কাগজ প্রতিবেদক : হেরিটেজ, অভয়ারণ্যগুলো, নদী, সুন্দরবনসহ পরিবেশ রক্ষায় গ্রিন গার্ড (সবুজ পুলিশ) তৈরির দাবি করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)। সংগঠনটির দাবি, পরিবেশে রক্ষায় দেশের হেরিটেজ, বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য, নদী, সুন্দরবনসহ বিশেষ বিশেষ জায়গায় থাকবে গ্রিন গার্ড। এই গ্রিন গার্ড শুধু পুলিশ বাহিনী দিয়ে তৈরি করলে হবে না। কারণ তারা ঘুষ নেয়। তাই নাগরিকদের মধ্য থেকে সবুজ সৈনিকও তৈরি করতে হবে। তারা যৌথভাবে পরিবেশ রক্ষা করবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল শুক্রবার ধরা আয়োজিত ‘হাতিমারা কৃত্রিম জলাশয় ও চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ধরার সহআহ্বায়ক শারমিন মুরশিদ, মূল বক্তব্য পাঠ করেন চুনতি রক্ষায় আমরার সমন্বয়ক সানজিদা রহমান। ধরার সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ধরার সহআহ্বায়ক এম এস সিদ্দিকী, সদস্য আব্দুল করিক হিম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
শারমিন মুরশিদ বলেন, বনবিভাগ সরকারি চাপকে ভয় পায়। ব্যবসায়ীদের ভয় পায়। তারা ভয়ে থাকে। কিন্তু তারাই বনরক্ষার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া। তারা বন দখল করে। তাদের সহযোগিতা করে সাধারণ মানুষের একটি অংশ। কারণ তারা (গরিব) বাঁচতে চায়।
চুনতি হাতিমারা কৃত্রিম হ্রদে বাঁধ কাটার ঘটনাটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঁধ কেটে ভালো কাজ করেছে বনবিভাগ। এই কাজ আরো আগে করার প্রয়োজন ছিল। অন্যদিকে বাঁধ কাটার ফলে কৃষি জমি ধ্বংস হলো। ভেসে গেল। বাঁধ কাটার আগে এই বিষয়ে পরিকল্পনার দরকার ছিল। উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় মাস্তান, স্থানীয় প্রভাবশালীর ওপর আমাদের শাসনব্যবস্থা নির্ভরশীল। কেউ গরিবের কথা ভাবছে না। বন ও ভূমি দখলে গরিবদের ব্যবহার করা হয়। মাঝেমধ্যে দুই পয়সা আয় করে, আবার বানের জলে গরিবরাই ভেসে যায়।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়া উপজেলা এবং কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। মূল বক্তব্যে এই বনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, প্রয়োজনাতিরিক্ত পাহাড় কেটে রেললাইন স্থাপন, বনের ভেতর অবৈধ বসতি গড়ে তোলা, হাজার হাজার একর জমির বন্দোবস্ত ও বেআইনি কেনাবেচা, পাহাড় কাটা, প্রাকৃতিক বন ও বন্যপ্রাণী নির্বিচারে নিধন করে, অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করে এবং সামাজিক বনায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এমনকি হাতির চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা ও হাতি মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে। বনের বিশাল এলাকাজুড়ে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করার মতো কাজ চুনতিতে ঘটেছে।
সরকারকে জনসম্পৃক্ত ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি সমন্বিত স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করে চুনতির রক্ষার দাবি জানান শরীফ জামিল। সেইসঙ্গে, ইতোমধ্যে ঘটে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ঘটনা ও পদক্ষেপগুলোর সঠিক বিশ্লেষণ ও দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবিও করেন তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।