ঢাকা জেলার সোয়া ৫ লাখ শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাবে আজ

আগের সংবাদ

রেললাইনে ভয়াবহ নাশকতা : গাজীপুরে ইঞ্জিনসহ ৭ বগি লণ্ডভণ্ড > নিহত ১, আহত অর্ধশতাধিক > তিন তদন্ত কমিটি গঠন

পরের সংবাদ

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠোর হতে হবে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাজার নিয়ন্ত্রণে যেন দেশে কোনো অভিভাবক নেই। ইচ্ছামতো অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন। লুটে নিচ্ছেন মানুষের টাকা। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পেঁয়াজের দাম। বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেও লাভ হচ্ছে না। প্রতি কেজি পেঁয়াজ এখন স্থানভেদে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পেঁয়াজের দাম তরতর করে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে, গত মৌসুমে ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তার বড় একটি অংশ এখনো রয়েছে দেশের বাজারে। এর মধ্যেই নতুন মৌসুমের মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই বেনাপোল, সোনামসজিদ ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ এসেছে দেশে। পাশাপাশি পাকিস্তান, চীন ও দুবাই থেকেও আমদানি করা হয়েছে কয়েক হাজার টন পেঁয়াজ। তাহলে পেঁয়াজের দাম কমাতে আবার বিলম্ব কেন। জানা গেছে, দেশে বছরে ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে নানা কারণে নষ্ট হয়ে যায় ৬-৭ লাখ টন। অর্থাৎ পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ নিট উৎপাদন দাঁড়ায় ২৬-২৭ লাখ টন। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৭-২৮ লাখ টন। এই অবস্থায় দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজের চালান বাজারে আসতে শুরু করেছে। প্রায় ২ বছর ধরে বাজারের উচ্চমূল্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। গত বছরের আগস্টে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৯ শতাংশে পৌঁছানোর পর গত ৬ মাসে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। এর মধ্যেই দফায় দফায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছে মানুষ। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সবমিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। তারা বলছেন, সব কিছুর দাম বাড়ায় সংসার খরচ বেড়ে গেছে। যে কারণে আয়ের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের পেছনে। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। তবে আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। এটা স্পষ্ট, করোনা-দুর্যোগে অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে, অনেকেই হয়েছেন কর্মহীন। এখনো বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক করছেন কর্মকর্তারা। অবশ্য এসব তৎপরতায় তেমন কোনো সাফল্য আমরা দেখি না। আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। বাস্তব সত্য হচ্ছে, বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পরিপূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়