নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে মুগদা থেকে গ্রেপ্তার ১

আগের সংবাদ

দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টেনে তোলার চেষ্টা : সুফল মিলবে কি?

পরের সংবাদ

অনলাইন টিউশন মিডিয়া

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মিডিয়ার মাধ্যমে টিচার বাসায় বাসায় পৌঁছে দেয়া ইদানীং একটি ব্যতিক্রমধর্মী পেশার আয়ের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে তরুণদের আশাব্যঞ্জক উপস্থিতি ক্ষেত্রটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মূলত এ ব্যবসাটি মোটামুটি পুঁজিতে শুরু করা যায়। খুব বেশি পুঁজি খাটাতে হয় না। এ ব্যবসাটি মোটামুটি অনলাইন মিডিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞরা মিলে করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়। কারণ শহরজুড়ে একটি ভালো টিচার্স নেটওয়ার্ক তৈরির বিষয় রয়েছে, যা একজনের পক্ষে করা বেশ কঠিন। তাছাড়া এ ব্যবসাটি কয়েকটি ল্যাপটপ, কয়েকটা মোবাইল, দুয়েকটা চেয়ার আর শহরে একটি ছোট্ট রুম ভাড়া নিয়ে করা যায়। লোকবলও তেমন প্রয়োজন হয় না। মূলত এ ব্যবসাটি নেটের মাধ্যমে, সারা শহরে টিচার্স নেটওয়ার্ক সৃষ্টির মাধ্যমে, শিক্ষিত যুবকদের সাময়িকভাবে কিংবা লেখাপড়া চলাকালে কয়েকটি টিউশনি করার মাধ্যমে আয়ের প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে। টিউশন মিডিয়ার কাজ হচ্ছে শ্রেফ টিচারের সঙ্গে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়া। বিনিময়ে তারা তাদের মাধ্যমে ঠিক করে দেয়া শিক্ষকের প্রথম মাসের মূল বেতনের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ আয় করে। কোনো কোনো টিউশন মিডিয়া আবার টিউশনি ঠিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দাবিকৃত অর্থ আগেই নিয়ে নেয়। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো কারণে যদি উক্ত শিক্ষক তাদের ঠিক করে দেয়া বাসায় টিউশনি করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মিডিয়া গ্রহণকৃত টাকা ফেরত দিয়ে দেয়। বর্তমানে শহরাঞ্চলে খুব কমসংখ্যক মানুষই তার ছেলেমেয়েদের পড়ানোর জন্য পরিচিতজনদের মধ্যে শিক্ষক খোঁজে। সবাই টিউশন মিডিয়া থেকেই শিক্ষক নেয়। এমন লাভজনক ব্যবসাটি করার জন্য বর্তমানে শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অনেক টিউশন মিডিয়া। এর মধ্যে কিছু টিউশন মিডিয়া ভুয়া হলেও বেশকিছু টিউশন মিডিয়া রয়েছে যারা বেশ বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। টিউশন মিডিয়াগুলোতে অভিভাবকদের চাহিদা মোতাবেক রয়েছে শিক্ষকদের ক্যাটাগরি ভাগ। রয়েছে শ্রেণি এবং সময় ও দিন হিসেবে শিক্ষকের পারিশ্রমিক নির্ধারণ। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে টিউশন মিডিয়াগুলোতে অভিভাবকরা নামিদামি প্রতিষ্ঠানে পড়ে এমন ছাত্রছাত্রীকেই প্রাধান্য দিতে চায় বেশি। এ ক্ষেত্রে ক্রমেই বেশ প্রতিযোগিতাময় হয়ে উঠেছে ক্ষেত্রটি। এখানে মেধাবী না হলে টিউশন টিকিয়ে রাখতে পারছে না অনেকেই। তবে শিক্ষাজীবন শেষ করে কোনো চাকরি না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক সচ্ছলতার কথা বিবেচনা করে অনেক মেধাবীই এই টিউশন পেশায় যোগ দিচ্ছে। এক সময় মেধাবীদের খোঁজ নিয়ে তাদের রাজি করানো হতো বাসায় এসে ছাত্রছাত্রী পড়ানোর জন্য। এভাবে অনেকেই টিউশনি করলেও এখনকার মতো টিউশনি করা তেমন একটা বাধ্যতামূলক ছিল না। মা-বাবা কখনো তার পড়ুয়া ছেলেকে লেখাপড়া ছাড়া সহজে অন্য কাজ করতে দিত না। বর্তমানে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই তাদের মা-বাবা যাতে অর্থনৈতিকভাবে একটু সহজ এবং হালকা থাকে সে চিন্তা করে নিজের খরচ চালানোর জন্য পড়ার পাশাপাশি টিউশনিও করে। আর এই টিউশনিকে বিশেষ করে সহজলভ্য করে দিয়েছে এসব টিউশন মিডিয়া। এ ক্ষেত্রটিকে আরো আধুনিকায়নের মাধ্যমে দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী মেধাবী টিউটরদের কাছ থেকে ভালো শিক্ষা গ্রহণ করে উপকৃত হতে পারত। আমরা কখনো কোচিং বাণিজ্যকে উৎসাহিত করি না, কারণ ১০০ ছাত্রকে একজন শিক্ষক পড়িয়ে মাসে মাসে ব্যাপক অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেয়ে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এক কিংবা দুজন ছাত্রছাত্রীকে ভালোভাবে শিক্ষা দিয়ে কিছু অর্থ আয় করা অনেক ভালো বলে আমরা মনে করি। কারণ এটা বাণিজ্য নয়, এটা যথাযথ সময় নিয়ে শিক্ষার্থী পড়িয়ে তার বিনিময়ে কিছু অর্থ আয় করা। আর টিউশনির মতো মর্যাদাপূর্ণ ক্ষেত্রটিকে সব শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের কাছে সুলভ করে তুলতে টিউশন মিডিয়া নামক এ নতুন ক্ষেত্রটির কোনো জুড়ি নেই। আশা করা যায় এ ক্ষেত্রটি আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

রতন কুমার তুরী : লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়