রেজিস্ট্রার পদ থেকে স্বেচ্ছা অব্যাহতি ওহিদুজ্জামানের : নতুন দায়িত্বে ড. আইনুল ইসলাম

আগের সংবাদ

এক্সিমে একীভূত হচ্ছে পদ্মা

পরের সংবাদ

ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনে যা আছে

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের হিন্দুরা ভারতে নাগরিকত্ব চাইতে পারবেন। এর পাশাপাশি বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি এবং শিখ সম্প্রদায়ের মানুষও নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন দেশটিতে।
ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার যে নতুন আইন সোমবার থেকে চালু হয়েছে, সেটিকে অনেকে মুসলিমবিরোধী আইন বলে বর্ণনা করলেও বিজেপি দাবি করছে, মুসলমানদের সঙ্গে এই আইনের কোনো সম্পর্ক নেই। আবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা হিন্দুদের একটা অংশের মধ্যেও দ্বিধা আছে যে নতুন আইনে তারা আবেদন করবেন কিনা- তা নিয়ে।
এদিকে সোমবার রাতে নোটিফিকেশন জারি করে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু করার পরে মঙ্গলবার থেকে ভারত সরকার একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর আফগানিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন, সেই হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি এবং শিখ স¤প্রদায়ের মানুষ এখন ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন যখন ২০১৯ সালে পাস করানো হয়েছিল, তখন থেকেই ভারতের মুসলমানদের একটা বড় অংশ এবং বিজেপিবিরোধী দলগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করছিল, এই আইনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি হালনাগাদ করা হবে, আর তার মাধ্যমে আসলে মুসলমানদের চিহ্নিত করে ভারতের নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়া হবে।
আবার হিন্দু উদ্বাস্তুদের একটা অংশের আশঙ্কা আছে, প্রথমে সরকার এটা জেনে নেবে যে, তারা আসলে পড়শী দেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন, তাই প্রথমে তাদের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে। তারপরে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে যে সেই ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে কিনা। যদি সরকার ওই ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব না দেয়, তখন কী হবে?
সোমবার থেকে চালু হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনটিকে মুসলমানবিরোধী বলে অনেকেই অভিযোগ করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের প্রধান মুহম্মদ কামরুজ্জামানের আশঙ্কা, ‘যারা দেশান্তরিত হয়ে ভারতে চলে এসেছেন, তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হোক। এটা এখানকার মুসলমান সমাজও চায়। এমনকি এত বছর ধরে কেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি, সেটাও আমাদের প্রশ্ন। কিন্তু একই সঙ্গে এরকমটা হবে না তো, যে এখন অ-মুসলমানদের নাগরিকত্ব দেয়া হলো, এর পরে সেই সূত্র ধরে ভূমিপুত্র মুসলমানদের কাছেও নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়া হবে?’
তবে এই আশঙ্কা অমূলক বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
বিজেপি নেতা অধ্যাপক বিমল শঙ্কর নন্দ বলছেন, ‘এটা কোন দিক থেকে মুসলমানবিরোধী আইন? মুসলমানদের কথা তো আইনের কোথাও লেখাই নেই! হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, পার্সি আর শিখরা যারা পাকিস্তান, আফগানিস্তান আর বাংলাদেশ থেকে চলে এসেছেন ভারতে, তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার আইন এটা। কারও নাগরিকত্ব এই আইনের মাধ্যমে কেড়ে নেয়া হবে, এটা সম্পূর্ণ ভুল প্রচার।’
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমল সরকার বলছেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধদের সমস্যায় ফেলতে পারে।
তার কথায়, ‘এটা ঠিকই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তৈরি করে মেরুকরণের রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বিজেপি। তবে তার থেকেও বড় ইস্যু হলো এই আইনটা পড়শী দেশগুলোতে সেখানকার সংখ্যালঘুদের সমস্যায় ফেলতে পারে। আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধদের এবারে শুনতে হতেই পারে যে তোমাদের দেশ আছে তো ভারত, সেখানেই চলে যাও, নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে। তারা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার পরেই সোমবার রাত থেকেই আসামে এর বিরোধিতা শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবার বনধেরও ডাক দিয়েছিল কয়েকটি সংগঠন। তবে সেই ডাকে বিশেষ সাড়া মেলেনি বলেই রাজধানী গুয়াহাটির স্থানীয় সাংবাদিকরা জানাচ্ছেন। সিএএ-র বিরোধিতা শুরু হতে পারে, এই আশঙ্কায় রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সোমবার রাত থেকেই লিখিতভাবে কড়া অবস্থান নেয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়