কাপাসিয়ায় গ্রেপ্তার ৭৬, বিএনপির দাবি শতাধিক

আগের সংবাদ

ভুল চালে ব্যাকফুটে বিএনপি : দিতে হচ্ছে সহিংসতার খেসারত > নতুন করে আন্দোলনে গতি ফেরানো কঠিন হবে

পরের সংবাদ

বঙ্গবন্ধু টানেল : যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সরকারের আমলে যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এক এক করে মেগা প্রকল্পগুলো যোগাযোগে নতুন দুয়ার সৃষ্টি করছে। ১৫ বছর আগে মানুষের কাছে যা ছিল স্বপ্ন, তা বাস্তবে রূপদান করছে বর্তমান সরকার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যার একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় বড় বড় প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান। শেখ হাসিনার এ মেগা প্রকল্পগুলো করার ঘোষণায় অনেকেই তা স্বপ্ন হিসেবে নিয়েছিল। অসম্ভব বলে উল্লেখ করেছিল। স্বপ্ন দেখতে সাহস লাগে, দূরদর্শিতা লাগে। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলার মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন।
বড় মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’। গতকাল জননেত্রী শেখ হাসিনা ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধন করেন। ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ চট্টগ্রামের মানুষের জন্য অনেক খুশি ও আনন্দের সংবাদ। টানেল হওয়ার কারণে আনন্দে আত্মহারা চট্টগ্রামবাসী। কারণ এটি চট্টগ্রামের বুকেই হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সর্বস্তরের মানুষের পক্ষ থেকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খুশি, আনন্দের আমেজ বইছে দেশের প্রথম টানেল ঘিরে। সারা বাংলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ করছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু টানেলের জন্য ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। দেশের প্রথম এই টানেল নির্মিত হচ্ছে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায়। টানেল নির্মাণের টিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। বঙ্গবন্ধু টানেলের কারণে দেশের যে কোনো জায়গা থেকে চট্টগ্রাম সিটিতে প্রবেশ না করেই পতেঙ্গা হয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে আনোয়ারা হয়ে দ্রুত কক্সবাজার চলে যেতে পারবে। এতে ভ্রমণপিপাসুদের অর্থ, সময় বাঁচবে। টানেলের দুই প্রান্তে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক। পাশাপাশি টানেলের আনোয়ারা সংযোগস্থলে ৭৭২ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।
টানেলের মাধ্যমে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর ও মহেশখালীর সংযুক্ত হবে পুরো দেশ। এছাড়া বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের এবং পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। সেন্টমার্টিন, বান্দরবান টানেল দিয়ে অতি সহজেই যেতে পারবে। টানেলের কারণে পর্যটন খাত আরো মজবুত হবে। এ টানেলের ফলে ইতোমধ্যে টানেলের দুই পাশে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আনোয়ারা উপজেলার টানেল প্রান্তে সংযোগ সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠছে অসংখ্য শিল্প কারখানা। টানেল ঘিরে পর্যটন ও শিল্পায়নসহ অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। এ টানেল চালু হলে টানেলের দুই পাশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই মিনিট। মানুষের সময় বেঁচে যাওয়ার ফলে অর্থনীতিতে গতি আসবে। বিদেশি পর্যটক বাড়বে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে। মানুষের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হবে, বিশেষ করে চট্টগ্রামের মানুষের। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে। নদীর মাঝ পয়েন্টে সুড়ঙ্গের গভীরতা প্রায় ১৫০ ফুট। প্রতিটি ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার। ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ জিডিপিতে অবদান রাখবে। টানেল চালু হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাবে শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ। এ টানেলের মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রামে ব্যবসা-বাণিজ্যে আমূল পরিবর্তন ঘটবে। নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার কারণে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। বেকারত্ব কমবে। বাড়বে অর্থের আদান-প্রদান। অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব পড়বে। আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম হবে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’। এগিয়ে যাবে দেশ। সক্ষমতা বাড়বে বিশ্বের কাছে। সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

রায়হান উদ্দিন : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়