আমাদের অদম্য অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান

আগের সংবাদ

বাজার তদারকি দৃশ্যমান নয়

পরের সংবাদ

মস্কো হামলা ঘিরে যে সব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে হামলাকারী ‘সন্ত্রাসীদের’ জন্য ইউক্রেনে কারা অপেক্ষা করছিল, সেই প্রশ্নটি অনিবার্যভাবে সামনে চলে আসছে এবং এর উত্তর জানা জরুরি।
হামলা শেষে ‘সন্ত্রাসীরা’ কেন ইউক্রেনেই যাওয়ার চেষ্টা করল, সেটি নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তিনি। মস্কো হামলার বিষয়ে অনুষ্ঠিত রুশ সরকারের একটি বৈঠকে মি. পুতিন এসব কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস।
গত শুক্রবার মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে কনসার্ট শুরুর ঠিক আগে গুলিবর্ষণ শুরু করে হামলাকারীরা। পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। মস্কোয় হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার অপরাধ তদন্ত কমিটির প্রধান আলেকজান্ডার ব্যাস্ট্রিকিন। এর আগে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩৩।
অভিযুক্ত বন্দুকধারীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে, হামলার প্রস্তুতির সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাশিয়ার অপরাধ তদন্ত কমিটির প্রধান। হামলাকারীরা একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত, যে বাড়ির মালিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সব মিলিয়ে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১১ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মস্কো আদালতের আনুষ্ঠানিক টেলিগ্রাম চ্যানেলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। নামগুলো হচ্ছে : দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাক্রামি মুরোদালি রাচাবালিজোদা, শামসিদিন ফারিদুনি এবং মুহাম্মাদসোবির ফায়জভ।
মি. মিরজোয়েভ তার সব দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু আদালতে নেয়ার সময় অভিযুক্তদের সবার চেহারায় নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে। ফলে তারা যদি দোষ স্বীকারও করে থাকে, আন্তর্জাতিক রীতি অনুযায়ী সেটি খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কারণ নির্যাতনের ভয়ে অনেক সময় মানুষ অন্যায় না করেও দোষ স্বীকার করতে পারে। তখন মস্কোতে বড় কোনো জনসমাগমস্থলে হামলা হতে পারে বলে রাশিয়াকে সতর্ক করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এই সতর্ক বার্তাকে তখন ‘মিথ্যা প্রচারণা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল ক্রেমলিন।
রুশ কর্মকর্তারা এখন বলছেন যে, হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত দুজন মস্কোতে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগে রাশিয়ায় আসে।
ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা ‘আইএস-কে’ তাদের পাঠিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
যে সব প্রশ্নের উত্তর অজানা
বিবিসির নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিনিধি ফ্রাঙ্ক গার্ডনার বলছেন, মস্কো হামলার ঘটনায় এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি। যেমন- কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো না করে হামলাকারীরা ক্রোকাস হলের চারপাশে প্রায় এক ঘণ্টা কেন ইচ্ছামতো ঘোরাফেরা করল?
বিশেষ করে রাশিয়ার মতো একটি দেশে যেখানে পুলিশ এবং ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের মতো বিশেষ বাহিনী রয়েছে, সেখানে তারা কীভাবে এটি করতে পারল? হামলার আগে বন্দুকধারীদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল যেন তারা জানে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কোনো বাধা দেবে না।
তাছাড়া তাদের কাছে যে শুধু সাধারণ বন্দুকই ছিল বিষয়টি তেমন নয়, বরং আধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও ছিল।
কীভাবে তারা এটি জোগাড় করল এবং নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে তারা সেগুলো ঘটনাস্থলে নিতে সক্ষম হলো? হামলার পর তাদের দ্রুত গ্রেফতারের বিষয়টিও অনেকের কাছে বেশ অবাক করার মতো ঘটনা বলে মনে হয়েছে। ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর সদস্যরা এ ধরনের হামলা করার সময় সাধারণত শরীরে আত্মঘাতী বোমার ভেস্ট বা বেল্ট পরে যায় এবং আত্মহত্যা করে। কারণ তারা মনে করে ধরা পড়ার চেয়ে, আত্মহত্যা করাই শ্রেয়। কিন্তু মস্কোতে হামলাকারীদের ক্ষেত্রে সেটি দেখা যায়নি।
মস্কো হামলার ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে, এটি গত দুই দশকের মধ্যে রাশিয়ায় সবচেয়ে বড় হামলা। রুশ কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় বসে হামলাকারীদের এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালাল। অথচ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেটি ঠেকাতে ব্যর্থ হলো। আবার দেখা যাচ্ছে, ঘটনার পর সেই একই রুশ কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে খুব বেশি সময় নেয়নি।
সব মিলিয়ে ঘটনাটি ক্রেমলিনের তথাকথিত ‘অভ্যন্তরীণ কাজ’ বা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধের পক্ষে জনসমর্থন জোগাড় করার একটি ‘সাজানো অভিযান’ কিনা, সে বিষয়ে বিশ্লেষকদের অনেকেই সন্দেহ পোষণ করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়