খিলক্ষেত কুর্মিটোলা স্কুলের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব

আগের সংবাদ

সবার নজর ইসির দিকে : জাতির উদ্দেশে সিইসির ভাষণ আজ সন্ধ্যায়, ঘোষণা করবেন ভোটের তফসিল

পরের সংবাদ

ব্যাটে-বলে মিরাজের ধারাবাহিকতা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভারতের মাটিতে হতাশার বিশ্বকাপ পার করেছেন টাইগাররা। ৯ ম্যাচে মাত্র দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের আট নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে আশাজনক পারফরম্যান্স না করলেও মেহেদী হাসান মিরাজ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ঠিকই দলকে জেতাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান।
৯ ম্যাচে ২২.৩৩ গড়ে ও ৭৯.৪৪ স্ট্রাইক রেটে ২০১ রান করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৭ রানের ম্যাচসেরা ইনিংসও খেলেন তিনি। এর পাশাপাশি ১০টি করে উইকেটও শিকার করেছেন এই ডানহাতি অফস্পিনার। ৫.৫৮ ওভারপ্রতি রান দিয়ে ৪০.২০ গড়ে বল করেছেন মিরাজ। টাইগার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মিরাজকেই বলা যায়। কারণ শরিফুলের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হলেও ইকোনমি ও বোলিং গড়ে এগিয়ে রয়েছেন মিরাজ। পাকিস্তানের বিপক্ষে যে ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা, সে ম্যাচে ৩ উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ ওভারে ৬০ রান খরচ করে মিরাজ শিকার করেন পাকিস্তানের দুই তারকা ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান এবং অধিনায়ক বাবর আজমের উইকেট। এই ৩ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ৮৯তম ম্যাচে উইকেটের সেঞ্চুরি করেন মিরাজ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সপ্তম বোলার হিসেবে এই নজির গড়েন তিনি। মিরাজের আগে সাকিব আল হাসান (৩১৭), মাশরাফি বিন মুর্তজা (২৬৯), আব্দুর রাজ্জাক (২০৭), মোস্তাফিজুর রহমান (১৬০), রুবেল হোসেন (১২৯) ও মোহাম্মদ রফিক (১১৯) ওয়ানডেতে একশর বেশি উইকেট শিকার করেছেন। বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও অবদান রেখে চলেছেন। ইতোমধ্যে ৯১ ওয়ানডেতে দুই সেঞ্চুরি আর ৩ ফিফটির সাহায্যে ১ হাজার ২৪৭ রান করেন মিরাজ। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে ব্যাট হাতে তিন সেঞ্চুরি আর ৭টি ফিফটির সাহায্যে ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছেন ২ হাজার ৭৭০ রান। আর বল হাতে ১৫৫ ম্যাচে শিকার করেছেন ২৬৫ উইকেট। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপে ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মিরাজ। এরপর থেকেই তাকে কোনো ম্যাচে চারে, কোনো ম্যাচে পাঁচে আবার কোনো ম্যাচে সাত-আটেও ব্যাট করতে দেখা গেছে। এতে শুধু মিরাজেরই নয়, বাকি ব্যাটারদেরও বেগ পেতে হয়েছে। কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে মেহেদী হাসান মিরাজ একটা রহস্য। তিনি কখন, কোন ম্যাচে কোন পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামবেন এটা অনুমান করা যেন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। ৩ থেকে শুরু করে ৮, মাঝে শুধু ৬ নম্বরেই ব্যাটিং করেননি তিনি। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে তিনে নেমে ফিফটি করেন মিরাজ। দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাকে খেলানো হয় পাঁচ নম্বরে। সেই ম্যাচে অবশ্য হাসেনি তার ব্যাট। তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আবারো তিনে নামানো হয় মিরাজকে। ৩০ রানের ঝলমলে একটি ইনিংসও খেলেন তিনি। পরে ভারতের বিপক্ষে চারে নামানো হয় তাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবার খেলেছেন সাতে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আবারও তিনে নামানো হয় তাকে। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন নতুন এক পজিশনে, আট নম্বরে। শেষ ম্যাচে আবার দেখা যায় সাতে। বিশ্বকাপে মিরাজকে নিয়ে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা যে খুব কাজে এসেছে, এটা কেউ বলবে না। ব্যাপারটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে প্রচুর। তার ব্যাটিং নিয়ে কাটাছেঁড়ার জবাবে মিরাজ সোজাসাপটাই বলেন, দলের প্রয়োজনে, টিম কম্বিনেশনের কারণেই তাকে বিভিন্ন পজিশনে ট্রাই করানো হচ্ছে। তাই বলে কোনো পছন্দের জায়গা নেই মিরাজের?
একটা বাজে বিশ্বকাপই কাটিয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজও জানান, ক্রিকেটপ্রেমীরা যেমন হতাশ, ক্রিকেটাররাও সেই হতাশার বাইরে নন, দিন শেষে ক্রিকেটে এসব মেনেই নিতে হবে। হার-জিত তো থাকবেই।’ তবে তিনি আশাবাদী, শিগগির ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, ‘খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি ভালো করার। বাংলাদেশের দর্শকরা সব সময় আমাদের সমর্থন দিয়ে যান। তারা কখনো আশা ছেড়ে দেন না। বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের বিশ্বাসও তাই।’
নানা নাটকীয়তার পর বিশ্বকাপে আট নম্বরে থেকে ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা করে নেয় টাইগাররা। নাহলে ২০১৩ সালের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দর্শক হয়েই থাকতে হতো সাকিব বাহিনীকে। কিন্তু তা আর হয়নি। বিশ্বকাপ ব্যর্থতা শেষে দেশে ফিরেই ব্যস্ত সূচি রয়েছে টাইগারদের। দুই ম্যাচের টেস্ট খেলতে দেশে আসবেন ব্ল্যাক ক্যাপসরা।

:: রাফিদ বিন ইসলাম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়