কাগজ প্রতিবেদক : খুশির ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে নাড়ির টানে ঘরে ফিরছেন নাগরিক জীবনে বন্দি মানুষ। এদিকে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই শেষ ঈদ। সারাদেশেও নির্বাচনের ঢেউ লাগছে এই ঈদে। ঈদ সামনে রেখে নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যাওয়া কর্মজীবী মানুষকে টার্গেট করে তাদের কাছে যাওয়া, নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
বিগত বছরগুলোতে রমজানজুড়ে ইফতারকেন্দ্রিক কর্মসূচি থাকলেও এবারের রমজানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে ইফতার রাজনীতির পরিবর্তে দুস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন নেতাকর্মীরা। ঈদসামগ্রী বিতরণ, খাদ্য বিতরণ, ইফতার বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। এই ঈদেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। অন্যদিকে ঈদে বাড়তি মাত্রা যোগ করছে বিভিন্ন ধরনের ‘ঈদ শুভেচ্ছা’। শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে গণসংযোগও চালাবেন অনেকে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদ উৎসবে যোগ হচ্ছে নির্বাচনী আমেজ। ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে লড়তে ইচ্ছুকদের প্রায় সবাই রঙিন পোস্টার, ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন দিয়ে সংসদীয় আসনের মানুষের ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। অনেকে আবার ঈদ শুভেচ্ছা হিসেবে বিতরণ করছেন সেমাই-চিনি, জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন ঈদ উপহার। আর আছে গরিবদের জাকাত দেয়া। প্রতি ঈদে এসব কাজ করেন রাজনৈতিক নেতারা। তবে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এবার এই প্রবণতা বেশি। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছেন। সংসদ অধিবেশন চলার কারণে মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে যারা ঢাকায় ছিলেন, তারাও সোমবার অধিবেশন মুলতবি হওয়ার পর বিকালের পর থেকেই ছুটেছেন নির্বাচনী এলাকায়। কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের অনেকেই ইতোমধ্যে নিজ নির্বাচনী এলাকায় কয়েক দফা ঘুরে এসেছেন। দলীয় নেতাকর্মীদের পাঞ্জাবি-পাজামা, শাড়িসহ উপহারসামগ্রী দিচ্ছেন।
পাশাপাশি গরিব-দুঃখীদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণসহ কুরবানির ব্যবস্থা করে এসেছেন। অনেকেই নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ পড়বেন এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে এবার ঈদ উদযাপন করবেন। ঈদের পর আবারও এলাকায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে অনেকের।
এ ব্যাপারে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান, দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয়, স্থানীয় ও এমপি-মন্ত্রীরা ইতোমধ্যে নিজ এলাকায় চলে গেছেন। তারা মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার সব সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। আগামী নির্বাচনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ঈদে বাড়িতে যাওয়া বিপুলসংখ্যক মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছেন দলের সবাই। সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
কে কোথায় ঈদ করবেন : এবারও ঢাকায় সরকারি বাসভবন গণভবনে ঈদ উদযাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এহসানুল করিম জানিয়েছেন, ঈদের দিন বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সিনিয়র নেতা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব ও সমপর্যায়ের বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।
এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরীও ঈদ করবেন ঢাকায়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদ করবেন ঢাকায়। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নিজের এলাকা চট্টগ্রামে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম মাদারীপুরে ঈদ উদযাপন করবেন। আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ঈদ করবেন নিজ এলাকা চাঁদপুরে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।