মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

পছন্দের শীর্ষে সিগতাই নাগরা, লোফার : নতুন জুতায় ঈদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুমানা জামান : ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ জুতা। কখনো বা পোশাককে ছাপিয়ে জুতাও হয়ে ওঠে মুখ্য। উৎসব আর উপলক্ষে নতুন জুতার আকাক্সক্ষা থাকে সবার। ঈদ হলে তো কথাই নেই। পোশাকের সঙ্গে যোগ হয় জুতার ট্রেন্ড। উভয়ে মিলে সম্পূর্ণ করে স্টাইল স্টেটমেন্ট। তাইতো পোশাক কেনা শেষে অনেকেই এখন জুতা কিনতে দোকানে ছুটছেন।
এবারের ঈদে মেয়েদের সবচেয়ে পছন্দ নতুন ডিজাইনের নজরকাড়া জুতা ‘সিগতাই’। হালকা হিলের সঙ্গে পেছনে বেল্ট, সামনের দিকে মোড়ানো জরি ও পুঁতির কারুকাজ করা নাগড়া স্টাইলের এই জুতার দাম ৭শ থেকে ২ হাজার টাকা। এ ছাড়াও হাই-হিল, স্লিকার্স ও জরি-পুঁতির কাজ করা জয়পুরি নাগড়া, স্লিপার ও ছেলেদের ফরমাল জুতা ও নাগরা দেদারসে বিক্রি হচ্ছে।
মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের রুচি আর চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের নিজস্ব ধারাতেই স্যান্ডেলের ডিজাইন করেছে ফ্যাশন হাউস আর কোম্পানিগুলো। গত বছরগুলোর তুলনায় এবার জুতার দাম বেশি হলেও উন্নত মান, ডিজাইন ও টেকসইয়ের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে জুতা তৈরি হয়েছে। রঙেও পরিবর্তন এসেছে। গৎবাঁধা কালো বা চকলেট রঙের জুতার পরিবর্তে হালকা শাইনি বা অ্যান্টিক রং বেশি জনপ্রিয়। বিশেষ করে স্যান্ডেলের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন বেশি দেখা যাচ্ছে। অ্যান্টিক সোনালি, রুপালি, মেরুন, টার্কোয়েজ, সাদা, বেইজ, বেনসন কালারের জুতা-স্যান্ডেলই এ সময়ের ফ্যাশন সচেতনদের বেশি পছন্দের।
রঙের বৈচিত্র্য মিলছে ছেলেদের পায়েও। হাল ফ্যাশনে এবারো রয়েছে পাঞ্জাবি ও কাবলির সঙ্গে লোফার বা স্নিকার্স পরার চল।

ক্যাজুয়াল ও ফরমাল- দুই ধরনের সংগ্রহ থাকছে ব্র্যান্ড শপ আর রকমারি জুতার দোকানগুলোয়। দেশীয় লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডগুলোও তৈরি করছে বিশেষ ধরনের লোফার। এ ছাড়া জুতার আরো একটি ধরন বেশ জনপ্রিয়। এর নাম সাইকেল শু। স্যান্ডেল ও লোফারের মিশেলে করা এই জুতা বেশ কয়েক বছর ধরেই আছে চলতি ট্রেন্ডে। এই জুতাগুলো খাঁটি চামড়ায় তৈরি বলে বেশ আরামদায়ক।
মেয়েদের বেশির ভাগই এখন ফ্ল্যাট ও চটি স্যান্ডেল। পুঁতি, চুমকি, পাথর, বিডস দিয়ে তৈরি নান্দনিক ডিজাইনের চটি স্যান্ডেল ও নাগড়া চলছে। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস, জিনস বা স্কার্টের সঙ্গে এ ধরনের জুতা বেশ মানানসই। এগুলোর মধ্যে নানা ধরনের অ্যাম্বেলিশমেন্ট দেখা যাচ্ছে। বরাবরের মতো কোলাপুরি স্যান্ডেলগুলো বাজারে এসেছে নতুন রূপে। পেছনে চেইন দিয়ে আটকানো বড় পাথরের ব্যবহারে ফুলের নকশা করা হাই-হিল স্যান্ডেলগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। জুতায় জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে করা হয়েছে কারচুপির কাজ। এ ছাড়া চোখে পড়ে বড় পাথরের ব্যবহারে ফুলের নকশা করা স্যান্ডেল। ফিতার বুননে কোলাপুরি স্যান্ডেলও পাওয়া যাচ্ছে মার্কেটে। ক্ল্যাসিক ফ্যাশনের ধারায় কোলাপুরি এ স্যান্ডেলগুলো কখনো পুরনো হয় না।
যারা উচ্চতায় খানিকটা কম তাদের জন্য রয়েছে বরাবরের মতোই হিলওয়ালা জুতা। মেয়েদের জুতায় হিল রয়েছে বিভিন্ন মাপের। তবে দেড় ইঞ্চি বা দুই ইঞ্চি হিলই বেশি। মেয়েদের স্টাইল স্টেটমেন্টের দিকে লক্ষ্য রেখে দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড আড়ং, সেইলর, লা রিভ, নয়্যার, অঞ্জন’স, কে ক্রাফট পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের স্যান্ডেল। বিশেষ করে উৎসবগুলোয়। এমনকি নিজস্ব ধারাতেই স্যান্ডেলের ডিজাইন করে প্রতিটি ব্র্যান্ড।
রাজধানীর গাউছিয়া মাকের্টের তৃতীয় তলায় ‘আনস সু’তে জুতা কিনছিলেন সুরাইয়া নওমি। একের পর এক জুতা পায়ে পড়ছেন আর দেখছেন। কোনোটাই মনে ধরছে না। অবশেষে জরি পাথরের নকশা করা জমকালো গোল্ডেন কালারের নাগরা কিনলেন ১৫শ টাকা দিয়ে। ঈদের নতুন জুতা কিনে কেমন লাগল? প্রশ্ন করতেই হেসে দিলেন নওমি। ভোরের কাগজকে বললেন, শাড়ি, জামা, টপস সবকিছুর সঙ্গে ম্যাচ করেই জুতা কিনতে এসেছি। বেশ সুন্দর জুতা এসেছে এবার। ‘আসন সু’ কর্ণধার রোমান বলেন, এবার জুতার বাজারে দামের প্রভাব পড়েনি। ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই সব ডিজাইনের জুতা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, ফ্ল্যাট জুতা বেশি চলছে। দাম ৮শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর এলিফেন্ট রোডে একটি জুতার শো রুমে নুবাইসা ফেরদৌস এসেছেন মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই পরিবারের সবার জুতা একসঙ্গে কিনতে এখানে আসি। কারণ অনেক ডিজাইনের জুতা রয়েছে এখানে। তবে এবার জুতার দাম একেবারেই নাগালের বাইরে। বেশ দর-দাম করে নিজের জন্য ১৫শ টাকা দিয়ে হাই-হিল ও ছেলেমেয়ের জন্য একসঙ্গে ৩ হাজার টাকা দিয়ে স্লিকার্স কিনলেন নুবাইসা।
ফ্যাশন ট্রেন্ডের দিকে খেয়াল রেখে জুতার ব্র্যান্ডগুলো তৈরি করেছে কাপড়ের জুতা। ছোট বড় বুনন আর কাঁথার ফোঁড়ের সমন্বয়ে তৈরি জুতাগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। এবারের ঈদে বাটা, এ্যাপেক্স, বে এম্পোরিয়ামের মতো ব্র্যান্ডগুলোর আয়োজন বরাবরের মতো বৈচিত্র্যময়। রং বেরঙের চামড়ার ব্যবহারে বেনি করা বা চামড়ার ফুলে তৈরি ডিজাইনের বাহারি স্যান্ডেল দেখা গেছে। কোনোটিতে জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে করা হয়েছে কারচুপি ও পার্লের কাজ। কোনোটিতে বসানো হয়েছে ছোট ঘুঙুর। সব বয়সের নারী-পুরুষ ও বাচ্চাদের জুতায় রঙের উজ্জ্বলতা প্রাধান্য পাচ্ছে। গিøটার বেজড কিছু ম্যাটেরিয়াল রয়েছে এসব ব্র্যান্ডের মেয়েদের জুতায়। চামড়ার বাইরেও কাপড়, পুঁতি, বিডস দিয়ে তৈরি নান্দনিক ডিজাইনের জুতাও রয়েছে।
দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কোম্পানি বাটার এলিফ্যান্ট রোডের শো-রুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। আগে গড়ে প্রতিদিন বিক্রি হতো ৩ লাখ টাকা। এখন ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা আমাদের ব্রাঞ্চেই বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে আগামী ৭ দিন বিক্রি আরো বাড়বে। এবার আমাদের নতুন অনেক ডিজাইনের জুতা এসেছে, এতে দারুণ সাড়া পাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়