সংবাদ সম্মেলনে ছেলের দাবি : হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ফাঁসানো হয়েছে

আগের সংবাদ

কুরবানি ঘিরে চাঙা অর্থনীতি : ৭০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হওয়ার সম্ভাবনা, রেমিট্যান্স প্রবাহে রেকর্ড

পরের সংবাদ

সাতক্ষীরায় আম উৎপাদন ও রপ্তানিতে রেকর্ড

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২৩ , ১:২১ পূর্বাহ্ণ

মসিউর রহমান ফিরোজ, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরা চলতি মৌসুমে আম উৎপাদন ও রপ্তানিতে বিগত বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ হাজার টন বেশি উৎপাদন হয়েছে এবং গত বছরের তুলনায় এবার ১৫৯ টন আম বেশি রপ্তানি হয়েছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার বাগানমালিকরা দাম পেয়েছে অনেক কম।
জলবায়ু ও ভৌগোলিক কারণে সাতক্ষীরার আম দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় কয়েক সপ্তাহ আগে পাকে। এছাড়া সাতক্ষীরার হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া ও অ¤্রপালি আম স্বাদে গুণে মানে অনন্য। এই বিশেষত্ব কাজে লাগিয়ে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরার আম বৈদেশিক বাজারে রপ্তানি শুরু হয়।
সূত্র জানায়, ৪৫ হাজার ৫০০ টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ জেলায় চলতি মৌসুমে আম উৎপাদন হয়েছে ৬৮ হাজার টন- যেখানে গত মৌসুমে সাতক্ষীরায় আম উৎপাদন হয়েছিল ৫১ হাজার টন। একইভাবে ২০১৫ সালে সাতক্ষীরা থেকে প্রথম আম রপ্তানি শুরু হয়। এরপর বিদেশে চাহিদা বাড়ায় চলতি মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হয়েছে- যার পরিমাণ ১৮০ টন। বিগত বছর এর পরিমাণ ছিল মাত্র ২১ টন।
সূত্র আরো জানায়, সাতক্ষীরা থেকে ২০১৫ সালে ২১ টন, পর্যায়ক্রমে ’১৬ সালে ২৩ টন, ’১৭ সালে ৩২ টন, ’১৮ সালে ১৯ টন, ’১৯ সালে ১ টন, ’২১ সালে ১১ টন, ’২২ সালে ২১ টন এবং এ বছর ১৮০ টন আম রপ্তানি হয়। এসব আমের অধিকাংশই রপ্তানি হয়েছে ইংল্যান্ড, ইতালি, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, হংকং ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে।
এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরা শহরের গড়ের ডাঙ্গা বাগানমালিক মিলন জানান, এ বছর সব বাগানে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারপরও বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ এবার আমের দাম পাওয়া যায়নি। দুই বিঘা জমির আম পাড়তে যে লেবার খরচ লাগে অনেক ক্ষেত্রে তা তোলাই কঠিন হয়ে যায়।
কুখরালি এলাকার আম চাষি মোকলেছুর রহমান জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত বছর তার ৬টি বাগানে প্রায় ২০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছিল। এবার মৌসুমের শুরুতেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ফলন ভালো হওয়ায় মনে করেছিলাম গত বছরের লোকসানটা পুষিয়ে যাবে। কিন্তু আকৃতিতে অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় এবং আমের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় এবারো তার লোকসান গুনতে হয়েছে। ফলে ভোক্তারা লাভবান হলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ব্যবসায়ী ও আম চাষিরা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরায় এবার আমের যেমন বাম্পার ফলন হয়েছে, তেমনি রপ্তানিও হয়েছে এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, প্রথমে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও তা নিরসন করে সফলভাবে আম রপ্তানি করা গেছে। যদিও এ বছর আরো বেশি আম রপ্তানি করা যেত। কিন্তু অন্যান্য জেলার আম বাজারে চলে এলে ফ্লো কিছুটা কমে যায়। তবে, আমের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে এখনো হতাশা কাটেনি আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের। গত মৌসুমে সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, হিমসাগর ও ল্যাংড়া আকারভেদে ২২শ থেকে ২৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে এসব আম ১৪শ থেকে সর্বোচ্চ ১৮শ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আমের ফলন বেশি হওয়ায় দামও কম পেয়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়