মোহাম্মদপুরে ২৫ দিন ধরে শিকলে বেঁধে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

আগের সংবাদ

পাল্টে যাচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা : শিখনকালীন ৪০ শতাংশ, ৩০ নম্বর হাতেকলমে এবং ৩০ নম্বর সামষ্টিক মূল্যায়ন

পরের সংবাদ

তিস্তা শুকিয়ে খাল, কাউনিয়ায় জেলে ও মাঝিদের দুর্দিন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গৌতম সরকার, কাউনিয়া (রংপুর) : কাউনিয়ায় এক সময়ের খরস্রোতা তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় হাজারো মৎস্যজীবী ও মাঝি বেকার হয়ে পড়েছে। সরজমিন তিস্তা নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌকা চালিয়ে কাউনিয়া ও রাজারহাট এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার শত শত মাঝি জীবনজীবিকা নির্বাহ করতেন। সেই নদীর উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করায় এক সময়ের খর¯্রােতা তিস্তা এখন শুকিয়ে মরাখালে পরিণত হয়েছে। নদীকে ঘিরে কাউনিয়ার সভ্যতার ক্রমবিকাশসহ শত শত মানুষ জীবনজীবিকা নির্বাহ করত। নদীতে পানি না থাকায় কাউনিয়া থেকে রাজারহাট, কুড়িগ্রাম হয়ে চিলমারী বন্দর পর্যন্ত নৌযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নৌকার মাঝিরা বেকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কাউনিয়ার নিজপাড়া মাঝিপাড়া গ্রামের মৎস্যজীবী শীতল, সুশিলসহ অনেকে বলেন, বাপদাদার আমল থেকে তিস্তা নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ে মাছ ধরে জীবন চালিয়ে আসছি। কিন্তু বর্তমানে আর এই পেশায় থাকা যাচ্ছে না। তিস্তা নদী আর নদী নেই, চর পড়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। জীবন বাঁচাতে আমাদের অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা সত্যবাবু বলেন, আগে তিস্তা নদীতে হরেক রকমের মাছ পাওয়া যেত। তার মধ্যে বিখ্যাত ছিল বইরাতি মাছ। তিস্তার মাছ অনেক সুস্বাদু হওয়ায় কেনার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসতো আর আমরা মাছ বিক্রি করে সুখের সঙ্গে জীবন চালাতাম। এখন তিস্তা নদীতে পানি নেই আমাদের সেই দিনও আর নেই।
মাছের আড়তদার ভোলা রাম বর্মণ বলেন, একটা সময় ছিল তিস্তা নদীর মাছ কেনার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসত আড়তে। এখন নদীতে পানি নেই, সেই মাছও নেই, ক্রেতায় নেই। নদীতে মাছ না থাকায় ব্যবসা আর আগের মতো চলে না। তাই ৪-৫ জন কর্মচারীকে বাদ দিয়ে দিয়েছি, আবার অনেক ব্যবসাই বাদ দিয়েছে। নদীটি ড্রেজিং করলে হয়তো কিছু পানি থাকলে কিছু মাছ পাওয়া যেতে পারে।
পাঞ্জর ভাঙ্গা গ্রামের নৌকার মাঝি জব্বার, নুরল, কাদের, জলিল, জাহেদুলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় চার মাস ধরে নদীর পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তখন থেকে নৌকা না চলায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকারিভাবে তাদের কোনো সাহায্য সহযোগিতা করা হয় না। অনেকে বাধ্য হয়ে বাপদাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। যারা দিনমজুরির কাজ করতে পারছে না তারা বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। নদীতে পানি না থাকায় বোরো চাষও হুমকির মুখে পড়েছে। সরকার দফায় দফায় তিস্তার পানি চুক্তি ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বললেও তা বাস্তবতার মুখ দেখছে না। কাউনিয়া এলাকার সব মৎস্যজীবী ও মাঝিমাল্লাসহ সাধারণ মানুষ তিস্তা নদীর হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়