ভূমি আইন ভঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা : নাটোরে ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নারী আসনে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন

আগের সংবাদ

ফের আলোচনায় ড. ইউনূস : হতে চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান > জাতীয় দুর্যোগে নেই জাতির পাশে

পরের সংবাদ

গ্রামীণ যোগাযোগের উন্নয়ন জরুরি

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার পথে। সরকার দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সব ধরনের আয়োজন সম্পন্ন করেছে। দেশে প্রযুক্তিভিত্তিক সেবার সুবিধা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যেমন বর্তমানে সরকারি তথ্যাদি, আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও সংশোধন, বিশেষ বিশেষ দিবসের বার্তা, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে। ফলে তা কম সময়ে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়া দেয়া হচ্ছে ই-স্বাস্থ্যসেবা, পরিষেবা বিল (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস) পরিশোধ করার সুযোগ। বিল পরিশোধ ছাড়াও বিদ্যুৎকেন্দ্রিক যাবতীয় কাজকর্ম যেমন (বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন, অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা, ই-নথি, ই-টেন্ডারিং ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প পরিবীক্ষণ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি) সহজেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে।
দেশের এত এত উন্নয়নের পরও ভাগ্য পুরোপুরি মেলেনি গ্রাম-গঞ্জের মানুষের। ইন্টারনেট নেটওয়ার্কভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন তেমন হয়নি বললেই চলে। দেশের দরিদ্রতম জেলা কুড়িগ্রামের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসে যখন এই লেখাটি লিখে পত্রিকার উদ্দেশ্যে পাঠাচ্ছি তখনো আমাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে কোনো এক ফাঁকা জায়গায় আসতে হচ্ছে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার জন্য। শুধু এ-ই নয়, যে কোনো ধরনের অনলাইনভিত্তিক কাজ করার জন্য বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে বাড়ি ছেড়ে কোনো এক ফাঁকা মাঠ বা অন্য কোনো জায়গায় যেতে হয় ভালো ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার জন্য।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রমও বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯-এর সময়কালে অনলাইন ক্লাস, জুম, গুগল মিট ইত্যাদি ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ইত্যাদি সম্পাদন করা হচ্ছে খুব সহজেই। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও পিছিয়ে গ্রামীণ শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন ছুটিতে বাসায় গেলেও মাঝে মধ্যেই অনলাইন ক্লাস বা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রোগ্রামে যুক্ত হতে হয় অনলাইনে। এ ক্ষেত্রেও অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। পরিবার ছেড়ে অনেকেই বাইরে থাকেন; কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের সহজে দেখার সুযোগও পান না অনেকেই।
সাম্প্রতিক সময়ে টেলিটক একটি বিজ্ঞাপন শেয়ার করছে যেখানে দেখানো হচ্ছে গ্রাম-গঞ্জ, হাওর-বাঁওড়, পাহাড়-পর্বত সব জায়গায় টেলিটকের ৪জি সেবা পৌঁছে গেছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে আমার গ্রাম বা আশপাশের অঞ্চলে এখনো টেলিটকের পুরো সেবা পৌঁছায়নি। শুধু টেলিটক নয়, এই পর্যায়ে এসে সব সিম কোম্পানিরই একই অবস্থা। কোনো সিম কোম্পানিই পূর্ণাঙ্গ সেবা দিতে পারছে না এখন অবধি। ১-২ বছর আগে গ্রামীণফোন ভালো সার্ভিস দিলেও এখন আর আগের মতো সেবা দিচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়তই গ্রামের মানুষদের ভোগান্তিতে কাটাতে হচ্ছে।
এসব তো গেল অনলাইনভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থার অবস্থা। কিন্তু অফলাইনভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থা কি ভালো? দুর্ভাগ্যবশত এখানেও তিক্ত অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হতে হয় সবাইকে। গাঁয়ের মানুষ যারা শহরে থাকেন তারা প্রায়ই এই সমস্যার সম্মুখীন হন যে, বাসায় কল দিলে অধিকাংশ সময়ই ফোন খোলা থাকতেও নেটওয়ার্ক না থাকায় বন্ধ পেতে হয়। আর এ সমস্যা অনেক প্রবলভাবে ঘিরে ধরে আছে গ্রামীণ মানুষগুলোকে। পরিবারের সদস্য কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার জন্যও যখন ঘর থেকে বাইরে যেতে হয়, খুব সম্ভবত এর চেয়ে বাজে পরিস্থিতি বা বিড়ম্বনায় অন্য কখনো পড়তে হয় না। দেশের পূর্ণাঙ্গ সফলতায় পৌঁছানোর জন্য দেশের এই বিপুল জনগোষ্ঠীকেও দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমভাবে কানেক্টেড করা অনেক বেশি জরুরি। তাই আজকের এই লেখনীর মাধ্যমে একজন সচেতন নাগরিক ও শিক্ষার্থী হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ও প্রসিদ্ধ সিম কোম্পানিগুলোর কাছে গ্রাম-গঞ্জের মানুষের সুযোগ-সুবিধাগুলোর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

নুর মোহাম্মদ মামুন : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়