আইজিপি : দুর্গোৎসব ঘিরে এখন পর্যন্ত কোনো শঙ্কা নেই

আগের সংবাদ

সতর্ক সরকার, প্রস্তুত দল : সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা আ.লীগের, প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ > ডেডলাইন ২৮ অক্টোবর

পরের সংবাদ

কর্ণফুলীর বঙ্গবন্ধু টানেল : পরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নে গুরুত্ব দিন

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে যান চলাচল শুরু হচ্ছে চলতি মাসের শেষেই। আগামী ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নির্মিত সড়কপথ বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন থেকে শুরু হবে যান চলাচল। উদ্বোধনের আগমুহূর্তে টানেলের দুই প্রান্তে একটি করে স্ক্যানার বসানোর কাজ চলছে। এই টানেল বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেলটি নদীর তলদেশের ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে। এটি পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিনিট। টানেলের ভেতরে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার। তবে শুরুতে গতি কিছুটা কম রাখা হতে পারে। পানির উপরিভাগ থেকে ৪২.৮ মিটার গভীরে নদীর তলদেশে টিউবের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে চলাচলের এ বিশেষ পথ। দুটি টিউবের একটি আসার জন্য, আরেকটি যাওয়ার জন্য। প্রথম বছরে এ টানেল দিয়ে ১৭ হাজারের বেশি গাড়ি পারাপার হবে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। একই সঙ্গে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এবং মিরসরাই ইকোনমিক জোনের যোগাযোগ স্থাপনে সেতুবন্ধন হবে চট্টগ্রাম বন্দর। কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের সঙ্গে সম্মিলন ঘটিয়েছে টানেল। এই টানেল কেন্দ্রকে করে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্পকারখানা। ঘাঁটি গাড়ছে ব্যাংকসহ নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্নœ শ্রেণিপেশার নেতারা বলেছেন, টানেলকে ঘিরে চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার পর্যন্ত শিল্পায়ন ও পর্যটনের যে অপার সম্ভাবনা রয়েছে তার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রেখে শিগগিরই একটি ডিটেইলড মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে গত শনিবার নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল : এ লিপ টুওয়ার্ডস ভিশন-২০৪১’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ কথা বলেন। তাদের এ প্রস্তাবনা গুরুত্ব দিয়ে বিচেনায় নেয়া দরকার। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, এই টানেলের পরিপূর্ণ সুফল পেতে কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়ে গড়ে তুলতে হবে পরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন। সহজ শর্তে শিল্প প্লটসমূহকে বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে দ্রুত বরাদ্দ প্রদান করে নিশ্চিত করতে হবে সব অবকাঠামোগত সুবিধা। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বাড়াতে দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য বেসরকারি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। কারণ দক্ষিণ প্রান্তে শিল্পায়ন হলে টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল আরো বাড়বে। এছাড়া মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি বে-টার্মিনাল প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম ৮ লেইন মহাসড়ক, কুমিল্লা থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রকল্প, সাবরাং ট্যুরিজম প্রকল্পসহ এ অঞ্চলে যেসব মেগা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। কারণ সঠিক সময়ে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে টানেলের পরিপূর্ণ সুফল পাওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক ১০টি মেগা প্রকল্পের একটি হিসেবে বঙ্গবন্ধু টানেল দেশের সার্বিক অর্থনীতি এবং প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি। চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি যেসব প্রস্তাবতা তুলে ধরেছেন- বিষয়গুলো গুরুত্ব দিযে বিবেচনায় আনতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাহলে আমাদের কাক্সিক্ষত সাফল্য আসবে। পদ্মা সেতুর পর দেশের আরেকটি বড় অর্জন হবে এই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্বপ্রথম পাতালপথ। এ টানেল আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে প্রত্যাশা রাখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়