রাজপথে সহিংসতা ও প্রাণহানিতে মর্মাহত ইইউ

আগের সংবাদ

খুনিদের সঙ্গে সংলাপ নয় : সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

২৮ অক্টোবর কিছু জানা গেছে, অনেকটা জানার অপেক্ষায়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যুগপৎ আন্দোলনকারীদের মূল দল বিএনপির আয়োজন বিশাল হয়েও বিষাদে পরিণত হয়েছে। ২৮ তারিখকে কেন্দ্র করে নানাজনের নানা শঙ্কা ছিল। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছিলেন, ওই দিন তাদের মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অনেকে বিশ্বাস করেছে, আবার অনেকেই ২৮ তারিখের আয়োজনের হাঁকডাক শুনে মনে মনে তা বিশ্বাস করতে পারছিল না। বিশ্বাস না করার কারণ হিসেবে কারো কাছে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির পুরনো সম্পর্কের নবায়নের খবরটি নানা উদ্বেগে ও সন্দেহের জন্ম দিয়েছিল। জামায়াত ঘোষণা দিয়েছিল দলটি শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করবে। বিএনপির সমাবেশ থেকে শাপলা চত্বরের দূরত্ব খুব বেশি নয়। ২৮ তারিখ সমাবেশের কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণাটি বিএনপির অনুমোদন নিয়েই করা হয়েছিল। যদিও শাপলা চত্বরে জামায়াতকে অনুমতি না দেয়ার কথা ডিএমপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারপরও ২৮ তারিখ জামায়াত-শিবির মাঠে নামবে এমনটি জামায়াতের দিক থেকে বলার অর্থ দাঁড়ায়, জামায়াত-শিবির, বিএনপিসহ ওই দিন ঢাকায় বড় ধরনের কিছু একটা করতে চায়। বিএনপির মহাসচিব দেশের সব জায়গা থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাও যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করেছিল। গ্রামগঞ্জে বোনাফাইড বিএনপির নেতাকর্মীদের গোপনে বলা হয়েছিল ২৮ তারিখ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডন থেকে সশরীরে মহাসমাবেশে উপস্থিত হবেন। কোথাও কোথাও বলা হয়েছে, ৩-৪ দিন ঢাকায় থাকার প্রস্তুতি নিয়ে আসতে। এবার শেখ হাসিনার পতন না ঘটিয়ে কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না। গোটা দেশেই এই দুটি খবর মুখে মুখে তৃণমূল পর্যন্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। সে কারণেই অনেকে দু-একদিন আগে থেকেই ঢাকায় চলে এসেছেন। যারা মহাসমাবেশে এসেছেন, তাদের বেশির ভাগেরই ২৮ তারিখ থেকে কয়েক দিন রাস্তায় অবস্থান করার মানসিক প্রস্তুতি ছিল। তাদের অনেকেরই ধারণা ছিল রবিবার থেকে সচিবালয়সহ অনেক কিছুই দখলে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু এসব পরিকল্পনার কিছুই লিখিত কোনো নির্দেশনা দিয়ে জানানো হয়নি। বিএনপির নেতারা ২৮ তারিখের মহাসমাবেশের ব্যাপারে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাতেই বোঝা গেছে ওই দিন তাদের এত নেতাকর্মীকে ঢাকায় আসতে বলার মধ্যেই গোপন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়টি ছিল। একই সঙ্গে জামায়াতও তাদের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার জন্য নির্দেশ দেয়ার মধ্যেও ছিল উভয় দলের মধ্যে বোঝাপড়ায় থাকা পরিকল্পনা। যুগপৎ আন্দোলনকারীদের অন্য দলগুলোর নেতাকর্মী-সমর্থক ঢাকার বাইরে তেমন বেশি নেই। সুতরাং বড় ধরনের কিছু করতে হলে জামায়াত ছাড়া বিএনপির চলবে না আবার জামায়াতেরও বিএনপি ছাড়া কিছু হওয়ার কোনো কারণ নেই। সরকার পতনের আন্দোলনে জনগণের অংশগ্রহণ ঘটেনি। সে কারণেই বিএনপি এবং জামায়াতের দেশব্যাপী ছড়িয়ে থাকা নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে যে কোনো শক্তি প্রয়োগকারী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলেই তাদের ধারণা। সে কারণেই ২৮ তারিখ এই দুই দলের মহাসমাবেশের পাশাপাশি সারাদেশ থেকে নিয়ে আসা কর্মীদের দিয়ে সরকার হটানোর পরিকল্পনা থেকে থাকতে পারে।
সারাদেশ থেকেই বিএনপি এবং জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ঢাকায় জড়ো হয়েছিল। বিএনপিকে ডিএমপি নয়াপল্টন বাদ দিয়ে মহাসমাবেশ করার যত অনুরোধই করে থাকুক না কেন, বিএনপি তাদের সমাবেশ বারবার নয়াপল্টনেই শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করার প্রতিশ্রæতি ডিএমপিকে দিয়েছিল। ডিএমপি শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তে অনড় থাকা বিএনপিকে অনুমতি দিয়েছিল। ডিএমপির কাছে খবর ছিল, তাদের সমাবেশে বাইরের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ভালোই ঘটবে। জামায়াত-শিবিরের অবস্থা তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। কিন্তু বিএনপি নেতাদের এমন বড় ধরনের সমাবেশ রাস্তার ওপর সুশৃঙ্খলভাবে ধরে রাখার মতো স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ছিল না। অথচ কমলাপুর থেকে মতিঝিল হয়ে নয়াপল্টন, কাকরাইল, বিজয়নগর ইত্যাদি সড়কের ওপরে তাদের কর্মী-সমর্থকরা দুপুরের আগেই অবস্থান নিয়ে ফেলে। অবস্থান গ্রহণকারী এসব নেতাকর্মীর মধ্যে নিশ্চয়ই এমন কোনো ধারণা ছিল যে, তাদের অবস্থানটি প্রলম্বিত হতে পারে। কর্মীদের শান্ত থাকার কোনো নির্দেশনা ছিল বলে মনে হয় না। তারা দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে সরকার পতনের বিশ্বাস নিয়ে। সেই বিশ্বাস কীভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে, সেই ধারণা কি তাদের ছিল? তাদের আচার-আচরণ দেখে মনে হয়েছে, পুলিশ, সাংবাদিক, বিচারপতিসহ যারাই তাদের সম্মুখে পড়বে, তাদের কেয়ার করার কোনো প্রয়োজন নেই। বিশাল এই সমাবেশ থেকে ফুঁ দিয়েই সবকিছু উড়িয়ে দেয়া যাবে- এমন ভাবনা-চিন্তাও অনেকের মধ্যে উদয় হতে পারে। নিজেদের দলের কিংবা জোটের এত বড় সমাবেশ দেখে তাদের তো তারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করার পর্যায়ে ছিল না। জামায়াত এবং ছাত্রশিবির যেহেতু এখন তাদের সঙ্গে আছে, তাই সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া তাদের পক্ষে মোটেও অসম্ভব নয়- এমন ধারণাও তাদের হতে পারে। সাংবাদিকদের তারা যে তাদের পথের কাঁটা কিংবা শত্রæ মনে করছেন, সেটি কি তাদের নেতারা কখনো জানতে চেষ্টা করেছেন, নাকি কেন্দ্রীয় নেতারা যেভাবে বেশ কিছু মিডিয়াকে বয়কট করেন, সেটারই প্রভাব বাইরে থেকে আসা কর্মীদের মধ্যে কিংবা এখানকার কর্মীদের মধ্যেও সংক্রমিত হওয়াটি তাদের রাজনীতির প্রভাবের সাফল্য হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন? প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেখলে তো কথাই নেই।
গণমাধ্যমে এ পর্যন্ত যেসব তথ্য প্রচারিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, দুপুর ১টার দিকেই কাকরাইল মসজিদের পাশ দিয়ে গাজীপুর থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বহনকারী কিছু বাস যাওয়ার সময় সেখানে অবস্থানকারী বিএনপির নেতাকর্মীরা তেড়ে আসার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ তাদের নিবৃত্ত রাখার চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু পুলিশের বাধা-নিষেধ শোনার অবস্থানে তারা ছিল না। তারা তখন মহাবিশ্ব জয় করার মানসিকতা নিয়ে ছিল। পুলিশের কথা শুনবে কেন? পুলিশের বাধাকে তারা তখন রীতিমতো অমান্য করতে থাকে। পুলিশ তাদের বারবারই নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছিল। ঘটনার সূত্রপাত এখান থেকেই। এখানে বসা নেতাকর্মীরা পুলিশ বক্সে হামলা করে, দেশের সর্বোচ্চ বিচারপতির বাড়ির গেট ভাঙা শুরু করে। পুলিশদের ওপর তেড়ে আসতে থাকে। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। সেটিকে নিবৃত্ত করার মতো তাদের দলের কোনো স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ছিল না কিংবা কেন্দ্রীয় নেতারা এগিয়ে আসেননি। ফলে শক্তি প্রয়োগ ঘটাতে এই কর্মীরা মোটেও দ্বিধা করেনি। পুলিশ তাদের যত হটিয়ে দিতে গেছে, তারা তত মারমুখী হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপরও নেতাকর্মীরা চড়াও হয়েছে। কারণ সাংবাদিকরা তাদের উচ্ছৃঙ্খল ও শান্তিভঙ্গের কাণ্ডকীর্তির ভিডিও কিংবা ছবি তুলছিল। পুলিশের ওপরও লাঠিসোটা নিয়ে তারা চড়াও হতে থাকে। পুলিশ যত টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এগোতে থাকে, নেতাকর্মীরাও তত পুলিশকে লক্ষ্য করে বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে। সেই অবস্থায় তাদের হটিয়ে দেয়া ছাড়া পুলিশের সম্মুখে ভিন্ন কোনো সুযোগ ছিল কী? ততক্ষণে নয়াপল্টনসহ বিভিন্ন অলিগলিতে বিএনপির কর্মীরা সাধারণ দোকানপাট ভাঙচুর করে অনেকেরই জীবন-জীবিকাকে নিঃশেষ করে দিয়েছে। জামায়াত-শিবির এটারই অপেক্ষায় ছিল। তারা শাপলা চত্বরে সুযোগ না পেয়ে আরামবাগ মাঠে নিজেরা নিজেদের বক্তৃতা শোনা বন্ধ করে দিয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগে নেমে পড়ে। রাজারবাগ পুলিশ হসপিটালে একদল কিশোর-তরুণ ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ি, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। যেখানেই পুলিশ এবং সাংবাদিককে দেখেছে, সেখানেই জড়ো হয়ে তাদের আক্রমণ, মারপিট করেছে ইচ্ছামতো। পুলিশ কনস্টেবল পারভেজকে যেভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে, তা কীসের ইঙ্গিত বহন করে? ৩০-এর বেশি সাংবাদিক এবং ৪০-এর বেশি পুলিশ সদস্য আহত হলো। পুলিশ কনস্টেবলকে বাঁচানো গেল না। আরো একাধিক পুলিশ গুরুতর আহত হয়েছে। বিএনপির কর্মীরা বক্তৃতা শোনার মুডে ছিল না। তারা মার দেয়ার জন্যই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে বলে মনে হয়। নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল এই করেই বোধহয় শেখ হাসিনাকে গদি থেকে নামিয়ে ফেলা যাবে। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই বক্তৃতা দেয়ার সুযোগ পেলেন না। পুলিশ যথারীতি সবাইকে সড়ক থেকে তাড়িয়ে দিতে বাধ্য হলো। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অপেক্ষা করেননি, দলের নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের খবর তিনি কতটা জেনেছিলেন? তিনি রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকে দিলেন। জামায়াতও সেই ঘোষণারই প্রতিধ্বনি করল। এরপর ভয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য যানবাহনে চোরাগুপ্তা হামলা এবং অগ্নিসংযোগের বেশ কিছু ঘটনা ঘটানো হলো। পুলিশ মারা, সাংবাদিক এবং পুলিশের ওপর আক্রমণ করার ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারাই দেখি হরতাল ডেকে আরো কিছু প্রাণ সংহারের ব্যবস্থা করল। মধ্যরাতে ডেমরায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হলো। তাতে বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা হেলপার অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা গেল। প্রত্যুষ থেকে দুপুর পর্যন্ত আরো কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হলো। সারাদেশের বেশ কয়েক জায়গায় অগ্নিসংযোগ যেমন হয়েছে চারজনের মতো মৃত্যুরও ঘটনা ঘটেছে।
এত ঢাকঢোল পিটিয়ে যে মহাসমাবেশ ২৮ তারিখ শুরু হয়েছিল, সেটি তাদের এবং জামায়াত-শিবিরের বেপরোয়া উচ্ছৃঙ্খল এবং পুলিশ ও সাংবাদিক পেটানো কর্মীদের দ্বারা শেষ পর্যন্ত পণ্ড হয়ে গেল। এরপরই বিএনপির অফিসে চলে এক রহস্যপুরুষের সংবাদ সম্মেলন। বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনকারীরা দেশের জনগণের কাছে না গিয়ে কিংবা তাদের যুক্ত না করে সরকার পতনের আন্দোলনে বিদেশিদের দোয়া, আশীর্বাদ, স্যাংশন, ভিসানীতি, নানা ধরনের বাধানিষেধ আরোপের ওপর নির্ভরশীল। তার সর্বশেষ একাঙ্কিকা দলীয় অফিসে ২৮ তারিখ বিকালে উপস্থাপন করার ব্যবস্থা করেছে জনৈক বাংলাদেশি আমেরিকান মিয়ান আরাফী ওরফে মিঞা জাহিদুল ইসলাম আরাফী। তাকে বিএনপি অফিসে এনে জো বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত লে জে হাসান সারোয়ার্দী। তার পাশে ছিলেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মিয়ান আরাফী সাংবাদিকদের সম্মুখে বাংলাদেশকে আরো স্যাংশনের জুজু দেখানোর জন্য তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে টুইট করার কথা জানান এবং বাংলাদেশের ওপর আরো স্যাংশন আসছে এমন কথাও দাবি করেন। মার্কিন দূতাবাস সঙ্গে সঙ্গেই এই ব্যক্তির তাদের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়ে দেয়। সুতরাং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ এই ব্যক্তিকে নিয়েই বছরের সেরা রাজনৈতিক তামাশা করেছে বিএনপির কয়েকজন নেতা। ২৯ তারিখ সেই মিয়ান আরাফী দেশ ছাড়ার প্রাক্কালে বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন। অথচ মহাসচিব মির্জা ফখরুল এ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। আসলেই বিএনপি যে কীভাবে চলছে, কার সিদ্ধান্তে চলছে সেটিই বোঝা দায়।
২৯ তারিখ বিএনপির ডাকা হরতাল কিছু আতঙ্ক, অগ্নিসংযোগ এবং কোথাও কোথাও ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে, বিকালে জেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপির নেতাদের অনেকেই এখন আত্মগোপনে চলে গেছেন।
২৮ তারিখ নিয়ে নানা জিজ্ঞাসা ছিল। সেসব জিজ্ঞাসার উত্তর কিছু কিছু ২৮ তারিখেই জানা গেছে। কিন্তু এই মহাসমাবেশ যে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা থেকে করা হয়েছিল, তাও হয়তো শিগগির জানা যেতে পারে। গত কয়েক মাস শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে যে ভাবমূর্তি বিএনপি দাঁড় করিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা রক্ষা করতে পারেনি। জামায়াত এবং বিএনপি স্বরূপে আবির্ভূত হয়েছে। এর পরিণতি এবার কেমন হবে জানি না। তবে সরকারকে সতর্কতার সঙ্গে কথা বলা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের প্রতিশ্রæতি দেয়া ও বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতেই হবে। দিন শেষে মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনকেই মনে রাখবে।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়