‘গায়েবি’ জামিনে স্থগিতাদেশ : ‘উষ্মা’ প্রকাশ করে ডিএজির ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট

আগের সংবাদ

দুপুরের পর ‘গাড়ি চলে না’

পরের সংবাদ

থিয়েটারকে সমৃদ্ধ করেছে মুক্তিযুদ্ধের নাটক

প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

থিয়েটার বা মঞ্চনাটককে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ ফসল। স্বাধীন বাংলাদেশে নবনাট্যচর্চা শুরু হয় স্বাধীনতার পরপরই, যা বর্তমানে একটি ব্যাপক ও দর্শক-প্রিয় শিল্পমাধ্যমে পরিণত হয়েছে। দেশের প্রধান সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন নাট্যকলা বিষয় পড়ানো হয়। এ ছাড়া কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও নাট্যকলা শিক্ষাসূচির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নাট্যকলা শেখানোর জন্য দেশে কয়েকটি প্রাইভেট স্কুল নিয়মিতভাবে সক্রিয় রয়েছে। মঞ্চ-নাটকভিত্তিক একাধিক সাময়িকী বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের উদ্যোগে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়। ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে একটি বিশেষ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। স্বাধীন বাংলাদেশের মঞ্চনাটকে মুক্তিযুদ্ধ ওঠে এসেছে নানাভাবে। স্বাধীনতার পরপরই থিয়েটার নাট্যদল মঞ্চে নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। এছাড়া সৈয়দ শামসুল হকের ‘এখানে এখন’, আব্দুল্লাহ আল মামুনের রচনায় ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’, ‘তোমরাই’, ‘দেশের মানুষ’, মামুনুর রশীদের রচনায় ‘জয়জয়ন্তি’, ইনামুল হকের রচনায় ‘সেইসব দিনগুলো’, এসএম সোলায়মানের ‘এই দেশে এই বেশে’, ‘কোর্ট মার্শাল’, জহির রায়হানের ছোটগল্প অবলম্বনে মোহাম্মদ বারীর ‘সময়ের প্রয়োজনে’, নাসিরউদ্দিন ইউসুফের মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘একাত্তরের পালা’, ‘টিটোর স্বাধীনতা’, ‘ঘুম নেই’। মমতাজউদ্দিন আহমেদ রচিত ‘সাতঘাটের কানাকড়ি’, ‘কি চাহো শঙ্খচিল’, ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’, ‘বর্ণচোরা’। মান্নান হীরার ‘একাত্তরের ক্ষুদিরাম’, ‘লাল জমিন’। শামসুল আলম বকুলের ‘ঘর লোপাট’। গোলাম সরোয়ারের ‘ক্ষেতমজুর খইমুদ্দিন’। মাসুম রেজার লেখা ‘রাজাকারের প্রত্যাবর্তন’ এবং সিরাজ হায়দারের লেখা নাটক ‘আলো একটু আলো’ উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচনা করেছেন ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। এটিকে প্রথম কাব্য নাটক হিসেবেও ধরা হয়। ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ মঞ্চে আনে থিয়েটার। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আবদুল্লাহ আল-মামুন। পরবর্তীতে নবনির্মাণ করেছেন সুদীপ চক্রবর্তী। এই নাটকটিই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মঞ্চনাটকের অন্যতম। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, চার দশক আগে এই নাটকটি প্রথম মঞ্চে আসে। এই দীর্ঘ সময়ে প্রায় ৭০ জন অভিনয়শিল্পী বিভিন্ন পর্যায়ে এ নাটকে অভিনয় করেছেন। প্রথম মঞ্চায়নের পরপরই এর রচনাশৈলী, বিষয়বস্তুর জন্য দর্শকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয় নাটকটি। এক বছরের মধ্যে নিয়মিত অভিনয়ে বাংলাদেশে প্রথম সুবর্ণজয়ন্তী পালনের গৌরব অর্জন করে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে আইটিআই আয়োজিত ৫ম তৃতীয় বিশ্ব নাট্যোৎসবে ১৯৮১ সালের ২০ মার্চ নাটকটির দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের বাইরে বহির্বিশ্বে এটি ছিল প্রথম কোনো বাংলাদেশের নাট্যদলের অভিনয় প্রদর্শন। ১৯৮৭ সালের ২৫ মার্চ সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাদদেশে নাটকটির একটি প্রদর্শনীকে বিশেষ বলে উল্লেখ করেন রামেন্দু মজুমদার। ১৯৯০ সালের ২৩ মার্চ নাটকটির শততম অভিনয় হয়। স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ নাটক হিসেবে থিয়েটারের ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হয়। মাঝে প্রায় ১০ বছর নাটকটির অভিনয় হয়নি। বিরতির পরে নতুন করে প্রযোজনাটি নবনির্মাণ করেছেন সুদীপ চক্রবর্তী। বর্তমানে এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন, ফেরদৌসী মজুমদার, কেরামত মওলা, তোফা হোসেন, ত্রপা মজুমদার, মারুফ কবির, পরেশ আচার্য, সমর দেব, খুরশিদ আলম, নুরুল ইসলাম সানি, রাশেদুল আওয়াল শাওন, জোয়ারদার সাইফ, তামান্না ইসলাম, রুনা লাইলা, তানভীর হোসেন সামদানী, কল্যাণ চৌধুরী, তানজুম আরা পল্লী, কাওসার রাজীব, আতিকুর রহমান ও এরশাদ হাসান।

:: মেলা প্রতিবেদক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়