জবির নতুন প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন

আগের সংবাদ

শেখ হাসিনার ইউরোপ জয় : মিউনিখ সফর > সরকার প্রধানদের অভিনন্দনে সিক্ত > শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সবার আগ্রহ > বক্তব্যে যুদ্ধবিরোধী বার্তা প্রসংশিত

পরের সংবাদ

বায়ুদূষণ রোধে করণীয় ঠিক করুন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের অন্যতম দূষিত বাতাসের শহরে পরিণত হয়েছে রাজধানী ঢাকা। শীতকালে এমনিতেই বেড়ে যায় বায়ুদূষণ। এবারের শীতে ঢাকার রাস্তার সংযোগস্থলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ ছিল কুড়িল ফ্লাইওভার মোড়ে। এখানে বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম ২.৫) পরিবেশ অধিদপ্তরে নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে ছয় গুণ বেশি ছিল। অন্যদিকে সবচেয়ে কম দূষণ পাওয়া গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে। তবে সেখানেও অধিদপ্তরে নির্ধারিত মানমাত্রার চেয়ে দূষণ বেশি ছিল। শীতে ঢাকার বাতাস ভয়ংকর দূষিত রাজধানীর বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) এক সাম্প্রতিক গবেষণায় এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ঢাকার এই অস্বাস্থ্যকর বায়ু উদ্বেগের কারণ। গবেষণা বলছে, ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ শহরের রাস্তার সংযোগস্থলগুলোর বায়ুদূষণ। সংযোগস্থলগুলোতে বায়ুদূষণের প্রধান কারণের মধ্যে উন্মুক্ত অবস্থায় নির্মাণকাজ (সরকারি ও ব্যক্তিগত), অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এবং যানজটের বিষয়টি অন্যতম। মূলত অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎস। এখনই বায়ুদূষণ কমাতে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য দূষিত বায়ু ভয়ংকর হয়ে উঠছে দিন দিন। বিশেষ করে শহরে নির্মাণকাজের কারণে বাতাসে প্রচুর ধুলা যুক্ত হয়। যানবাহনে ব্যবহƒত জ¦ালানি থেকে নির্গত কার্বন দূষণের অন্যতম কারণ। এছাড়া বর্জ্য পোড়ানোর কারণে দূষিত হচ্ছে বাতাস। শিল্প কারখানার ধোঁয়া এবং রাজধানীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম নতুন কিছু নয়। শহর ও আশপাশের এলাকায় যেখানে সেখানে ময়লার স্তূপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে বাতাস। কিছুদিন আগে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণের কারণে দেশে বছরে মারা যাচ্ছে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। গবেষকদের মতে, দূষণের মাত্রা কমানো গেলে বাংলাদেশের মানুষ আরো ৫ দশমিক ৪ বছর বেশি বাঁচতেন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার কারণে শুধু ঢাকায় বসবাসকারীদের গড় আয়ু কমেছে ৭ দশমিক ৭ বছর। দূষিত বায়ুর কারণে এখানকার জনগোষ্ঠী মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কেবল স্বাস্থ্য নয়, জিডিপির ক্ষতিও হচ্ছে ৩.৯-৪.৪ শতাংশ। শ্বাসকষ্ট, কাশি, নি¤œ শ্বাসনালির সংক্রমণ ও বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়ছে মানুষের। এ অবস্থায় একিউআই ইনডেক্সের ভয়াবহ মাত্রা ও গবেষকদের পর্যবেক্ষণ অবিলম্বে আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। জনস্বার্থে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সরকারের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণ সমস্যায় জর্জরিত। বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে শুষ্কতার কারণে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়। ঢাকা সিটিতে বায়ুদূষণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তার মধ্যে তিনটি কারণ প্রধান। যাতে ঢাকাসহ সারাদেশে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। এ কারণে বিশেষ করে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে বিঘœ ঘটা ও মারাত্মক স্নায়ুবিক ক্ষতি হতে পারে এবং গর্ভবতী নারীদের গর্ভপাত ও মৃত শিশু প্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। সুস্থ থাকতে ও বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হলে বায়ুদূষণ কমানোর বিকল্প নেই। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সচেতনতায় পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করা অসম্ভব নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়