এমসিসিএইচএসএলে দুর্নীতির অভিযোগ

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে দুষ্ট চক্রের থাবা

পরের সংবাদ

মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন টেকনাফের ১০ অপহৃত

প্রকাশিত: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার (দক্ষিণ) থেকে : টেকনাফের পাহাড়ের পাশের জমিতে সবজি খেতের শ্রমিকসহ পৃথক ঘটনায় অপহৃত ১০ জনই দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। তবে পুলিশের দাবি, অভিযানের চাপের মুখে দুর্বৃত্তরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
উদ্ধারকৃতরা হলেন- টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের করাচিপাড়ার লেদু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে ফরিদ (৩৫), নাজির হোছেনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪), শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২) ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রইক্ষ্যং উত্তর পাড়ার আলী আকবরের ছেলে ছৈয়দ হোসেন ওরফে বাবুল (৩৩) একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে ফজল কাদের (৪৭), ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কম্বনিয়া পাড়ার ফিরোজের ছেলে মোহাম্মদ নুর (১৬) ও হ্নীলা ইউনিয়নের রোজারঘোনার আমির হোসনের ছেলে অলী আহমেদ (৩২)।
গত বুধবার রাত ১০টার দিকে তারা ফেরত আসেন। বিষয়টি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মোহাম্মদ শাকিল মিয়ার বাবা লেদু মিয়া। তিনি বলেন, মোহাম্মদ শাকিল মিয়াসহ ১০ জনকে গত মঙ্গল ও বুধবার সকালে পাহাড়ি এলাকায় থেকে একদল দুর্বৃত্ত অপহরণ করেন। অপহরণের পরে দুর্বৃত্তরা তাদের ছাড়তে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাদের ছেড়ে দেয়। এর আগে ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে পুলিশের টিম একাধিকবার পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করেছিল।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, দিনের পর দিন পাহাড়ি দুর্বৃত্তরা যে হারে অপহরণ বাণিজ্য শুরু করেছেন। এতে স্থানীয় কৃষক, কাঠুরিয়াসহ কোনো ব্যক্তি গরু-ছাগল নিয়ে পাহাড়ে কাছে যেতে পারছে না। নিরাপদে চলাচল করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। দুবৃর্ত্তরা সুযোগ পেলে মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গল ও বুধবারে ১০ জনকে অপহরণ করেছিল। তাদের মধ্যে কিশোর-যুবক, রাখাল ছেলে ও কাঠুরিয়া ছিল।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যা থেকে টেকনাফ থানা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ফাঁড়ির পুলিশের পাশাপাশি অভিযানে যোগ দেয় র?্যাব সদস্যরাও। এ অভিযানের একপর্যায়ে অপহৃত ১০ ভুক্তভোগীকে পাহাড়ে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারী চক্রটি। এরপর তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার আগে গতকাল বৃহস্পতিবার হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালীতে ক্ষেত পাহারা দিতে গিয়ে ৫ শ্রমিক অপহরণের শিকার হয়েছিল। পরে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার করেন। এর আগে গত শনিবার মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ বছরের এক মাদ্রাসার ছাত্রকে অপহরণ করা হলেও তাকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে গত তিন বছরের টেকনাফ উপজেলায় দেড় শতাধিক লোক অপহরণের শিকার হয়েছিল এবং অপহরণের পরে মুক্তিপণ দিতে না পারায় টমটম (ইজিবাইক) ও সিএনজি চালকসহ কক্সবাজার থেকে টেকনাফে বেড়াতে আসা তিন যুবকসহ মোট পাঁচজন অপহরণের কবলে পড়েছিল। পরে দুর্বৃত্তরা মুক্তিপণ না পেয়ে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে পাহাড়ে রেখে পালিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়