নার্ভাস নাইনটিতে সবজির দাম

আগের সংবাদ

তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় এনে দেশকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে

পরের সংবাদ

শারদীয় দুর্গাপূজা : জগতের আনন্দযজ্ঞ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শারদীয় দুর্গাপূজা পাঁচ দিনব্যাপী উদযাপিত হয়ে থাকে। কিন্তু আপামর বাঙালি যে দিনটায় পূজার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকেন, সেটা একবাক্যে মহাষ্টমী বললেই চলে। সে সকালের পুষ্পাঞ্জলিই হোক বা সন্ধিপূজা। বাঙালির প্রাণের উৎসবে এই দিনটি বড়ই পূজাময় এবং আনন্দের। সকাল থেকেই প্যান্ডেলে পূজা দিতে হাজির হন সবাই। অষ্টমী পূজার শেষে শুরু হয় পুষ্পাঞ্জলি। এবার তিথি মতে, পুরো সকালটাই পাওয়া যাচ্ছে মহাষ্টমীর পূজায়। তারপর অঞ্জলি। অষ্টমীর অঞ্জলির মন্ত্রে পাড়ায় পাড়ায় সে যেন এক অন্য সকাল। এবার অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলির পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু সন্ধিপূজার তোড়জোড়। পরপর থাকায় অষ্টমী পূজায় পুষ্পাঞ্জলি দেয়ার পর উপবাস বজায় রেখে সন্ধিপূজায় পুষ্পাঞ্জলির সুযোগটাও কাজে লাগাতে চেয়েছেন অনেকে। বহু পরিবারে এই দিনটায় নিরামিষ খাওয়ার চল আছে। মহাষ্টমীতে অনেক বারোয়ারিতেই ভোগের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ফলে দুপুরে পাড়ার সবাই মিলে মায়ের ভোগ খাওয়ার আয়োজন পূজার আনন্দে অন্য মাত্রা যোগ করে। মহাষ্টমীর সকালে তাই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখার ভিড় ছিল অপেক্ষাকৃত কম। তবে বেলা যতই গড়িয়েছে, ততই ভিড় জমতে শুরু করেছে। চুটিয়ে ঠাকুর দেখার সুযোগ আর ২ দিন। এদিন আর মহানবমী। তাই পূজা, পুষ্পাঞ্জলি সেরেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়ার পরিকল্পনা সবার থাকে। ঢাকের বাদ্য, কাঁশর ঘণ্টাা, শাঁখ ও উলুধ্বনিতে দেশের কয়েক হাজার পূজামণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয়েছে শারদীয় দুর্গা উৎসবের মহাসপ্তমী। চক্ষুদানের মাধ্যমে আবাহন করা হয়েছে দেবী দুর্গাকে। নবপত্রিকা প্রবেশ, দেবীস্নান ও চণ্ডীপাঠর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে সিংহবাহিনীর সপ্তমীবিহীত পূজা। ভক্তদের পাপ থেকে মুক্তিসহ পৃথিবী থেকে আসুরিক শক্তির বিনাশ করতে ষেড়শপচারে আরাধনা করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার। মহাষ্টমী তিথিতে দুর্গার নবম রূপ মহাগৌরীর পূজা হয়। তপস্যার বলে গৌরবর্ণ ধারণ করেন হিমালয় রাজের কন্যাস, পার্বতী। তাই শিবের অর্ধাঙ্গিনীর নাম হয় গৌরী। দেবীর স্বরূপ, পূজার নিয়ম ও মন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো এখানে। উল্লেখ্য, মহাগৌরীর পূজা করলে ভক্তদের সব দুঃখ-কষ্ট দূর হয় ও সবার মনস্কামনা পূর্ণ করেন তিনি। অষ্টমী মানেই কিন্তু পুষ্পাঞ্জলি দেয়া, নতুন জামাকাপড় পরা। স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্রে ঠাকুরের সামনে বসে তিনবার হাতে গঙ্গাজল নিয়ে আচমন করা হয়। হাতে ফুল নিয়ে ও তিনবার পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ে ঠাকুরের চরণে তা প্রদান করা হয়। এরপর শুরু হয় কুমারীপূজা। সব মেয়েই মা দুর্গার অংশ, তাই মৃন্ময়ী প্রতিমাকে পূজা করার পাশাপাশি কম বয়সের ছোট মেয়েদেরও পূজা করা হয়। বেলুড় মঠে প্রথম কুমারী পূজা করেন ১৯০১ সালে। ১৬ বছরের মেয়ে পর্যন্তই কুমারী হিসেবে পূজা করা যায়। একটি মেয়েকে প্রথমে আমন্ত্রণ করে তাকে শাড়ি ও গহনা উপহার দিতে হয়। সেগুলো পরিয়ে মাতৃমূর্তির সামনে এনে উঁচু আসনে বসাতে হয়। কুমারীর পা জল দিয়ে ধুয়ে দেয়া হয়। তারপর তার পূজা শুরু হয়। তাকে মিষ্টান্নাদি নৈবেদ্য প্রদান করা হয়। তার উদ্দেশে অঞ্জলি দেয়া হয়। এদিন ওই কুমারীকে দেবী দুর্গার রূপ হিসেবেই ধরা হয়। রাতে হয় সন্ধিপূজা। এটি দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মূলত অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিস্থলে অর্থাৎ অষ্টমী শেষ হওয়ার ২৪ মিনিট ও নবমী শুরু হওয়ার ২৪ মিনিট এই সময়ের মধ্যে এই পূজা হয়। এই সময়ে মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা করা হয়। এই পূজাতেই ১০৮ টি পদ্মফুল দেবী দুর্গাকে উৎসর্গ করা হয়। এর মূলে রামায়ণের কাহিনি আমরা সবাই জানি। রাবণ বধের জন্য রাম ১০৮ পদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেন ও তারপর রাবণ নিধন হয়। সেই সূত্রেই এই সন্ধিপূজা করা হয়। দেবী দুর্গার সামনে নানা রকম খাদ্যদ্রব্য কাঁচা অবস্থায় এবং রান্না করা ভোগ হিসেবেও রাখা হয়। ১০৮টি মাটির প্রদীপ দেবী দুর্গার সামনে জ¦ালানো হয়। কোনো কোনো জায়গায় এই দিন বলিও দেয়া হয়। পশুবলি নিয়ে অনেক নিষেধাজ্ঞা জারি আছে বলেই আখ, চালকুমড়া- এসব বলি হিসেবে প্রদত্ত হয়।

অভিরাজ নাথ : ছড়াকার ও লেখক, চট্টগ্রাম।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়