস, ডাল বাটার ফ্রাইসহ কী নেই সেখানে।
এছাড়া নগরীর জামালখান, নিউমার্কেট, চকবাজার, আগ্রাবাদ, বন্দর, জিইসির মোড়, মুরাদপুর, খুলশী এলাকায় অভিজাত রোস্তোরাঁ ও হোটেলগুলোতে দেশি-বিদেশি ইফতারি আইটেম বিক্রি হচ্ছে। কুটুমবাড়ি কাবাব অ্যান্ড বিরিয়ানি, রেড চিলি, রয়েল হাট, রোদেলা

বিকাল, দারুল কাবাব, খোয়াজা হোটেল, দি কিচেন রেস্টুরেন্ট, সরিষা বাড়ি, কুক আউটসহ বেশির ভাগ সব রেস্তোরাঁয় নানা আয়োজন। ভিড়ও লক্ষণীয়।
এছাড়া নগরের বিভিন্ন এলাকায় নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে ইফতারির আইটেম বিক্রি হতে দেখা গেছে। চট্টগ্রামে ইফতার সামগ্রির মধ্যে বেশিরভাগ আইটেমে তৎকালীন নবাবীয়ানা লক্ষ্যণীয়। নগরের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, স্থায়ী দোকানগুলোর পাশাপাশি অস্থায়ীভাবে ইফতারের আইটেম নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। বেচাকেনাও বেশ ভালো। নবাবী ইফতারের পাশাপাশি পথের ধারে গড়ে উঠা ইফতারের দোকানগুলোতে বিকাল থেকে বেচাকেনার ধুম পড়ে যায়। বাহারি নামে ইফতারসামগ্রী তৈরি করে দোকানিরা বিক্রি করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়