সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যা সমাধানে সার্বিক সহযোগিতা করব : ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

আগের সংবাদ

সাইডলাইন কূটনীতিতে বাজিমাত : সম্মানিত করেছে ভারত, চাপমুক্ত সরকার > পঞ্চবটীতে ভূ-রাজনীতির নতুন সমীকরণ

পরের সংবাদ

শিশু বড় হলে কেমন হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একটি শিশু বড় হলে কেমন হবে তার ভিত্তি তৈরির জন্য ৩ থেকে ৬ বছর বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ বয়সের মধ্যেই সাধারণত একটি শিশুর ব্যক্তিত্বের মূল ভিত্তিটা গঠন হয়ে যায়। জীবনের শুরুর এসময়টায় উৎসাহ যোগানো, খেলাধুলা ও শিক্ষাই তার পরিপূর্ণ বিকাশে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। তবে, ছয় মাসের মধ্যেই মানুষের মস্তিষ্কের অর্ধেক গঠিত হয়ে যায় এবং আট বছরের মধ্যে তৈরি হয় ৯০ শতাংশ।

ডা আশরাফুন্নাহার চৈতী

মায়ের গর্ভে থাকার সময় থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর যে বিকাশ ঘটে, তা হচ্ছে প্রারম্ভিক বিকাশ। বিকাশের এই পর্ব চলে জন্মের পর থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত। তবে, একটি শিশু বড় হলে কেমন হবে তার ভিত্তি তৈরির জন্য তিন থেকে ছয় বছর বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে পরিবার শিশুকে কিভাবে গড়ে তুলছে, কি শেখাচ্ছে তার উপর নির্ভর করে বড় হয়ে তার বুদ্ধিমত্তা, স্বভাব, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আচরণ, আত্মবিশ্বাস ইত্যাদি কেমন হবে। আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ শিশু বলতে শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ শিশুকেই বোঝায় না; শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবে শিশুকে সুস্থ রাখতে হবে। সাধারণভাবে আমরা শিশুর শারীরিক বিকাশে যতটা মনোযোগ দিই, মানসিক বিকাশে ততটা মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করি না। কিন্তু মানসিকভাবে সুস্থ না হলে শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশু মনোযোগ দিয়ে শোনে, কথায় সাড়া দেয়, শব্দের অনুকরণ করে, বিভিন্ন অর্থবোধক শব্দ বলে, বড়দের কাজ-কর্ম অনুকরণ করে, বন্ধুত্ব গড়ে তোলে, সমস্যার সমাধান করে ও খেলাধুলা শুরু করে। তিন থেকে ছয় বছরে শিশুরা বিষয় বৈচিত্র্যতা নিয়ে নতুন নতুন জিনিস শেখাটা উপভোগ করে, দ্রুত ভাষা রপ্ত করতে থাকে, কোনো বিষয়ে বেশি সময় মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা অর্জন করে এবং নিজের মত করে কিছু করতে ছটফট করে থাকে।

সুস্থ পারিবারিক পরিবেশ
একটি শিশু যখন বড় হয়, তখন চারদিকের পরিবেশ তাকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে এবং এর প্রতিফলন ঘটে তার ব্যক্তিত্বে। শিশুর সামগ্রিক বিকাশের সঙ্গে পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা নিবিড়ভাবে জড়িত। শিশুরা পর্যবেক্ষণ করে যে বাবা মায়ের সম্পর্ক কতটা উষ্ণ। তাদের মধ্যে যদি একে অপরের প্রতি বিনয়, শ্রদ্ধাবোধ থাকে, আন্তরিকতা, একে অপরের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া, একজন আর একজনকে বিশ্বাস করা, তাদের ভাষার ব্যবহার সুন্দর কিনা এই সবকিছু তারা অনুসরণ করে। এগুলো নিয়েই সে বড় হবে। তাই তার সুন্দর ও নির্ভয় শৈশব নিশ্চিত করার দায়িত্ব মাবাবাসহ পরিবারের সব সদস্যের।
বুদ্ধি বাড়াতে সৃজনশীল খেলনা
বয়সভেদে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ উপযোগী খেলনা নির্বাচন করতে হবে গুরুত্বের সঙ্গে। ঘরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই খেলা যায় এমন খেলনা শিশুর মানসিক বিকাশে বেশি সহায়ক। শিশুকে এমন ধরনের খেলনা দিতে হবে, যা তার বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।

৩-৬ এ যা ঘটে
শিশুদের জন্মের পর প্রথম এক হাজার দিন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টায় শিশু সরাসরি পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সংস্পর্শে আসতে শুরু করে। তবে ৩-৬ বছরের মধ্যে সে জগৎ সমাজের নতুন অনেক কিছুর সাথে পরিচিত হতে শুরু করে। এই সময় শিশুরা দাঁড়ানো, হাঁটা, দৌড়ানো, কথা বলা, কানে শোনা, ঘ্রাণ নেয়া, পড়াশুনা এগুলো শেখে। এই সময়টিতে সে স্বাধীন আচরণ শুরু করে। নতুন কিছু নেড়েচেড়ে দেখা, জানতে চাওয়া শুরু হয়। এই সময়ে শিশু যদি সঠিক খাবার, খেলাধুলার সুযোগ না পায়, বেড়ে ওঠার পরিবেশ যদি সুস্থ না থাকে তাহলেও তার শরীর ও মস্তিষ্কের বৃদ্ধি সঠিকভাবে হবে না।

আঁকা আঁকি
দীর্ঘদিনের গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশবে ৩ থেকে ৬ বছর সময় হতেই শিশুরা যদি ছবি আঁকার সুযোগ পায়, তাহলে তারা মেধাবী ও বুদ্ধিমান হয়। বিজ্ঞানীদের মতে, শিল্পচর্চার মাধ্যমে শিশুদের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অভিনব চিন্তার মাধ্যমে শিশু যখন বিভিন্নভাবে শিল্পচর্চার সুযোগ পায়, তখন তার সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পায়। সে অসাধারণভাবে ভাবতে ও চিন্তা করতে শেখে শৈশব হতেই।

আমি পারি
‘আমি পারি এই আত্মবিশ্বাস ও স্বাধীনতাবোধ তৈরি করা যায় এ বয়সটায়। নিজের হাতে খেতে দিলে কিছু খাবার যদি ফেলেও দেয় তবুও তাকে সেটি করতে দেয়া উচিত। খাবার টেবিলে শিশুকে একসাথে নিয়ে খেতে বসলে সব ধরনের খাবারে আগ্রহ হবে। একই সাথে শিশুকে কিছু পছন্দ করতে দিতে হবে, তার মতামত জানতে চাইতে হবে। তাকে সারাক্ষণ সব কাজে সাহায্য না করে সমস্যা সমাধান করতে দিতে হবে। নিয়মিত সাথে বসে বই পড়ায় ভাষার দক্ষতা বাড়বে। অন্য শিশুদের সাথে খেলাধুলায় উৎসাহিত করলে সে সামাজিক হয়ে উঠবে।

মডেল : সউদ হক ইব্রাহিম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়