বাংলাদেশে বাণিজ্য বাড়াতে চায় মিসর : বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রদূূতের সাক্ষাৎ

আগের সংবাদ

স্বতন্ত্র এমপিরা কী চান

পরের সংবাদ

রপ্তানি বহুমুখীকরণ : খুঁজতে হবে নতুন নতুন বাজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রপ্তানি বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, একটি-দুটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। রোববার রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি আয় বাড়াতে তৈরি পোশাকের মতো পাট ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এবং হস্তশিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানি পণ্যে একই গুরুত্ব দিতে হবে।
রপ্তানি ঝুড়িতে বৈচিত্র্য আনার সম্ভাবনা আছে, এমন খাতগুলোর মধ্যে আছে- চামড়া ও জুতা, হালকা প্রকৌশল এবং প্লাস্টিক। কিন্তু মাসিক রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ উৎপাদিত পণ্যগুলোর কোনোটিই এক নম্বর অবস্থানে থাকা খাতটির ধারেকাছেও নেই। আরএমজি খাতের রপ্তানির হিসাব বিলিয়নে করা হলেও অন্যগুলোর হিসাব এখনো কয়েক মিলিয়নেই আটকে আছে।
সারা বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে এবং যে অঞ্চলে যে পণ্য ভালো হয়, সেখানে সেই শিল্প গড়ে উঠবে। সেবা খাতেও আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে ও ভালো সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ খাতে রপ্তানি আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছে এবং আইসিটি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিশাল সুযোগ সামনে রয়ে গেছে। আইটি খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রপ্তানি আয় ২৭.৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। ১৯৭২-৭৩ সালে বাংলাদেশ ২৫টি পণ্য ৬৮টি দেশে রপ্তানি করে আয় করত মাত্র ৩৪৮ দশমিক ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৪৪টি পণ্য বিশ্বের ১৯৮টি দেশে রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার। আমাদের রপ্তানির প্রধান খাত দুটি। একটি পণ্য রপ্তানি আর একটি সেবা রপ্তানি। আমরা রপ্তানি বলতে শুধু পণ্যকে বোঝালেও সেবা খাতটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সেবা রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩ দশমিক ১৭৩ বিলিয়ন ডলার। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং সার্ভিস সেক্টরে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং সার্ভিস সেক্টরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। পরিশেষে বলছি, বাংলাদেশের রপ্তানি সামর্থ্য বাড়াতে হলে উৎপাদন সামর্থ্য বাড়াতে হবে। তার জন্য দরকার অবকাঠামো ও দক্ষতার উন্নয়ন। এই ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য। রপ্তানিমুখী শিল্পে ছাড় দেয়াসহ জ্বালানি ও পুঁজিসহায়তা খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজন নতুন বাজার খোঁজায় দূতাবাসগুলোর আরো সক্রিয়তা। প্রয়োজন রপ্তানিসহায়ক শিল্পনীতি। আজকের যুগ হলো ব্যবসা-বাণিজ্যের যুগ। জাতীয় উন্নয়নের এটিই সোজাসাপটা পথ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে রপ্তানি যেমন বাড়াতে হবে তেমন রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। গুটিকয় পণ্যের ওপর নির্ভরতার বদলে বিদেশে কোনো কোনো পণ্যের চাহিদা রয়েছে, সে নিরিখে উদ্যোগ নিতে হবে। নিত্যনতুন বাজার সম্প্রসারণে অর্থনৈতিক কূটনীতিতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

আর কে চৌধুরী : মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়