বীমা ব্যক্তিত্ব সামাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আগের সংবাদ

নানা আয়োজনে শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন

পরের সংবাদ

মনিরামপুরে যুবলীগ নেতা হত্যায় আটক ২

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২৩ , ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

নওয়াপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি : মনিরামপুরে পাঁচাকড়ি গ্রামে যুবলীগ নেতা উদয় শংকর বিশ্বাস (৪২) হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ ২ জনকে আটক করেছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে টেকেরঘাট এলাকার একটি মাছের ঘেরের পাড় থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো- পাঁচাকড়ি গ্রামের অনিল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে পরিতোষ বিশ্বাস ও একই গ্রামের মৃত নিখিল দাসের ছেলে উত্তম দাস। অন্য ২ জন আসামি হলো- পাঁচাকড়ি গ্রামের পবিত্র কুমার বিশ্বাস ও সুভাষ বিশ্বাস। যুবলীগ নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার মা ছবি রানী বিশ্বাস বাদী হয়ে সোমবার রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পবিত্র কুমার বিশ্বাসসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েকজনের নামে মনিরামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত সোমবার সকালে উদয় শংকর বিশ্বাস বাজার করতে টেকারঘাট বাজারে যান। সেখান থেকে তিনি নওয়াপাড়া-কালীবাড়ি সড়ক দিয়ে পাঁচাকড়ি গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তিনি বাড়ির সামনে বৈকালী মোড় থেকে কাঁচা রাস্তা দিয়ে বাড়িতে ঢোকার সময় সেখানে পূর্বে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুই ব্যক্তি পিছন দিক থেকে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে তিনি রাস্তার ওপর পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে তিনি মারা যান।
নিহত উদয় শংকর বিশ্বাস উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি, নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের সংস্কৃতি বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং টেকারঘাট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি বৈকালী সর্বজনীন পূজামণ্ডপের সভাপতি ছিলেন।

উদয় শংকরের স্ত্রী অনিন্দিতা বিশ্বাস জানান, আমার স্বামী সোমবার সকালে মোটরসাইকেলে টেকেরঘাট থেকে বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে ২ জন সন্ত্রাসী পিছন থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। আমি সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মনিরামপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু জানান, উপজেলার নেহালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩ জন কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা ও কলেজের সভাপতি মনোনয়ন সংক্রান্ত ব্যাপারে একটি মহল উদয় শংকর বিশ্বাসকে হত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই ও প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
নেহালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনসহ স্থানীয়রা জানান, উদয় শংকর ছিলেন টেকেরঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ঐ প্রতিষ্ঠানে মোট ৫ জন কর্মচারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরমধ্যে গত সপ্তাহে ৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে নিয়োগ দিতে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করা হয়। অপরদিকে ম্যানেজিং কমিটির গঠন করা নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা পবিত্র বিশ্বাসের সঙ্গে উদয় শংকরের বিরোধ চলে আসছিল। এলাকাবাসীর ধারণা কমিটি গঠন ও নিয়োগ সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষ পবিত্র বিশ্বাসকে এলাকায় আর দেখা যায়নি।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অবিলম্বে যুবলীগ নেতা উদয় শংকরের হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে নিহত উদয় শংকরের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা ও তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, উদয় শংকর হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা এজাহারভুক্ত ২ আসামিকে টেকেরঘাট এলাকার বিলের মধ্যে একটি মাছের ঘেরের পাড় থেকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়