ভোটের মাঠে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জয়জয়কার

আগের সংবাদ

কেমন হবে ‘স্মার্ট’ মন্ত্রিসভা

পরের সংবাদ

একের ভেতর তিন নাজমুল হোসেন শান্ত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ নাজমুল হোসেন শান্ত। ২০২৩ সালে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে বেশ ভালোভাবে পালন করছেন অধিনায়কের দায়িত্বও। অল্প সময়ে অধিনায়ক হিসেবে গড়েছেন এমন এক কীর্তি, যা পারেননি বাংলাদেশের আর কোনো অধিনায়ক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে গত নভেম্বরে টেস্ট সিরিজের আগে নাজমুল হোসেনের অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা মাত্র তিন ম্যাচের। সেই নাজমুল এক মাসের ব্যবধানে নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে একটি টেস্টজয়ী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিউজিল্যান্ড সফরে এসে জিতেছেন কিউইদের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ও প্রথম টি-টোয়েন্টি। বাংলাদেশের কোনো অধিনায়ক এর আগে যা করতে পারেননি, সে অর্জন এসেছে এই তরুণের নেতৃত্বে। এখনো পূর্ণকালীন নয়। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে খণ্ডকালীন নেতৃত্বেই শান্ত যা করে দেখালেন, ভবিষ্যতের অধিনায়ক বাছতে বোধ হয় দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে না বিসিবিকে।
শান্তর নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক হিসেবে বেশ সাহসী শান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী। কিউইদের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে হারানোর আগে দেশের মাটিতে টেস্টেও তাদের হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেটিও শান্তর নেতৃত্বে। তাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন সবাই। ‘সেনা কান্ট্রি’ তথা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয়কে ক্রিকেট বিশ্বে আলাদা নজরে দেখা হয়। এতদিন ‘সেনা কান্ট্রি’র কোনো নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোনো অধিনায়কের তিন ফরম্যাটে জয় ছিল না। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে ভাঙল সেই শেকল। খুব বেশি দিন নয় গত সেপ্টেম্বরে সিলেট টেস্ট দিয়ে লাল বলের ক্রিকেটে অধিনায়কত্বে অভিষেক হয় শান্তর। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে শান্তর নেতৃত্বের শুরুটা হয় রাজকীয় ভঙ্গিতে। সে ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ১৫০ রানের স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে এর আগে ঘরের মাঠে সাফল্য পেলেও বাংলাদেশ কখনো টেস্ট জেতেনি। এর মাধ্যমে সেই আক্ষেপও দূর করেছেন হাথুরু শিষ্যরা। সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ অবদান রেখেছেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে ৩৭ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১০৫ রান। এর বাইরে কৌশল, বোলিং পরিবর্তন, রিভিউ- সব কিছুতে তরুণ অধিনায়কের ভূমিকা ছিল প্রশংসিত। ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ শেষ করে নিউজিল্যান্ড সফর করছে বাংলাদেশ। এখানেও সাকিবের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব পান শান্ত। আর নেতা হিসেবে ওয়ানডেতে নেমেও রেকর্ড গড়েছেন। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া হলেও তৃতীয় ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। যা এই ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়। টেস্ট-ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতে নেমেও জয়ের দেখা পেল শান্তর দল। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই কিউইদের ৫ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। তাসমান পাড়ের দেশে এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি জিতেছে টাইগাররা। দলের মতোই ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়কও। বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই জয় পেয়েছেন শান্ত। কিউইদের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও তার মুগ্ধতার কথা জানান। যদিও এমন সাফল্যের পরও নিশ্চিত নয় তার অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ। সাকিব আল হাসানই এখনো তিন ফরম্যাটের অধিনায়কত্বের ভাবনায় আছেন, এমন কথা বলা হয়েছে ক্রিকেট বোর্ড থেকে। তবে হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করতে পারবেন এমন যথেষ্ট প্রমাণ রেখেছেন শান্ত। ২০১৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ দলের নিউজিল্যান্ড সফরের পূর্বে অস্ট্রেলিয়ায় ট্রেনিং ক্যাম্পের জন্য ২২ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয় শান্তকে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপরীতে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচের আগে তাকে বাংলাদেশের টেস্ট স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং সফরের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক ঘটে। ২০১৮ সালের আগস্টে এশিয়া কাপের পূর্বে বাংলাদেশের ৩১ সদস্যের প্রাথমিক দলে ১২ জন অভিষেক হতে যাওয়া খেলোয়াড়ের মধ্যে শান্তও ছিলেন একজন। ওই বছরই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়। এশিয়া কাপের পর পরই দল থেকে ছিটকে পড়েন তিনি।
য় নাজমুস সাকিব আদিব

এরপর ২০১৯-২০ বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য আবারো দলে ডাক পান। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার অভিষেক হয়। ২০১৯ সালে এসিসি উদীয়মান এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মনোনীত হন তিনি। এরপর ধারবাহিকভাবে খেলে গেলেও আশানুরূপ পারফরম্যান্স করতে পারছিলেন না। তারপরও টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে বারবার সুযোগ দিয়েই যাচ্ছিল। তাদের এই প্রতিদানের ফল টাইগাররা এখন পাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়