সাংবাদিকদের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী

আগের সংবাদ

অর্থপাচার বাড়ছে যে কারণে

পরের সংবাদ

ইচ্ছামতো নয়, বিধি মেনে হোক : রাজধানীর হোটেল-রেস্তোরাঁ

প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর সারাদেশের হোটেল-রেস্তোরাঁর অনিয়মের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে আসছে। বেইলি রোডে ৪৬ জনের প্রাণহানির পর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা হোটেল-রেস্তোরাঁয় পুরোদমে অভিযানে নামে। গতকাল ভোরের কাগজের প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, গত ৩ মার্চ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৮৭২ জনকে আটক করা হয়। সব মিলিয়ে ওই তিন দিনে ১ হাজার ৩৪৭টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে হোটেল-রেস্তোরাঁ ১ হাজার ১৩২টি। অভিযানে রেস্তোরাঁ মালিকরা আইনের আওতায় না আসায় প্রশ্ন উঠছে। অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং আইন অমান্য করে এক বিল্ডিংয়ে একাধিক হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা এবং যত্রতত্র সিলিন্ডার ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কিন্তু একদিনে কি এই হোটেল রেস্তোরাঁগুলো গড়ে উঠেছে? বিল্ডিং নির্মাণ এবং হোটেল ব্যবসা করতে কমপক্ষে ১০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নিতে হয়। নকশা, অগ্নি নিরাপত্তা, লোকেশন বিভিন্ন দিক দেখে বিবেচনা করে ছাড়পত্র দেয়া হয়। যারা এখন হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধে তৎপর হয়েছেন সরকারের সেই প্রশাসন যন্ত্রের ‘নাকের ডগায়’ আইন অমান্য করে এসব হোটেল ব্যবসা বছরের পর বছর ধরে চলছে। এতদিন এসব অবৈধ হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেয়ার নেপথ্যের রহস্য কী? এসব অনিয়মের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদেরও চিহ্নিত করা জরুরি মনে করছি। জানা যায়, ছোট-বড় মিলে রাজধানী ঢাকায় এখন রেস্তোরাঁর সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। দুই সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছে এ রকম রেস্তোরাঁ রয়েছে ২ হাজার ৮০০-এর বেশি। রুফটপে রেস্তোরাঁ আছে ৮০ থেকে ১০০টির মতো। অধিকাংশ রেস্তোরাঁর নেই কোনো কাগজপত্র, নেই অনুমোদন। উপেক্ষিত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি বহির্গমনের মতো বিষয়গুলো। দেখভাল করার যেন কেউ নেই। কোনো অঘটন ঘটলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বেইলি রোড় ট্র্যাজেডির পর এসব অবৈধ রেস্তোরাঁর বিষয় সামনে আসছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁ বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী হোটেল ও রেস্তোরাঁ নিবন্ধনের শর্তেই বলা আছে, নিবন্ধন পেতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভবন নির্মাণের অনুমোদন ও শর্ত পূরণ করতে হবে। শুধু তাই নয়, ভবনের পূর্ণাঙ্গ কাঠামোগত প্ল্যান জমা দিয়ে নিবন্ধন নিতে হয় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে। এছাড়া সিটি করপোরেশনকে ব্যবসায়িক সনদ বা ট্রেড লাইসেন্স পেতে হলেও ভবন ব্যবহার অকুপেন্সি ও ভবন সরবরাহকৃত সব সেবার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দরকার। কিন্তু রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলোতে ইচ্ছামতো রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলছে। প্রশাসন বলছে, অবকাঠামোগত ত্রæটি, ভবন ব্যবহারে অনিয়ম ও যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। ঝুঁকিপূর্ণ রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালাবে সরকার। এছাড়া অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তোরাঁ তৈরি এবং তাতে নির্বিঘেœ ব্যবসা পরিচালনার প্রশ্রয়দাতা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও সাজার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিষয়গুলো আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। ঢাকাবাসী একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে যাবে কোথায়? ওই এক চিলতে রেস্তোরাঁই ভরসা। কিন্তু সেই ভরসারস্থলই এখন মৃত্যুকূপ। এখনই সময় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁ চিহ্নিত করা। তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। সর্বত্র সজাগ হওয়া জরুরি। চলমান অভিযান অব্যাহত থাকুক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়