দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন : ৬ আন্তর্জাতিক সংস্থার বিবৃতি প্রত্যাখ্যান সরকারের

আগের সংবাদ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা

পরের সংবাদ

এ মৃত্যুর দায়ভার কে নেবে?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীতে নির্মাণাধীন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে মৃত্যুর ঘটনা নতুন কিছু নয়। সর্বশেষ শিকার দিপু সানা নামে একজন নারী। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি আবারো সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর দায় কে নেবে? গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মৌচাকে একটি ভবন থেকে মাথায় ইট জাতীয় একটি বস্তু পড়ে নিহত হন তিনি। সন্ধ্যার দিকে শান্তিনগর থেকে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিন বছরের ছেলে সন্তান নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মগবাজারের ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হাতে ব্যাগ নিয়ে রাস্তার ফুটপাত দিয়ে হাঁটছিলেন দীপান্বিতা। হঠাৎ ইট আকৃতির একটি ব্লক ওপর থেকে সরাসরি মাথায় পড়তেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু সেই ব্লকটি কোত্থেকে এলো, সে বিষয়ে নিশ্চিত না হলেও পুলিশ ধারণা করছে, ফ্লাইওভার থেকেও পড়তে পারে। ঘটনাস্থলে ছিল না নির্মাণাধীন ভবন, কোথা থেকে এলো ইট? রাজধানীতে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে মৃত্যু বা ভবন ধসে মৃত্যু, এমন সংবাদ হরহামেশা শোনা যায়। এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটে অসাবধানতা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে। কিন্তু পথ-চলতি অবস্থায় মাথায় ইট পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও মাঝেমধ্যে ঘটছে। এর আগে ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহা. আবদুল হাফিজ কারেমী (১৪)। সে একটি কারিগরি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২০১১ সালের ১৬ জুলাই অসুস্থ মাকে হাসপাতালে দেখে ফেরার পথে পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালের সামনে নির্মাণাধীন ১৮ তলা ভবন থেকে ইট পড়ে মারা যান তেজগাঁও কলেজের ছাত্র হাবিবুর রহমান। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে (বিএনবিসি) বলা আছে, নির্মাণ কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নাইলনের জাল দিয়ে পুরো ভবন ঢেকে দিতে হবে। সড়কে কমপক্ষে ১ দশমিক ৫ মিটার দূরত্বে নির্মাণাধীন ভবনকে অবশ্যই ২ দশমিক ৪ মিটার বেষ্টনী দিয়ে রাখতে হবে। ভবনের চারদিকে টিন দিয়ে অস্থায়ী ছাদ বানানোর কথাও বলা আছে। রাজধানীতে বেশির ভাগ ভবন নির্মাণ করার সময় ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড মানা হয় না। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়াই একের পর এক নির্মিত হচ্ছে বহুতল ভবন। একটি ঘটনা ঘটার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রত্যেকেই এর দায় অন্য সংস্থার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। কনস্ট্রাকশান লাইনে এমনটা প্রায়ই ঘটছে। হয়তো কারো মাথার ওপর কিছু পড়ে সে মারা গেল, সে হয়তো মামলা করছে না- ফলে দোষীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। নির্মাণাধীন ভবন থেকে সরঞ্জাম পড়ে প্রাণহানি বাড়লেও দেখার কেউ নেই। যাদের দেখভাল করার কথা, তারা নির্বিকার। মর্মন্তুদ কিছু ঘটনায় মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার পান না নিহতের স্বজনরা। অথচ আইন ও ভবন নির্মাণ বিধিমালায় পথচারীসহ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়