বদলি হলেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১৫ কর্মকর্তা

আগের সংবাদ

বেলজিয়াম সফর শেষে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

ঘূর্ণিঝড় হামুন : ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

উদ্বেগ ও শঙ্কার মধ্যে তাণ্ডব চালিয়ে উপকূল পেরিয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় হামুন। হামুনের আঘাত থেকে অধিকাংশ উপকূলীয় এলাকা রক্ষা পেলেও কক্সবাজার ভয়ংকরভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রামের উপকূলীয় সাত উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব উপজেলায় অন্তত ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। কেউ কেউ প্রতিবেশী ও স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পায়নি উপদ্রুত এলাকার লোকজন। হামুনের তাণ্ডবে পুরো কক্সবাজার লণ্ডভণ্ড হয়েছে। বাতাসের তীব্রতায় কক্সবাজার পৌরসভা, উপকূলীয় উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, ঈদগাঁও ও টেকনাফসহ ৭১টি ইউনিয়নে ৩৭ হাজার ৮৫৪টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বেশকিছু বিধ্বস্ত ও আর কিছু আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ বাসিন্দা। দেয়াল চাপায় নিহত হয়েছেন তিনজন। সাম্প্রতিক সময়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে প্রাণহানি প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে, সেখানে তিনজনের মৃত্যু অসচেতনতা না অবহেলায় হলো- তা খতিয়ে দেখা দরকার। এদিকে কুতুবদিয়া-মহেশখালী ও কক্সবাজার শহরের সিংহভাগ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়নি। মোবাইল নেটওয়ার্কও স্বাভাবিক হয়ে আসেনি। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে হামুনের তাণ্ডবে পল্লী বিদ্যুতের ৩৫৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। বিকল হয়েছে ২৩টি ট্রান্সফরমার। ৪৯৬ স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে। এছাড়া ৮০০টি স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালুকরণে উদ্যোগী হতে হবে। হামুনের আঘাতে দোকানপাট, হোটেল, রিসোর্টও ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক গাছপালা ভেঙেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এবারে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। যার ফলে জনসাধারণের নিরাপদে সরে আসার আগ্রহ দেখা যায়নি। ফলে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। এমন অভিযোগের সত্যতা কতটুকু খতিয়ে দেখা উচিত। বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ¡াসের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো প্রতি বছর এ দেশের মানুষের মোকাবিলা করতে হয়। সিডর, আইলা, ফণী, ইয়াসের মতো ভয়াবহ ও প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর এবার হামুন নতুন করে মারাত্মক আঘাত হেনেছে কক্সবাজারে। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা ধরনের আশঙ্কার বিষয় আলোচনায় আসছে। সঙ্গত কারণেই দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। গ্রহণ করতে হবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। দুর্গত এলাকায় ঘরবাড়ি, জমির ফসল হারিয়ে যারা দিনাতিপাত করছেন, তাদের পুনর্বাসনে প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। উপকূলীয় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোগত যে ক্ষতি হয়েছে, সেসব মেরামতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে ফসল ও ফসলি বাগান এবং দোকানপাট ও রিসোর্টের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে কর্তৃপক্ষকে দাঁড়াতে হবে। মানুষ প্রাথমিকভাবে সরকারি পর্যায়ে যে সহযোগিতা পেয়েছে তা সাময়িক। এখন তাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়