জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যাংকের পরীক্ষা স্থগিত

আগের সংবাদ

ইমামদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী : তৃণমূলে শান্তি বজায় রাখতে আপনাদের সহযোগিতা চাই

পরের সংবাদ

সহিংস পথ বেঁচে নিল বিএনপি!

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন হরতাল-অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচি থেকে বিরত থাকলেও আবারো সেই একই পথে ফিরল বিএনপি। ২০১৩ থেকে ২০১৫- প্রায় ৩ বছর লাগাতার চরম সহিংস রাজনীতির পথ অবলম্বন করে বিএনপি শুধু ব্যর্থ নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। গত শনি ও গতকাল রবিবার চরম সহিংসতার পথ অবলম্বন করায় নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। দুই দিন হরতাল-সমাবেশের নামে যে রকম তাণ্ডব চালানো হয়েছে, তাতে মানুষ বুঝেছে উল্লিখিত শক্তি ছাড়া বিএনপির আর কোনো অবলম্বন নেই। এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায় বিএনপির নেতাকর্মীরা এড়াতে পারে না। বিশেষ করে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর আক্রমণ অত্যন্ত নিন্দনীয়। রাজনীতি অত্যন্ত গতিশীল একটি বিষয়। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে সে রাজনীতি অস্তিত্ব হারাবে, এটাই স্বতঃসিদ্ধ। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচনে অনড় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিপরীতমুখী এই অবস্থান বজায় রেখে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে গত বছরের শেষ ভাগ থেকেই রাজধানীতে একই দিনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে আসছে দুপক্ষই। এ নিয়ে রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়ালেও এতদিন রাজধানীতে বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি। গত শনি ও গতকাল রবিবারের ঘটনা রাজনীতিমহলকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। বিএনপি এমন সহিংস হয়ে উঠল কেন? পছন্দের ভেন্যু নয়াপল্টনেই মহাসমাবেশের অনুমতি পেয়েছিল বিএনপি। দলটির ঘোষণা ছিল, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পালন করবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশস্থলে আসেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাকরাইল মোড়ে তারা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করেন। তখন বাস, পিকআপসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালান নেতাকর্মীরা। এতে কাকরাইল এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। ব্যাপক ভাঙচুর ও আগুন জ¦ালানোর ঘটনা ঘটে। আগুন দেয়া হয় পুলিশ বক্সে। এমনকি প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালান বিএনপির নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ চলাকালে এক পুলিশ সদস্য নিহতসহ ৪০ সদস্য আহত হন। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত হন অন্তত ১০ সাংবাদিক। তাদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এ হতাহতের দায়ভার কে নেবে? নৈরাজ্য ও সহিংসতা, পুলিশের ওপর শক্তি প্রয়োগের মধ্য দিয়ে পণ্ড হয়ে যায় সমাবেশ। সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরপরই পরদিন সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। বহু ব্যবহারে অকার্যকর হয়ে পড়া হরতালকে আবারো ফিরিয়ে আনা হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী জোর করে কাউকে হরতাল পালনে বাধ্য করা বা হরতালে বাধা সৃষ্টি করা, ভাঙচুর করা, মারামারি করা ইত্যাদি প্রচলিত আইনেই ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য রয়েছে। দণ্ডবিধিসহ অন্যান্য আইনে ওই সব অপরাধের শাস্তির সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। হরতালের নামে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিএনপি। বিএনপি ভালো করে জানে এ রকম সহিংস জ¦ালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতির মাধ্যমে তারা কিছু অর্জন করতে পারবে না। এর উদাহরণ ২০১৪-১৫ সাল। তখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ৯০ দিন লাগাতার অবরোধের নামে ভয়াবহ জ¦ালাও-পোড়াও চালিয়ে, ঘুমন্ত মানুষ নিয়ে চলমান রাতের বাসে আগুন, রেলে আগুন, ফুটপাতের দোকানে আগুন অর্থাৎ সব রকম ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েও তারা কিছু অর্জন করতে পারেনি। দুদলের মধ্যে বোঝাপড়া না হলে আগামীতে এ ধরনের সংঘাত আরো বাড়বে। এ অবস্থায় দুদলকেই সংযত হওয়া জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়