চলে গেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষ্ণা রহমান

আগের সংবাদ

বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কঠোর ইসি : তিন শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ > কয়েকজনকে জরিমানা > মামলা ৩ প্রার্থীর বিরুদ্ধে

পরের সংবাদ

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ইতিবাচক খবর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খবরে প্রকাশ, ডিসেম্বরের প্রথম ২২ দিনে ব্যাংকগুলো ১.৫৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা গত বছরের ডিসেম্বরের একই সময়ে ছিল ১.২৯ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ রেমিট্যান্স প্রবাহ দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে নেভিগেট করছে, রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রদর্শিত দৃঢ়তা আশার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে। ডিসেম্বরের শেষার্ধে রেমিট্যান্স প্রবাহের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বিদেশি কর্মীদের আস্থা ও নির্ভরতা প্রতিফলিত হবে। এই টেকসই প্রবৃদ্ধি বর্ধিত অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন উদ্যোগ এবং জাতির জন্য সুখবর। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯.৬৬ বিলিয়ন ডলার, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময় শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এ হিসাবে মোট রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪.১৯ শতাংশ কমেছে। রেমিট্যান্স হ্রাসের বিষয়টি খেয়াল করলে দেখা যাবে আসলে বৈধ চ্যানেলে অর্থ আসা কমে যাচ্ছে। হুন্ডি ও হাওলার মতো অননুমোদিত উপায়ে দেশে অর্থ আসছে। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে জমা হচ্ছে না বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ। আর্থিক খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে হুন্ডির বাজার এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। হুন্ডির বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরাও অনেক প্রভাবশালী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো প্রভাবশালী হুন্ডি কারবারিদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারছে না। তারা ভাসমান বিদেশি মুদ্রা বিক্রেতা ও কিছু মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান চালিয়ে হুন্ডির বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এছাড়া বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে সরকার ও ব্যাংক মিলে পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। প্রবাসীদের আয়ে ব্যাংকে এক মার্কিন ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়। তাতে এক ডলারে পাওয়া যেত ১১৩ টাকা ২৬ পয়সার কিছু বেশি। ব্যাংকগুলো দিচ্ছে আরো ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ফলে এখন থেকে প্রবাসীরা এক ডলারে ১১৬ টাকার কিছু বেশি পাচ্ছেন। নতুন এ পদক্ষেপের ফলে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হবেন। এতে প্রবাসীরা হুন্ডির ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদে অর্থ পাঠাবেন। এরই মধ্যে গত কয়েক দিনে এর ইতিবাচক সাড়াও মিলেছে। দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের ভূমিকা ক্রমেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তুলতে রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ অবদান আরো বেড়েছে। আমরা ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার আশা করছি। দেশে যে হারে দুর্নীতির বিস্তার ঘটেছে এবং এর মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে, তাতে এসব লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। বিদেশ থেকে দেশে কিংবা দেশ থেকে বিদেশে বৈধ পথে টাকা স্থানান্তরের চ্যানেলগুলো সহজ করা এবং ভোক্তাবান্ধব সেবা নিশ্চিত করতে পারা হুন্ডি বন্ধের অন্যতম পূর্বশর্ত। কিছু পক্ষ জেনে অর্থ পাচার করে, অন্যরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের নানা পর্যায়ের বাধায় পড়ে দরকারে হুন্ডি করে। তাই ব্যাংকিং খাত কীভাবে প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে আরো সহজ সার্ভিস দিতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়