প্রধানমন্ত্রীর তিন বিশেষ সহকারী নিয়োগ

আগের সংবাদ

অনন্য সংসদের ঐতিহাসিক সূচনা

পরের সংবাদ

বিপিএলে লাকি সেভেন শরিফুল ইসলাম

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একটা সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে বলা হতো স্পিননির্ভর দল। মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাকরা ছিল টাইগারদের বোলিং লাইনআপের মূল অস্ত্র। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই স্পিনের সেই বলয় থেকে বেরিয়ে পেসাররাই অবদান রাখছেন সামনে থেকে। মোস্তাফিজ, তাসকিনের পর টাইগারদের পেস আইকন এখন শরিফুল ইসলাম। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে উচ্চতা, গতি ও বোলিংয়ে নজর কেড়েই জাতীয় দলে অভিষেক ঘটে শরিফুলের। তারপর থেকেই দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছেন তিনি। শুরুটা অবশ্য হয়েছিল দেশের হয়ে একমাত্র অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে। তানজিদ তামিম কিংবা আকবর আলীদের মতো শিরোপা জয়ে অবদান রেখেছিলেন তিনিও। তাদের সম্মিলিত পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো বিশ্ব জয়ের আনন্দে ভাসে পুরো দেশ। বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান ছিল বলেই নয়, তরুণ শরিফুল ইসলামের ওপর নজর অনেক আগ থেকেই। পঞ্চগড়ের ২২ বছর বয়সি তরুণের উচ্চতা ছয় ফুটেরও বেশি। উচ্চতা ও শরীর দেখলে মনে হতো পেসার হওয়ার জন্যই বুঝি জন্মেছেন তিনি। অভিষেকের পর থেকেই পেস বোলিংয়ে রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন শরিফুল। ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বোঝা যাচ্ছিল দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে আলো ছড়াবেন শরিফুল। কারণ গত বছর পুরোটা সময়জুড়েই ধারাবাহিক বোলিং করেছেন এই পেসার। ২০২৩ সালে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩২ ইনিংসে তিনি নিয়েছেন ৫২ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক পঞ্জিকা বর্ষে পঞ্চাশ বা তার বেশি উইকেট পাওয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার তিনি। এমনকি গত বছর কিইউদের বিপক্ষে তাদের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়েও বড় অবদান শরিফুলের। পুরো সিরিজে তিন ম্যাচে ৬ উইকেট পান তিনি। বিপিএলেও নিজের সক্ষমতার প্রমাণ ঠিকই দিলেন শরিফুল। এই পেসারের কল্যাণেই আসরে বিপিএলের প্রথম ম্যাচেই হ্যাটট্রিক দেখে ক্রিকেটপ্রেমীরা। উদ্বোধনী ম্যাচেই কুমিল্লার তিন ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে হ্যাটট্রিক করেন শরিফুল। বিপিএলের ১০ আসরে এটি সপ্তম হ্যাটট্রিক। ইনিংসের শেষ তিন বলে খুশদিল শাহ, রোস্টন চেজ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন শরিফুল। শেষ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে শরিফুলকে ছক্কা মারেন খুশদিল। পরের বলেই প্রতিশোধ নেন শরিফুল। স্লোয়ার ডেলিভারিতে আবারো বড় শটের চেষ্টা করেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। টাইমিংয়ের গড়বড়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন তিনি। খাটো লেংথে করা পরের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিডঅন ও লংঅনের মাঝামাঝি ধরা পড়েন চেজ। সামনে লাফিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ নাঈম। হ্যাটট্রিক বলে ইরফানের হাতে ধরা পড়েন মাহিদুল। ৪ ওভার বল করে ২৭ রান খরচায় দারুণ বোলিং করেন এই পেসার। শেষ ওভারে তার এমন আগুনে বোলিংয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে কুমিল্লার ইনিংস। এর ফলে শরিফুল বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম হ্যাটট্রিক বোলার বনে যান।
শরিফুলের আগেও বিপিএল হ্যাটট্রিকের দেখা পেয়েছে ৬ বার। বিপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিকের মালিক মোহাম্মদ সামি। পাকিস্তানের সাবেক এই পেসার ২০১২ সালে ঢাকা গø্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে এই হ্যাটট্রিক করেন। দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে পরপর তিন বলে সাজঘরে ফেরান ড্যারেন স্টিভেনস, আফতাব আহমেদ ও রানা নাভেদুল হাসানকে। এটাই ছিল বিপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিক। ২০১৫ সালে পেসার আল আমিন হ্যাটট্রিক করেন। তার এই হ্যাটট্রিক ছিল বরিশাল বুলসের হয়ে। সিলেট সুপার স্টার্সের তিন ব্যাটার মমিনুল হক, রবি বোপারা ও নুরুল হাসান সোহানকে একে একে সাজঘরে ফেরান। বিপিএলে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। বিপিএল অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করে বসেন আলিস আল ইসলাম। ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার ছিলেন তিনি। খেলোয়াড় হিসেবে একাদশে সুযোগ পেতেই পরপর তিন বলে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ফরহাদ রেজাকে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে আলিস এই হ্যাটট্রিক করেছিলেন ২০১৯ সালে। পাক বোলার ওয়াহাব রিয়াজ হ্যাটট্রিক করেন ২০১৯ সালে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খুলনা টাইটান্সের বিরুদ্ধে গড়েন এই কীর্তি। হ্যাটট্রিকের পথে একে একে সাজঘরে ফেরান ডেভিড ভিসা, তাইজুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেনকে। ২০১৯ সালেই বিপিএল পায় পঞ্চম হ্যাটট্রিকের দেখা। ঢাকা ডায়নামাইটসের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে নিজের শেষ ওভারে টানা তিন বলে সাজঘরে ফেরান চিটাগংয়ের মুশফিকুর রহিম, ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও দাসুন শানাকাকে।

:: সোহানুর রহমান

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়