আইজিপি : নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন

আগের সংবাদ

সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের বিজয় > সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য বিনিময় : ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলাই এখন লক্ষ্য

পরের সংবাদ

সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারাচ্ছে প্রাচীন মসজিদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. নাঈম, ঝালকাঠি শহর থেকে : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পৌর শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নলছিটি-বরিশাল সড়কসংলগ্ন মোগল সম্রাট শাহ সুজার আমলে নির্মিত হয় মল্লিকপুর জামে মসজিদ। প্রাচীন এই জামে মসজিদ প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।
স্থানীয়রা জানায়, এক মিনার বিশিষ্ট এই মসজিদটি সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়কালে নির্মাণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে শাহজাহান বিশ্বাসসহ অধিকাংশ প্রবীণদের মতে, মোগল সম্রাট শাহ সুজা দক্ষিণ বঙ্গের নৌপথে ডাকাতি ঠেকাতে সুগন্ধা নদীর তীরবর্তী বর্তমান নলছিটির মগড় ইউনিয়নসংলগ্ন এলাকায় একটি দুর্গ গড়ে তোলেন। স্থানীয় মুসল্লিরা আগমনের খবর পেয়ে তার কাছে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য আবেদন করেন।
পরে তাদের আবেদন মঞ্জুর করে তিনি এই মসজিদটি নির্মাণ করে দেন। অসাধারণ নির্মাণশৈলীর এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি মোগল আমলের এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। প্রাচীন এই মসজিদটি নলছিটি উপজেলার অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। ৩০ ফুট লম্বা এবং ১৭ ফুট চওড়া এই মসজিদটি ১৬৪৮ সালে মোগল শাসনামলের স্থাপত্যশৈলীর এক চমৎকার নিদর্শন বহন করছে। ইতিহাস-ঐহিত্যপ্রেমীরা প্রায়ই দেশের দূরদূরান্ত থেকে মসজিদটি দেখতে ভিড় করেন। তবে সঠিক নজরদারি, সংস্কার ও সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় স্থাপত্যকলা বিনষ্ট হওয়ার পথে। এর ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে মসজিদটির ইতিহাস ঐতিহ্য।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহ সুজা ১৬১৬ সালের ২৩ জুন ভারতের আজমীরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মোগল সম্রাট শাহজাহান এবং তার রানি মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র ও চতুর্থ সন্তান ছিলেন। শাহজাহানের সৎমা সম্রাজ্ঞী নুর জাহান প্রিন্স শাহ সুজাকে তার জন্মের পর দত্তক দেন। তার উচ্চ পদমর্যাদা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জাহাঙ্গীরের তার প্রতি ¯েœহের কারণে তাকে এই নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সুজা তার পিতামহ সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিশেষ প্রিয় হওয়ায় সম্রাজ্ঞীর জন্যও এটি একটি সম্মানের বিষয় ছিল। শাহ সুজা ১৬৩৯ থেকে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৬৪৮ সালে সুগন্ধা নদীর তীরে নলছিটির মল্লিকপুর এলাকায় তার নামে নির্মিত হয় এই শাহ সুজা মসজিদ। সেই থেকেই মোগল সম্রাট শাহ সুজার মসজিদ নামে সবার পরিচিত।
মসজিদের মুসল্লি প্রভাষক মেসবাহ উদ্দিন খান রতন বলেন, প্রাচীন নিদর্শন এই মসজিদটি যে কোনো মূল্যে রক্ষা করা উচিত। কয়েকশ বছর আগের মোগল নির্মাণশৈলী এখনো মুগ্ধ করার মতো। তবে সংস্কার না করলে হয়তো আর বেশি দিন স্থাপনাটি টিকে থাকতে পারবে না। জুমার নামাজসহ প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ এখানে স্থানীয়রা আদায় করেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান মল্লিক ভোরের কাগজকে বলেন, মোগল সম্রাট শাহ সুজার আমলে নির্মিত এই মসজিদটি নলছিটি উপজেলার অতীত ঐতিহ্য ও গৌরব বহন করে। বাংলাদেশ প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের উদ্যোগে এই মসজিদকে প্রাচীন পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা একান্ত প্রয়োজন।
নলছিটি পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ খান ভোরের কাগজকে বলেন, মসজিদটি মোগল আমলে নির্মিত। আমাদের মুরব্বিরা এই মসজিদে নামাজ পড়তেন, তখন অত্র এলাকায় মসজিদের সংখ্যা ছিল অনেক কম। শাহ সুজার আমলে নির্মিত মসজিদটি সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়