ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের প্রতিবেদন পেছাল

আগের সংবাদ

শ্রমবাজারে ফের অশনি সংকেত : মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানো অর্ধেকে নেমে এসেছে, গাজা পরিস্থিতি নতুন ধাক্কা হয়ে এসেছে

পরের সংবাদ

এবারের পূজা অর্থনীতি ও নির্বাচনী রাজনীতি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আজ মঙ্গলবার এবারের পূজার শেষ দিন। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু সমাজের সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজা শেষ হবে। এবারের পূজা শরৎ শেষে হেমন্তে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এর আলাদা বৈশিষ্ট্য পূজারিদের কাছে রয়েছে। সে কারণে পূজায় এবার অমঙ্গল, অশান্তি, হিংসা-বিদ্বেষ ইত্যাদি যেন মানুষের ক্ষতি সাধন করতে না পারে তার জন্য মণ্ডপে মণ্ডপে বিশেষভাবে প্রার্থনা করা হয়েছে। এ বছর ৩২ হাজার ২০০টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৫০টি বেশি। এ বছর অনেকটা নির্বিঘেœই দেশব্যাপী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটিই বোধহয় আজ এসে বলা যেতে পারে। বিষয়টি আমাদের সবার জন্যই স্বস্তিদায়ক। দুবছর আগের যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছিল, তা সবার জন্যই বেদনাদায়ক ছিল। গত বছর ভালোভাবেই পূজা হয়ে গেছে। এবার আশা করা গিয়েছিল, সব কিছু নির্বিঘেœ থাকবে। বছরটি যেহেতু নির্বাচনী বছর, তাই কেউ কেউ নানা শঙ্কায় থাকলেও বৃহত্তর হিন্দু সমাজের সবচেয়ে আনন্দের দুর্গোৎসবে এবার কিছু ঘটুক নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কেউ তেমনটি চায়নি। তাছাড়া সরকার এবং সরকারি দল ও এর অঙ্গসংগঠনসমূহ নিরাপত্তার বিষয়টি আগে থেকেই গুরুত্ব দিয়েছে বলে দেশব্যাপী প্রচারিত হয়েছে। ফলে এর প্রভাব মণ্ডপে মণ্ডপে ইতিবাচকভাবে সাড়া পড়েছে বলেই ধারণা করা যায়। গণমাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা গত কয়েক দিন প্রচারিত হয়েছে। তাতে শুধু পূজারিরাই নন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষজনও বিভিন্ন পূজামণ্ডপে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতারা, বিএনপির মহাসচিব এবং দু-একজন নেতা শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি বক্তব্য দিয়েছেন।
দেশের ৮ শতাংশ মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। যেহেতু এটি তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব, তাই এটিকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি, আয়োজন, কেনাকাটা, অনুষ্ঠান, খাবার-দাবার ইত্যাদি কয়েক দিন চলেছে। ফলে এই উৎসবের অর্থনৈতিক গুরুত্ব জাতীয় অর্থনীতিতে স্থান করে নিয়েছে। পূজার মণ্ডপ তৈরিতে কারিগর, মিস্ত্রি, জোগানদাতা অনেকেই পূজার দু-তিন মাস থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। প্রতিটি পূজামণ্ডপেই নানা ধরনের বিনিয়োগ ঘটে। হিন্দু সম্প্রদায়ের অবস্থাপন্ন পরিবার, ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান এসব মণ্ডপকে সুসজ্জিত করার জন্য যা যা করণীয় দরকার, তা করে থাকেন। দেশের কোথাও কোথাও এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ পূজামণ্ডপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি। তাছাড়া সাধারণ পরিবারের হিন্দুরাও এই উপলক্ষে কাপড়-চোপড়, জুতা-স্যান্ডেল, গহনা ইত্যাদি নিজেদের ও নিকটাত্মীয়দের জন্যও কেনাকাটা করে থাকেন। দেশে এখন উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের বিকাশ ঘটে চলছে। ফলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যারা এসব শ্রেণিতে অবস্থান করছে, তারা এই পূজাতেই সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা করে থাকেন। হতদরিদ্ররাও সামর্থ্য অনুযায়ী কেনাকাটা করে থাকেন। অনেকটা যেমন আমাদের দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন ঈদ উৎসবে কেনাকাটা করে থাকেন। এখানেও বিষয়টি একইরকম ঘটে থাকে। বাজারে সে কারণে গত কয়েক দিনে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়েছিলেন। কেনাবেচাও অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় বেশি হয়েছে। খাবার-দাবার, মিষ্টান্ন, শাকসবজি, ফল-ফলাদির আয়োজন এই পূজাতে কমবেশি সব হিন্দুদের বাড়িতেই ঘটেছে। মণ্ডপগুলোতে শুধু পূজারিরাই নন। আগত অতিথিদের মধ্যেও খাবার বিতরণ হয়েছে। এ সময় স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরাও বেশ ব্যস্ত ছিলেন। বিভিন্ন মণ্ডপে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। নামিদামি শিল্পীদের পরিচালনাও সবাই শুনতে ও দেখতে এসেছে। সবকিছু মিলিয়ে পূজার এই দিনগুলোতে পূজার অর্থনীতি বলে একটি ধারণার সংযুক্তি ঘটেছে। কত টাকা এতে বাজারে বৃত্তাকারে ঘুরেছে, তার হিসাব অর্থনীতিবিদরাই দিতে পারবেন। তবে যেহেতু দেশের ৮ শতাংশ মানুষের জাঁকজমকপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ছিল এটি, তাই এর অর্থনৈতিক অবস্থানটি মোটেও ছোট হওয়ার কথা নয়। বাজারে শাকসবজি ও ফলফলাদির বিক্রেতারা এ সময় দাম বৃদ্ধির ওজর হিসেবে পূজার কেনাকাটার কথা যখন বলে, তখন বুঝতে হয় যে আমাদের ব্যবসায়ীদের হাত থেকে ঈদ, বৈশাখী এবং পূজারও নিষ্কৃতি নেই। উপলক্ষ একটা পেলেই যে যার মতো করে জিনিসের দাম হাঁকাতে থাকে। পূজার এই কয়েক দিনও শাকসবজি বিক্রেতারা যেখানে পূজায় অতিরিক্ত কেনাকাটার কথা বলছেন, তাহলে বোঝা যেতে পারে অর্থ প্রবাহের উৎস হিসেবে কাঁচাবাজার, পোশাক-আশাকের বাজার, খাবার-দাবারের দোকান বিশেষভাবে স্থান করে নিয়েছে। প্রতিমা তৈরির সঙ্গে যেসব কারিগর, সরঞ্জামাদি, রং, আসবাব ইত্যাদিও কম যায়নি। সব মিলিয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলার মতো একটা পর্বই দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমাদের দেশ এবারো পেয়েছে। সেটা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সেখানে হিন্দু-মুসলিম বলে আলাদা করার কিছু নেইও। এটি হচ্ছে জাতীয় জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বিষয়। অনেকে নানা বিশ্বাস ও অবস্থানের কারণে নিজেদের গুটিয়ে রাখলেও তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে এর থেকে বিযুক্ত রাখেনি। সাংস্কৃতিকভাবেও যেহেতু এই পূজার একটি বড় দিক রয়েছে, তাই এর সঙ্গেও অনেকেরই আয় উপার্জন কিংবা চিত্তবিনোদনের বিষয়-আসয় গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। যতই আমরা বিষয়গুলোকে কেবলই ধর্মীয়ভাবে চিত্রায়িত করি না কেন; এর সঙ্গে অর্থনীতি, জীবনজীবিকা, সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান, বিনোদন, যোগাযোগ ইত্যাদি গভীরভাবে জড়িত। সে কারণেই দুর্গাপূজার উৎসব আজ হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক দিনের আনন্দোৎসব। এরপর বিষণ্নতার মধ্য দিয়ে পূজা শেষ হলেও প্রসন্নতার বিষয়টি মোটেও উপেক্ষিত নয়। সেটি আগামী এক বছরের জন্য গোটা হিন্দু সমাজ অপেক্ষা করে থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনও এর প্রভাবেই সমৃদ্ধ হবে।
মহালয়া থেকে শুরু হওয়া দুর্গাপূজা ষষ্ঠীতে এসে প্রতিদিন অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পূজার অষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজা ও সন্ধিপূজা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এদিন নারীদের বিশেষ মর্যাদাকে সবাই গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার কথা বলে। সেভাবেই তাদের পূজাটি শিক্ষণীয়। মাকে মর্যাদা দেয়ার শিক্ষা থেকে গোটা নারীসমাজকেই এদিন সম্মান জানানো হয়ে থাকে। সেই আশীর্বাদই সবাই এদিন একে অপরকে করে থাকে। এদিনই বেশি মানুষের উপস্থিতি পূজামণ্ডপে ঘটে থাকে। এবার অষ্টমীতে শেখ হাসিনা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেছিলেন। তার বক্তৃতাটি সংক্ষিপ্ত হলেও এতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামের কথাটি উল্লেখ করে সবাইকে তিনি পূজা উদযাপনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে এই পূজা সম্পন্ন হোক, সেটাই আমরা চাই। আমরা পাশে আছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠনের নেতাকর্মী প্রত্যেকেই পাশে থাকবেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন এখানে না ঘটতে পারে, সে জন্য আমরা সবাই সতর্ক থাকব।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত ২০ অক্টোবর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা সঙ্গে বৈঠক শেষে এবার পূজা নির্বিঘেœ শেষ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাদের নির্দেশ দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। সেটি দেশব্যাপী সরকার এবং দলের নীতি হিসেবে কাজ করেছে। ওবায়দুল কাদের পূজার সপ্তমী তিথিতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে বলেন, ‘রাজনীতিকে অশুভ শক্তিমুক্ত করতে হবে। সমাজে যারা অন্যায় অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ’ হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। বিভিন্ন ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা এবার পূজামণ্ডপে গেছেন, দেখা সাক্ষাৎও করেছেন বলে গণমাধ্যমের ছোট আকারে খবর থেকে জানা গেছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতীতের মতোই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী নানারকম বাধানিষেধের কথা প্রচার করে মানুষকে এর থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছে। সেটি নতুন কিছু নয়। দেশের অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার সপ্তমীতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে উপস্থিত হয়ে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা প্রদান করেন। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘যত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে, দেখা গেছে সেগুলোর সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর লোকজন জড়িত। এসব কথা আমার নয়, রানা দাশগুপ্তের। আপনাদের যিনি শ্রদ্ধেয় নেতা। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, সরকার চাইলে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হবে, আর না চাইলে সেটি হবে না। বিএনপি শুধু অসাম্প্রদায়িকতাতেই বিশ্বাস করে না, অন্য সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করার চেষ্টা করে- রমনা কালীমন্দির ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। বিএনপির সরকারের সময় তা উদ্ধার করা হয়। ঢাকেশ্বরী মন্দিরের জায়গা দখল হয়ে গিয়েছিল। ঢাকার সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা এই জমি উদ্ধার করে দিয়েছিলেন।’ মির্জা ফখরুল এখানে অনেক বিষয়ের অবতারণা করেছেন, যেগুলোর মধ্যে অন্যকে দোষ দেয়া এবং নিজেকে দোষমুক্ত রাখার উদ্দেশ্য প্রকাশিত হয়। তিনি দেশে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার কথা উল্লেখ করে শাসক গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতার কথা বলেছেন। কিন্তু সাম্প্রদায়িক ও লুটপাটকারী গোষ্ঠী কী বিএনপির মধ্যে নেই? যেসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছিল, তার সঙ্গে স্থানীয় সাম্প্রদায়িক এবং লুটপাটকারী যারা ছিল, তাদের কেউ কি শাসকদলের বাইরে নেই? ২০০১-০৩ সালে বাংলাদেশে হিন্দু সমাজের ওপর যে বর্বরতা, নারী-ধর্ষণ, লুটপাট, মন্দির-গির্জা ভাঙচুর এবং হিন্দুদের দেশছাড়া করার নজির স্থাপন করা হয়েছিল সেটি কোন কোন দলের নেতাকর্মীর দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল, তা বোধহয় হিন্দু সমাজ কেন বাংলাদেশের অন্য সম্প্রদায়ের মানুষও ভুলে যায়নি। তিনি দাবি করেছেন, ‘বিএনপি শুধু অসাম্প্রদায়িকতাতেই বিশ্বাস করে না, অন্য সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা করার চেষ্টা করে। ২০০১-০৬ সালে কি সেই নমুনা দেখানো হয়েছিল? বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার কারা ফিরিয়ে এনেছিল? নির্বাচনে কারা ধর্মের জিগির তোলে? ‘আওয়ামী লীগে ভোট দেয়া হলে মসজিদে উলুধ্বনি শোনা যাবে’ এ কথা তো বেগম খালেদা জিয়ার মুখ থেকেই উচ্চারিত হয়েছিল। দলীয়প্রধান যখন এমন নগ্নভাবে ধর্মকে নির্বাচনে ভোট পাওয়ার জন্য ব্যবহার করেন, তখন সেই দলের মতাদর্শ কেমন তা খুব একটা লুকিয়ে রাখা যায় না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির মতাদর্শগত অবস্থান সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে। ভারতবিরোধিতার নামে হিন্দুত্বকে রাজনীতিতে মুসলমানদের জন্য জুজুর ভয় দেখানোর অপকৌশল ছাড়া আর কিছু নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ২৫ বছরের চুক্তিকে গোলামির চুক্তি বলা হয়েছে। কিন্তু সেই চুক্তির ভেতরে কি ছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, অর্থনীতি ইত্যাদির জন্য এর প্রয়োজনীয়তা কি ছিল তা ঢেকে রেখে মানুষের কাছে গোলামির চুক্তি হিসেবে অপপ্রচারের মধ্যে সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক মনোবৃত্তিরই প্রকাশ ছিল। অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে তো এমন জিগির তোলা হয়নি কখনো। মির্জা ফখরুল ইসলাম হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে নিজের দলের এমন ঢোল যখন বাজিয়েছিলেন, তখন ২০০১-০৬ সালের ঘটনাবলির অনেক ভুক্তভোগীই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এসব বক্তৃতা রাজনীতির মাঠে করা যায়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানে করা হলে তা খুবই বেমানান সাজে।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়